১৫ মার্চ ‘দম্পতি দিবস’ উপলক্ষে দম্পতি মেলা-২০১৬ এর আয়োজন করেছে দম্পতি সোসাইটি।
‘আদর্শ দম্পতি উন্নত সভ্যতার ভিত্তি’ এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে ১১-১৫ মার্চ বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় চিত্রশালা প্লাজায় অনুষ্ঠিত হবে এ মেলা।
১১ মার্চ মেলার উদ্বোধন করবেন উদ্বোধক দম্পতি কিংবদন্তি অভিনেতা নায়ক রাজ রাজ্জাক ও তার স্ত্রী খায়রুন্নেছা লক্ষী। সমাপনী দিনে সমাপক দম্পতি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক নাট্যব্যক্তিত্ব লিয়াকত আলি লাকী ও তার স্ত্রী বিশিষ্ট সংগীত শিল্পী কৃষ্টি হেফাজ।
৫ দিনব্যাপী এই মেলায় থাকবে দাম্পত্য জীবনের মূল্যবোধ চর্চায় আলোচনা, সেমিনার, দম্পতিদের প্রতিযোগিতা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানসহ দাম্পত্য জীবনের সঙ্গে আনুষঙ্গিক পণ্যের স্টল।
উল্লেখ্য, দম্পতি সোসাইটি একটি স্বেচ্ছাসেবী সামাজিক সংগঠন। দাম্পত্য মূল্যবোধের চর্চা, সংরক্ষণ, বিকাশ ও সময়োপযোগীকরণ সংগঠনটির উদ্দেশ্য। এজন্য তারা ১৫ মার্চকে দম্পতি দিবস পালনে দেশের সকল স্তরের দম্পতিদের আহ্বান করেছে এবং এই দিবস পালনের মধ্য দিয়ে ২০১৫ সালের ১৫ মার্চ তাদের আনুষ্ঠানিক আত্মপ্রকাশও ঘটেছে। ২০১৫ সালে রাজধানীর বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রে তারা আয়োজন করেছিল “দম্পতি মেলা-২০১৫”।
মেলার প্রতিপাদ্য ছিল ‘সুখী দাম্পত্য জীবন, সমৃদ্ধ আগামী ভুবন’। অধ্যাপক আব্দুল্লাহ্ আবু সায়ীদ দম্পতি ও শিল্পী মোস্তফা মনোয়ার দম্পতি উদ্বোধন করেছিলেন ওই মেলা। ৫০ বছর পূর্ণকারী ৮ দম্পতিকে সোসাইটির পক্ষ থেকে দেয়া হয়েছিলো সম্মাননা, ছিলো আরো নানা আয়োজন।
দম্পতি সোসাইটির সভাপতি, অভিনেতত্রী আরজুমান্দ আরা বকুল বলেন, বিবাহ, দম্পতি ও পরিবার এর ধারণা বিবর্তিত হয়েছে এবং হচ্ছে এবং প্রাকৃতিক অপরিহার্যতায় হতে থাকবে। তবে এসবের অপরিহার্যতা অমলিন হওয়ায় এগুলোর মূল্যবোধ উপলদ্ধি ও চর্চার গুরুত্ব আজও অপরিসীম। এমন সম্মিলিত অনুভূতি ও তার একাত্মতার ফসল দম্পতিদের সংগঠন ‘দম্পতি সোসাইটি’।
সংগঠনের আপাতত বৃহৎ লক্ষ্য বিশ্বব্যাপী ‘দম্পতি দিবস’ পালনের প্রচলন। এজন্য যুক্তিনির্ভরভাবে ১৫ মার্চকে ‘দম্পতি দিবস’ হিসেবে গ্রহণ করা হয়েছে।
১৫ মার্চকে ‘দম্পতি দিবস’ হিসেবে গ্রহণের কারণ ব্যাখ্যা করেন দম্পতি সোসাইটির অর্থবিষয়ক সম্পাদক রহীম সর্ওয়ার, তিনি বলেন, যে কোন দিবস পালন করা হয় সাধারণত তিনটি কারণে, যেমন—কোন বিষয়ের ১. স্মৃতিচারণ ২. প্রচার প্রসার ৩. চলমান ক্রিয়াশিলতা প্রদান। আমরা ‘দম্পতি দিবস’ চালু করতে চাই দাম্পত্য মূলবোধ এর প্রচার প্রসার ও সুখী দাম্পত্য জীবন গঠনে অধিক হতে অধিকতর দম্পতিকে চলমান ক্রিয়াশীলতায় সক্রিয় করতে।
১৫ মার্চকে দম্পতি দিবস হিসেবে গ্রহণের প্রথম যুক্তি, ১৫ মার্চ হচ্ছে বাংলাদেশ মতে চৈত্রের প্রথম ও ভারতীয় মতে ফাল্গুনের শেষ দিন। বাংলায় ফাল্গুন ও চৈত্রের মিলনে বসন্ত কাল। যৌবন মানব জীবনের বসন্ত কাল। এই সময়ই মানুষ বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়ে দম্পতি রূপে পরিবার গঠন করে। তাই ফাল্গুন ও চৈত্রের মিলন/বিবাহ বিন্দুকে এই দিবস হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে। দ্বিতীয় যুক্তি, ১৫ মার্চ এই মাসের দু’টি পক্ষের বিবাহ/মিলন বিন্দু। তৃতীয় যুক্তি, মার্চ মাস পুরো বিশ্বেই শীতের শেষ বসন্তের শুরু। চতুর্থ যুক্তি, এই দিন সৌর ঘূর্ণণের ৫১তম সপ্তাহ সম্পন্ন হয়ে চরম সপ্তাহে পদার্পণ করে। আমরা মনে করি দাম্পত্য সাধনা মানব জীবনের চরমতম সাধনা। সৌর ঘূর্ণণের ৫২তম বা চরম সপ্তাহ চরম বিন্দুতে যেমন মহাবিষুব সম্পন্ন হয় তেমনি দাম্পত্য সফলতার চরম বিন্দুতে মানবীয় সুখের মহাবিষুব স্থির হয়। এই দিবসটিকে আমরা প্রথম ধাপে বাংলাদেশের জাতীয় দিবস হিসেবে এবং পরবর্তী ধাপে আন্তার্জাতিক দম্পতি দিবস হিসেবে প্রতিষ্ঠা করতে চাই।
দম্পতি মেলা সম্পর্কে সোসাইটির সাধারণ সম্পাদক উজ্জ্বল আহম্মেদ বলেন, ‘দম্পতি দিবস’ পালন এর জন্য ‘দম্পতি মেলা’ আপাতত একমাত্র আয়োজন। তবে তাতে নানা প্রয়োজনীয় ও যুগোপযোগী উপাদানের সন্নিবেশন অব্যহত থাকবে।
২০১৫ সালের ১৫ মার্চ রাজধানীর বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রে আমরা ১ম দম্পতি মেলা আয়োজন করেছিলাম, সাড়াও পেয়েছিলাম প্রত্যাশার চেয়ে বেশি। সেটি ছিলে এক দিনব্যাপী। এবার আমরা ৫ দিনব্যাপী আয়োজন হাতে নিয়েছি, মেলায় নতুন অনেক উপাদান সংযোজন করেছি, সকলের সহযোগিতা পেলে ধীরে ধীরে এটি একটি উৎসব হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হবে।
Prev Post