গোপালগঞ্জ জেলা জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল অ্যাডভোকেট মো. ইসমাইল হোসাইন আওয়ামী লীগে যোগদান করেছেন। খবরটি এখন টক অব দ্য টাউনে পরিণত হয়েছে। জেলা শহরের চায়ের দোকান, পাড়া-মহল্লায় মানুষের মুখে মুখে রয়েছে এ খবরটি।
গতকাল বৃহস্পতিবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানা গেছে, গত বুধবার তাকে গোপালগঞ্জ জেলা আইনজীবী সমিতি কর্তৃক সংবর্ধনা প্রদানের পর আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট এমএম নাসির আহমেদ ও সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট কাজী মেজবাহ উদ্দীন স্বাক্ষরিত প্রেস বিজ্ঞপ্তি মাধ্যমে এ সংবাদ জানানো হয়।
প্রেস বিজ্ঞপ্তি সূত্রে আরো জানা গেছে, ইসমাইল হোসাইন বিগত ২০১২ সালের ১৯ এপ্রিল জেলা বার সমিতির সাবেক সভাপতি মুন্সী মো. আতিয়ার রহমানের মাধ্যমে আওয়ামী লীগে যোগদান করেন। আওয়ামী লীগ থেকে গোপালগঞ্জ-১ আসনের তিনবার নির্বাচিত সাবেক এমপি ও বর্তমান গোপালগঞ্জ জেলা পরিষদের প্রশাসক ও সিনিয়র আইনজীবী কাজী আব্দুর রশিদ তাকে স্বাগত জানিয়ে আওয়ামী লীগে বরণ করে নিয়েছিলেন। এ সময় ওই অনুষ্ঠানে আওয়ামী লীগ সমর্থিত আইনজীবীরাও করতালির মাধ্যমে তাকে স্বাগত জানিয়েছিলেন।
বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, অ্যাডভোকেট মো. ইসমাইল হোসাইন দীর্ঘদিন ধরে জেলা জামায়াত ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেলের দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন।
গোপালগঞ্জ জেলা জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল অ্যাডভোকেট মো. ইসমাইল হোসাইন আওয়ামী লীগে যোগদান করার খবরটি এখন গোপালগঞ্জে টক অব দ্য টাউনে পরিণত হয়েছে।
জেলা আওয়ামী লীগের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট কদরে আলম খান আফতাব বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার যখন যুদ্ধাপরাধীদের বিচার কাজ শুরু করেছে, সেই মুহূর্তে জেলা জামায়াত নেতা আওয়ামী লীগে যোগদান করেছেন। নিজেকে যুদ্ধাপরাধীর দোষ থেকে আড়াল করতে এই কৌশল গ্রহণ করেছেন তিনি। তিনি নিজেকে আওয়ামী লীগের সদস্য দাবি করে দলকে কলঙ্কিত করেছেন।
জেলা আইনজীবী সমিতির সাতবার নির্বাচিত সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও জেলা আওয়ামী লীগ সদস্য অ্যাডভোকেট মো. আজগার আলী খান বলেন, মো. ইসমাইল হোসাইন এক সময় জামায়াতের রাজনৈতিক কার্মকাণ্ডে জড়িত ছিলেন। নিজেকে সে আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত করে শেখ হাসিনার হাতকে শক্ত করতে চায়। দেরিতে হলেও কেউ যদি নিজের ভুল বুঝতে পারেন, তাহলে সমস্যা কোথায়।
জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট কাজী মেজবাহ উদ্দীন বলেন, মো. ইসমাইল হোসাইন অন্য কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে নেই মর্মে আমাদের জানায়। এই কারণে আমরা বারের একটি মিটিংয়ে বারের সিনিয়র আইনজীবীদের উপস্থিতিতে তার আওয়ামী লীগে যোগদানকে স্বাগত জানাই।
গোপালগঞ্জ জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট এমএম নাসির আহমেদ যোগদানের সত্যতা স্বীকার করে বলেন, তিনি ১৯ এপ্রিল ২০১২ সালে সাবেক সভাপতি অ্যাডভোকেট মুন্সী আতিয়ার রহমানের কাছে যোগদানের জন্য আবেদন করেন। তিনি সেই আবেদনে যোগদানপত্র গ্রহণ করা হলো বলে স্বাক্ষর করেন। এই কারণে তাকে সংবর্ধনা দেয়া হয়েছে।
জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক চৌধুরী এমদাদুল হক বলেন, অ্যাডভোকেট ইসমাইল হোসাইন যোগদানের বিষয়ে জেলা আওয়ামী লীগ কিছু জানে না। আমাদের কাছে কখনও আসেনি। এ বিষয়ে আমরা কিছু জানি না।
অ্যাভোকেট ইসমাইল হোসাইন বলেন, আমি এক সময় জামায়াতের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলাম। ২০০৫ সালে হজ করতে যাওয়ার সময় দলীয় কার্মকাণ্ড থেকে অব্যাহতি নিয়েছি। হজ থেকে আসার পর নিজেকে কোনো রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়াইনি। এলাকার উন্নয়নের কথা মাথায় রেখে ২০১২ সালের ১৯ এপ্রিল আমি জেলা বারের সভাপতির মাধ্যমে আওয়ামী লীগে যোগদান করি। আমি আওয়ামী লীগের সদস্য হয়ে জননেত্রী ঘোষিত উন্নয়ন কর্মসূচিতে সম্পৃক্ত হতে চাই।