চিহ্নিত দেশদ্রোহীরা কারাগারের ভেতরে বসেই নানা সুবিধা আদায়ের জন্য বিদ্রোহ করছেন। সাধারণ বন্দিদের মতো হাঁটা চলা, শীতবস্ত্র প্রদানসহ নানা দাবিতে গাজীপুরের কাশিমপুর হাই সিকিউরিটি কেন্দ্রীয় কারাগারের প্রায় ২০০ বন্দি অনশন করেছেন শনিবার। এক পর্যায়ে তারা কারাগারের ভেতরে শতাব্দী ভবনের দ্বিতীয় ও তৃতীয় তলায় বিক্ষোভও করেন।
কাশিমপুর কারাগারের একটি সূত্র সমকালকে জানায়, হাই সিকিউরিটি কারাগারের বন্দিরা শীতের শুরু থেকেই শীতবস্ত্রের অভাবে কষ্ট করছেন। বন্দিদের প্রচণ্ড শীতেও অতিরিক্ত কম্বল, শীতের কাপড় দেওয়া হয়নি। কক্ষের দরজা জানালায় স্বচ্ছ পলিথিন লাগানোর নিয়ম থাকলে তা দেওয়া হয়নি। ফলে প্রতিটি কক্ষ ফ্রিজের মতো ঠান্ডা হয়ে গেছে। এ ছাড়া কারা কর্তৃপক্ষ বিশুদ্ধ খাবার পানি সরবরাহ না করায় পানি বাহিত বিভিন্ন রোগ হচ্ছে। এসব কারণে অসুখ হলেও ঠিকমতো চিকিৎসাও পাচ্ছেন না বন্দিরা। দায়িত্বশীল সূত্রটি জানায়, কারাগারে ভেতরে হাঁটার মতো জায়গা থাকালেও বন্দিদের ছোট্ট জায়গায় আটকে রাখা হচ্ছে। হাঁটাহাঁটির অনুমতি না দেওয়ায়ও শরীরে রোগের বাসা বাঁধছে। ১৫ দিন পরপর বন্দিদের স্বজনদের সঙ্গে সাক্ষাতের নিয়ম থাকলেও ১ মাস পরে সাক্ষাৎ দিচ্ছেন এবং আদালতে যাওয়ার সময় নামাজ পড়ার জন্য জায়নামাজও সঙ্গে নিতে দেওয়া হয় না। এ সব নানা দাবি বাস্তবায়নের জন্য বন্দিরা অনশন ও বিক্ষোভ করছেন।
কাশিমপুর হাই সিকিউরিটি কেন্দ্রীয় কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার সুব্রত কুমার বালা বলেন, চিহ্নিত জঙ্গি, সন্ত্রাসবিরোধী ও ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা এ কারাগারে বন্দি। কারা কর্তৃপক্ষকে বিব্রত করার জন্য বিভিন্ন সময় তারা এমন পরিস্থিতি তৈরি করে। কারাগারে বন্দি এমন দেশদ্রোহীর সংখ্যা খুবই কম। ১০-১২ জন মিলে কাজগুলো করে।
তিনি বলেন, প্রত্যেক বন্দিকে একাধিক কম্বল দেওয়া হয়েছে। বন্দি আসামিকে বাইরে গিয়ে হাঁটাহাঁটির সুযোগ দেওয়ার কোনো বিধান নেই। নিয়ম ভঙ্গ করে তাদেরকে বাইরে যেতে দেওয়া যায় না।
বন্দিদের বিদ্রোহের খবরকে সিনিয়র জেল সুপার সুব্রত ষড়যন্ত্র বলে উল্লেখ করে বলেন, শনিবার কিছু সময় কয়েকজন বন্দি অনাহারে ছিল। শতাব্দী ভবনে গিয়ে বন্দিদের সঙ্গে কথা বললে তারা খাবার খায়। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে আসে।