[ads1]গুলশান ২ নম্বরের হলি আর্টিসান বেকারি নামের রেস্টুরেন্ট থেকে জিম্মিদের উদ্ধারে মূল অভিযান শুরু হয়েছে। চলছে ব্যাপক গোলাগুলি। আগেই সব রকম প্রস্তুতি সম্পন্ন করে রাখে আইনশৃঙ্খলাবাহিনী। অপেক্ষায় ছিল সেনাবাহিনীর। ইতোমধ্যে ঘটনাস্থলে সেনাবাহিনীর বিপুল সংখ্যক সদস্য উপস্থিত হয়েছে। আনা হয়েছে নয়টি সাজোয়া যান (এপিসি)।
শনিবার সকাল ৭টা ২০ মিনিটের দিকে সেনাবাহিনীর বড় পাঁচটি ট্রাক, ছোট জিপ ১০টি, নয়টি ট্যাংকের মতো দেখতে সাজোয়া যানসহ বিশাল বহর আসে।
এদিকে সেনাবাহিনী আসার কিছুক্ষণ পরই অর্থাৎ সকাল ৭টা ৪০ মিনিটে মূল অভিযান শুরু করা হয়। সেনা সদস্যদের সঙ্গে অভিযানে অংশ নেয় নৌবাহিনীর কমান্ডো, বিজিবি, পুলিশ ও র্যাবের বিশেষ বাহিনী। শুক্রবার রাতে অস্ত্রধারীদের আক্রমণের প্রায় ১০ ঘণ্টা পর অভিযানটি শুরু হয়।
অভিযান শুরু হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই রেস্টুরেন্টের ভেতর থেকে অস্ত্রধারীরা গুলি ছুড়ে। এসময় পাল্টা গুলি চালায় আইনশৃঙ্খলাবাহিনী। তবে জিম্মিদের জীবিত উদ্ধারে সতর্ক অবস্থানে রয়েছে তারা। অন্যদিকে আকাশেও হেলিকপ্টর দিয়ে টহল দেয়া হচ্ছে। [ads2]
অস্ত্রধারীরা যাতে রেস্টুরেন্টের পাশে থাকা লেক দিয়ে পালিয়ে যেতে না পারে, সে জন্য নৌ বাহিনীর একটি কমান্ডো টিম মোতায়েন করা হয়েছে। সাথে রয়েছে ফায়ার সার্ভিসের টিমও। রাতে তাদের স্পট লাইট বসানো হয়। ঘটনাস্থলে মোতায়েন করা হয়েছে বিপুল সংখ্যক আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য।
ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়েছেন সেনাপ্রধান লেফটেন্যান্ট জেনারেল আবু বেলাল মো. শফিউল হক। সেই সঙ্গে আছেন বাংলাদেশ ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (ডিজি) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আলী আহাম্মেদ খান।
এর আাগে শুক্রবার দিবাগত রাত ৩টা ৫ মিনিটে তাদেরকে রেস্টুরেন্ট থেকে বের করে আনা হয় দুইজনকে। উদ্ধার হওয়াদের মধ্যে একজন দিয়েগো স্তেন। তিনি রেস্টুরেনটিতে শেফ হিসেবে কর্মরত ছিলেন। অপরজন বাংলাদেশি নাগরিক বেলারুশ। তিনি রেস্টুরেন্টের স্টাফ।
সোয়াত সদস্যরা তাদের রেস্টুরেন্ট থেকে বের করে নিয়ে আসে। তবে তারা মূল রেস্টুরেন্টের ভেতরে ছিলেন না, যেখানে অন্যরা অস্ত্রধারীদের হাতে জিম্মি হয়ে আছেন।
একজন পুলিশ সদস্য জানান, উদ্ধার করা দুজনের মধ্যে বাংলাদেশি ব্যক্তি কিছুটা আড়াল হয়ে গেটের কাছাকাছি আসা মাত্রই সোয়াত সদস্যরা তাকে উদ্ধার করে নিয়ে আসে। অন্যদিকে স্পেনিশ নাগরিক ভবনের আড়ালে দাঁড়িয়ে ছিলেন। তাকে দেখে ইশারায় এগিয়ে আসতে বলে পুলিশ সদস্যরা। কিছুটা কাছাকাছি আসা মাত্র তাকেও কম্পাউন্ডের ভেতর থেকে তুলে নিয়ে আসে পুলিশ।[ads1]
এদিকে রেস্টুরেন্টের ভেতরে অস্ত্রধারীদের হাত থেকে যখন জিম্মিদের উদ্ধারে ব্যস্ত আইনশৃঙ্খলাবাহিনী। তখনই সেই রেস্টুরেন্টের পাশের পুকুর পাড়ে এক যুবককে সন্দেহজনকভাবে চলফেরা করতে দেখা যায়। তাকে ডাকা হলে সে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। তখনই গুলি করে তাকে আটক করতে সক্ষম হয় পুলিশ। ওই যুবকের বুকে গুলি লেগেছে। তবে তার পরিচয় সম্পর্কে বিস্তারিত কিছু পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়নি।
ভেতরের অস্ত্রধারীদের আত্মসর্পণের জন্যও বারবার আহ্বান করা হয়। কিন্তু তারা সাড়া দেয়নি। তারা আত্মসর্পণ না করলে যৌথবাহিনীর বিশেষ টিম পূর্ণাঙ্গ অভিযান চালাবে।
এ প্রসঙ্গে ডিবির (উত্তর) ডিসি শেখ নাজমুল আলম বাংলামেইলকে বলেছেন, ‘আমরা প্রস্তুতি নিচ্ছি, জিম্মি হওয়া লোকদের উদ্ধারে সকালের দিকে অভিযান শুরু হবে।’
এর আগে অস্ত্রধারীদের হামলায় ডিবির সহকারী কমিশনার (এসি) রবিউল ইসলাম এবং বনানী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) সালাউদ্দিন নিহত হন। ওই রেস্টুরেন্টে গোলাগুলির সময় তারা গুলিবিদ্ধ হন। গুরুতর অবস্থায় ইউনাইটেড হাসপাতালে নেয়া হয় তাদের। সেখানেই প্রথমে ওসি সালাউদ্দিন এবং পরে এসি রবিউল ইসলাম মৃত্যুবরণ করেন। গোলাগুলির সময় তারা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করতে গিয়েছিলেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।
উল্লেখ্য, রাত সাড়ে ৯টার দিকে হলি আর্টিসানে হামলা করে কয়েকজন অস্ত্রধারী। এসময় তারা বেশ কয়েকটি বিস্ফোরণ ঘটিয়ে আতঙ্ক সৃষ্টি করে রেস্টুরেন্টের অবস্থানকারীদের জিম্মি করে। সন্ত্রাসীদের গুলিতে দুই পুলিশ কর্মকর্তা নিহত হওয়ার পাশাপাশি আহত হয়েছেন প্রচুর সংখ্যক পুলিশ সদস্য। [ads2]