সম্প্রতি বিভিন্ন মিডিয়ায় বাংলাদেশ পুলিশে হাজার হাজার ভারতীয় নাগরিক নিয়োগের রিপোর্ট ধামাচাপা দিতে হঠাৎ করেই অশীতিপর সাংবাদিক ব্রিটিশ নাগরিক শফিক রেহমানকে গ্রেফতার করে রিমান্ডে নেয় সরকার। এই পুরো নাটকটি করা হয় প্রমানাদি সমেত টিভিতেঁ প্রচারিত একটি রিপোর্ট এর প্রতিক্রিয়া ভিন্নখাতে প্রকাশের লক্ষ্যে। তবে শফিক রেহমানকে গ্রেফতারের অজুহাত হিসেবে অবৈধ প্রধানমন্ত্রী হাসিনা পুত্র সজীব জয়কে হত্যার ষড়যন্ত্রের এক বালখিল্য নাটক সাজায় গোয়েন্দারা; অথচ জয় জাতির কাছে একজন নির্বোধ হিসেবেই পরিচিত। খটকাটা এখানেই। যদিও হাসিনাকে হত্যার ষড়যন্ত্র হলে কিছুটা হলেও যা অনেকের চিন্তার খোরাক হতে পারতো।
শনিবার সকাল সাড়ে ৮টায় ইস্কাটনের নিজ বাসা থেকে ডিবি পরিচয়ে শফিক রেহমানকে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়। গ্রেফতারকালে ডিবি পুলিশ নিজেদের বৈশাখী টিভির সাংবাদিক হিসেবে ভুয়া পরিচয়ে প্রবেশ করে। গোয়েন্দা সুত্রে জানা গেছে এই গ্রেফতার অভিযানে ডিবি পুলিশের অভ্যন্তরের ভারতীয় নাগরিক তথা ‘র’ এর অপারেটিভরাও অংশ নেয়; আর পুরো নাটকটির প্লটও ‘র’ এর দ্বারা তৈরি বলে জানা গেছে। প্রাথমিকভাবে এই নাটক সফল হয়েছে বলেই জানা গেছে। পুলিশে ভারতীয় নাগরিক কেলেঙ্কারির বিষয়টিতে কথা বলার পরিবর্তে পুরো বিএনপি এখন শফিক রেহমান ইস্যুতে জড়িয়ে পড়েছে; অনেকটাই ধামাচাপা পড়েছে পুলিশে ভারতীয় নিয়োগ ইস্যুটি।
ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ ব্রিফিংয়ে উপ-কমিশনার মারুফ হোসেন সরদার জানান, ২০১৫ সালের ৩ আগস্ট পল্টন থানায় সজীব জয়কে অপহরণ ও হত্যা পরিকল্পনার মামলা হয়। সজীব জয়কে যুক্তরাষ্ট্রে অপহরণ ও হত্যাচেষ্টার ষড়যন্ত্রের একটি মামলায় সাংবাদিক শফিক রেহমানকে পাঁচ দিনের রিমান্ডে নিয়েছে পুলিশ। ঢাকা মহানগর হাকিম মাজহারুল ইসলামের আদালত এ রিমান্ড মঞ্জুর করেন। প্রশ্ন জেগেছে যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসকারী সজীব জয়কে যুক্তরাষ্ট্রে হত্যার ষড়যন্ত্র ঢাকা বসে ৮২ বছর বয়সের শফিক রেহমান করেই যদি থাকে তবে সে ধরনের বিষয়টি দেখবে যুক্তরাষ্ট্রের পুলিশ বা এফবিআই; তারা তথ্য পাওয়ার আগে দুর্নীতিতে আকণ্ঠ ডুবে থাকা বাংলাদেশ পুলিশ তা পেল কিভাবে? মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মোজাম্মেল হক জানান, শফিক রেহমান ২০১৩ সালে একবার যুক্তরাষ্ট্রে গিয়েছিলেন। তখনই জয়কে অপহরণ ও হত্যার পরিকল্পনা করা হয় বলে তিনি (তদন্ত কর্মকর্তা) জানতে পেরেছেন যা এতদিনেও যুক্তরাষ্ট্র জানতে পারেনি।
