রিয়াদ: সৌদি আরবের রিয়াদের শিফা সানাইয়া এলাকায় সোফা ফ্যাক্টরিতে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে ১০ জন বাংলাদেশিসহ ১২ জন শ্রমিক পুড়ে মারা গেছেন।
সোমবার স্থানীয় সময় রাত ১০টার দিকে এ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। তবে উদ্ধারকর্মীরা উদ্ধার তৎপরতা শেষে দাবি করেছেন মোট ১১ জনের লাশ তারা উদ্ধার করেছেন। এদের মধ্যে দুইজন ভারতীয় বলে জানা গেছে।
ওই ফ্যাক্টরিতে মোট ১৫ জন শ্রমিক থাকতেন। এর মধ্যে ১৩ জন বাংলাদেশি ও দুইজন ভারতীয় শ্রমিক।
নিহত ১০ জনের মধ্যে নয়জনের নাম জানা গেছে। এরা হলেন- মো. জালাল (৩৫), আ. গাফ্ফার (৩২), মো. সেলিম (৩৫), বাহাউদ্দিন (৩১), নাজির হোসেন (৩৫), মতিউর রহমান (৩২) ও শাহ আলম (৩৫)। এদের সবার বাড়ি কুমিল্লা জেলায়। এ ছাড়া নিহত জাকিরের (৫৫) বাড়ি ফেনী ও আফতাবের (৪৫) বাড়ি মাদারীপুর জেলায়। ভারতীয় দুজন হলেন- ইসরার (২৫) ও ওয়াসিম (৩৫)। যারা জীবিত অবস্থায় বের হয়ে আসতে সক্ষম হয়েছেন, তারা হলেন- কুমিল্লা হোমনার মতিউর (৩৫), মানিকগঞ্জের হান্নান মোল্লা (৩৪), কুমিল্লা তিতাসের দুলাল (২৭) ও রাজি উদ্দিন।
প্রথমে প্রত্যক্ষদর্শীরা আটজন বাংলাদেশির মৃত্যুর কথা নিশ্চিত করলেও বাংলাদেশ দূতাবাসের শ্রম কাউন্সিলর মিজানুর রহমান কিছুই জানেন না বলে জানান। পরে ঘটনাস্থলে গিয়ে ১১ জনের মৃত্যুর কথা নিশ্চিত হওয়া যায়। সবশেষে লাশ উদ্ধার তৎপরতার সময় মোট ১২ জনের লাশ উদ্ধার করা হয়।
ফ্যাক্টরিতে কর্মরত আব্দুল হান্নান জানান, নিহতরা সবাই ওই ফ্যাক্টরিতেই থাকতেন। কাজ শেষে বিশ্রামের জন্য তারা তখন সেখানেই অবস্থান করছিলেন।
উদ্ধার কর্মীরা জানান, মোট ১০ জনের লাশ ফ্যাক্টরি থেকে বের করে আনেন। তবে সেগুলো আগুনে পুড়ে এমন বীভৎস ধারণ করেছে যে, তা চেনার কোনো উপায় ছিল না। বৈদ্যুতিক শর্ট সাকিট থেকে এ অগ্নিকাণ্ডের সূত্রপাত বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। হিলা কোম্পানির স্বত্ত্বাধিকারী সৌদি হিলার কাছ থেকে মাসিক চুক্তিতে কুমিল্লা জেলার তিতাস থানার কালিপুর গ্রামের রাজিউদ্দিন ‘তিতাস ফার্নিচার’ নাম দিয়ে ব্যবসা পরিচালনা করে আসছিলেন।
সৌদিতে বাংলাদেশ দূতাবাসের শ্রম কাউন্সিলর মিজানুর রহমান জানিয়েছেন, চার থেকে পাঁচজনের লাশ পুড়ে যাওয়ার পরেও চেনা সম্ভব হচ্ছে। বাকিদের চেনা যাচ্ছে না।
তিনি জানান, যাদের শনাক্ত করা সম্ভব হয়েছে, তাদের লাশ যত তাড়াতাড়ি সম্ভব বাংলাদেশে পাঠিয়ে দেওয়া হবে। সেই সঙ্গে তাদের সমুদয় সমুদয়ও পাঠিয়ে দেওয়া হবে।
মিজানুর রহমান আরো জানান, যাদের লাশ চেনা যাচ্ছে না, তাদের ডিএনএ টেস্ট করে পরিচয় শনাক্ত করা হবে।