ঢাকা: ‘সবসময় প্রধানমন্ত্রীর মুখে খুন, খুনি, হত্যা, রক্ত ইত্যাদি শব্দ চুইংগামের মতো লেগেই থাকে’ বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী। সোমবার সকালে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ২০ দলীয় জোটের এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন তিনি। এসময় সারাদেশে তিনদিনের কর্মসূচির ঘোষণা করা হয়।
রিজভী বলেন, ‘উদ্ভট উটের পিঠে এখন দেশ চলছে। লক্ষ্য ও গন্তব্য বলে কিছু নেই। শুধুই দিকভ্রান্ত পথ চলা। অবস্থাদৃষ্টে মনে হয়, প্রধানমন্ত্রী প্রতিহিংসা ও প্রতিশোধ স্পৃহার সর্বশেষ রেশটুকু না মেটানো পর্যন্ত বিরোধী দলের রক্ত ঝরিয়েই যাবেন। বিএনপি, ২০ দলীয় ঐক্যজোট, জিয়া পরিবার বিনাশের জন্য খাওয়া-দাওয়া-ঘুম ছেড়ে দিয়ে যেন মরিয়া হয়ে উঠেছেন। নিজ চোখে এগুলোর ধ্বংস নিশ্চিত করার জন্য রাষ্ট্রশক্তির সর্বোচ্চ ব্যবহার করার পরেও জনগণের জাগরিত শক্তি বিরোধী দলের অনুকূলে দেখে তিনি কাণ্ডজ্ঞান হারিয়ে আরও অত্যুগ্র ক্রুদ্ধ হয়ে উঠেছেন। তাই সবসময় এই অবৈধ সরকার এবং সরকারের প্রধানমন্ত্রীর মুখে খুন, খুনি, হত্যা, রক্ত ইত্যাদি এবং শব্দ চুইংগামের মতো লেগেই থাকে।’
তিনি বলেন, ‘এ সরকার দেশের স্বাধীনতার শত্রুদের নয় বরং দেশের বিরোধী দলকেই সবচাইতে বড় শত্রু মনে করে।’
রিজভী বলেন, ‘সরকার একের পর এক জনগণের সবকিছু কেড়ে নিয়েছে। একের পর এক গণবিরোধী আইন ও নীতি প্রণয়ন করে জনগণের ভোট, সংসদ, জনপ্রশাসন, বিচার বিভাগ, নাগরিকের বাক ও ব্যক্তিস্বাধীনতা কেড়ে নেয়া হয়েছে। সর্বশেষ জাতীয় সম্প্রচার নীতিমালা প্রণয়নের মধ্য দিয়ে মত প্রকাশের স্বাধীনতার পায়ে বেড়ি পরানো হলো।’
বিচারপতিদের অভিশংসনের প্রসঙ্গে রিজভী বলেন, ‘সংবিধানে বিচার বিভাগ পৃথকীকরণ রাষ্ট্র নিশ্চিত করবে বলে বলা হলেও আদালতের ওপর একচ্ছত্র নিয়ন্ত্রণ বজায় রাখার জন্যই জাতীয় সংসদে বিচারপতিদের অভিশংসন আইন করা হচ্ছে। আর এই আইনের দ্বারা কার্যত প্রধানমন্ত্রীকেই সকল বিচারকের ওপর খবরদারি করার ক্ষমতা নিশ্চিত করা হবে। কারণ বিচারপতিদের অভিশংসন ক্ষমতা যাচ্ছে সংসদে। এর ফলে উচ্চ ও নিম্ন আদালতে বিচারক নিয়োগ এবং অপসারণ- দুটিই হবে নির্বাহী বিভাগের কর্তৃত্বে। এটি করা হলে জনগণের সুবিচার পাওয়ার শেষ সম্ভাবনাটুকু হাওয়ায় মিলিয়ে যাবে। জনগণকে যাঁতাকলে সুপারির মতো পিষ্ট করার পাকাপোক্ত ব্যবস্থা হয়ে যাবে। এই আইনের দ্বারা মূলত বিচার বিভাগের স্বাধীনতা থাকবে ইমিটেশনের অলঙ্কারের ন্যায়।’