এদিকে বৈশাখী টিভির মালিক কানাডার নাগরিক রফিকুল আমিনকে দীর্ঘদিন ভুয়া অজুহাতে কারাগারে আটক রেখে তার সকল সম্পদ আওয়ামী সাংবাদিক ও পুলিশরা লুটে পুটে খাচ্ছে এবং বিভিন্ন ভুয়া কাজ কর্ম করেই চলেছে এই টিভি চ্যানেলের নামে।
বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া বিশিষ্ট সাংবাদিক শফিক রেহমানকে গ্রেফতারের ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে বলেছেন, তাকে গ্রেফতার সরকারের চরম স্বেচ্ছাচারিতারই বহিঃপ্রকাশ। তিনি এক বিবৃতিতে বলেন, “বর্তমান ভোটারবিহীন অবৈধ সরকার রাষ্ট্রের জনগণের বিরুদ্ধে এখন যুদ্ধ শুরু করেছে। সরকারের অপকীর্তি ও লাগামহীন দুর্নীতির কারনে পায়ের নীচের মাটি সরে যাওয়ায় দিশেহারা হয়ে দেশকে নিক্ষেপ করা হচ্ছে এক ভয়ংকর অতল গভীর খাদে। মানুষের ভোটাধিকার হরণের পর বাকস্বাধীনতাও কেড়ে নেয়া হয়েছে। সাংবাদিকদের কন্ঠরোধ করতে তাদের ওপর চলছে দলন-পীড়ন। রাষ্ট্রযন্ত্রকে ব্যবহার করে সাজানো মিথ্যা মামলায় জড়িয়ে দেশের প্রতিথযশা সাংবাদিক এবং সম্পাদকদেরও গ্রেফতার ও নির্যাতন করা হচ্ছে। অনির্বাচিত সরকারের প্রধানমন্ত্রী এখন দেশের স্পষ্টভাষী ও সত্য উচ্চারণে অকুন্ঠ বিদ্ব্যৎজনদেরকেও নির্মুলের মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়ন করছে তাঁর পছন্দের আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর কিছু সংখ্যক সদস্যদের দিয়ে।’
বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন-বিএফইউজে ও ঢাকা সাংবাদিক সাংবাদিক ইউনিয়ন-ডিইউজে’র যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত সমবেশে নেতৃবৃন্দ এসব কথা বলেছেন, সরকার ভিন্নমতের প্রতি কতটা অসহিষ্ণু তা আরেকবার প্রমাণ দিয়েছে সাংবাদিক শফিক রেহমানকে গ্রেফতার ও রিমান্ডে নেয়ার মধ্য দিয়ে। সরকারের দু:শাসন, অপশাসন ও দুর্নীতি-লুটপাটের বিরুদ্ধে লেখালেখি করার কারণেই শফিক রেহমান সরকারের রোষানলে পড়েছেন।
লিবারেল পার্টি বাংলাদেশের নির্বাসিত প্রেসিডেন্ট শেখ মহিউদ্দিন আহমেদ বলেছেন, বাংলাদেশ পুলিশে হাজার হাজার ভারতীয় নিয়োগের বিষয়টি ভিন্নখাতে নেয়ার জন্যই শফিক রেহমানকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। উল্লেখ্য এদের হাতেই সকল গুম খুন হচ্ছে।শফিক রেহমানের মত সজ্জন অশীতিপর বুদ্ধিজীবী নাকি হত্যার প্লট বানায়; তাও আবার সজীব জয়ের মত নির্বোধকে হত্যার জন্য। যে জয় নিজেই জানে না কখন কি সে বলে, সেই তাকে হত্যার প্লট বানানোর গল্প আরও যে নির্বোধদের কাজ সেটি অবৈধ নির্বোধেরা প্রমান করে দিলো।বাঘ এলো বাঘ এলো বলে যারা এগুলো করছে, যেদিন সত্যি বাঘ আসবে সেদিন বাঘের খাবার জোগাড় করে দেবে এরাই।