বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে রাজনীতি থেকে সরাতেই তার বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা দেয়া হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন দলের ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। এই মামলার পেছনে গভীর ষড়যন্ত্র রয়েছে বলে তিনি মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, ওই ‘মিথ্যা মামলা’ দিয়ে সরকার আসলে ঘোলা পানিতে মাছ শিকার করতে চাইছে। তাদের উদ্দেশ্য খালেদাকে রাজনীতি থেকে সরানো।
গতকাল মঙ্গলবার রাজধানীতে এক আলোচনা সভায় ফখরুল বলেন, দেশনেত্রীর বক্তব্যকে বিকৃত করে আজ তারা পানি ঘোলা করতে চাইছে। সেই ঘোলা পানিতে তারা মাছ শিকার করতে চাইছে।
বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানিদের কারাগারে বন্দি ছিলেন এবং তার পুরো পরিবার সে সময় মুক্তিযুদ্ধের পে সংগ্রাম করেছে মন্তব্য করে মির্জা ফখরুল বলেন, আজ তার বিরুদ্ধে এ ধরনের মামলার অর্থই হলো এখানে গভীর ষড়যন্ত্র রয়েছে। সেই ষড়যন্ত্রটি হচ্ছে, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে রাজনীতি থেকে দূরে সরিয়ে দেয়া।
তিনি বলেন, দীর্ঘকাল ধরে সংগ্রামের মধ্য দিয়ে যিনি বাংলাদেশের মানুষের হৃদয়ে অবস্থান তৈরি করেছেন, তাকে এত সহজে দূরে সরিয়ে দেয়া যায় না। দেশের মানুষ অচিরেই সংগঠিত হয়ে সব চক্রান্ত নস্যাৎ করে দেবে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলার প্রতিবাদে ২০ দলীয় জোটের অন্যতম শরিক ন্যাশনাল পিপলস পার্টির (এনপিপি) উদ্যোগে এই আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়। রাজধানীর ফটো জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশন মিলনায়তনে এনপিপি চেয়ারম্যান ড. ফরিদুজ্জামান ফরহাদের সভাপতিত্বে সভায় অন্যদের মধ্যে কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম, জাগপা সভাপতি শফিউল আলম প্রধান, এনডিপি চেয়ারম্যান খন্দকার গোলাম মোর্ত্তজা, সাম্যবাদী দলের সাধারণ সম্পাদক সাঈদ আহমেদ, পিপলস লীগের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ মাহবুব হোসেন, এনপিপি মহাসচিব মোস্তাফিজুর রহমান মোস্তফা প্রমুখ বক্তব্য দেন।
বর্তমান সরকারকে ‘কর্তৃত্ববাদী’ আখ্যা দিয়ে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব বলেন, আজ কেউ কথা বলতে পারে না। কেউ মত প্রকাশ করতে পারে না। আজ সম্পাদক তার পত্রিকায় সুচিন্তিত মত তুলে ধরতে পারেন না। কেউ কথা বললে তার বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহের মামলা, নাশকতার মামলা, ষড়যন্ত্রের মামলা ও মানহানির মামলা হয়। এরকম একটা পরিস্থিতি দেশে চলছে।
তিনি বলেন, মুক্তিযোদ্ধা রাজনীতিক মাহমুদুর রহমান মান্নাকে বিনা বিচারে আটক করে রাখা হয়েছে। সব মামলায় জামিনের পরও আমার দেশ পত্রিকার ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক মাহমুদুর রহমানের বিরুদ্ধে নতুন করে ভিত্তিহীন মামলা দিয়ে আটকে রাখা হয়েছে। এসবের উদ্দেশ্য একটাইÑ দেশে কেবল একটা দল থাকবে, আর কেউ থাকবে না। তারা এ দেশকে শাসন করবে, তারা এ দেশকে লুণ্ঠন করবে। এটা তাদের পৈতৃক সম্পত্তির দেশ। ১৯৭৫ সালেও একদলীয় বাকশাল করা হয়েছিল। সেটা টিকিয়ে রাখা যায়নি।
Next Post