বগুড়াঃ আগামী ৩১ মার্চ অনুষ্ঠিতব্য বগুড়া সদর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে জামায়াতে ইসলামী সমর্থিত চেয়ারম্যন, ভাইস চেয়ারম্যান ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে প্রার্থীদের নাম আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা করা হয়েছে। এ ঘোষণার পরই পুলিশ শহরের জামিলনগর এলাকা থেকে ১৩ শিবিরকর্মীকে আটক করেছে।
গতকাল শুক্রবার বগুড়া প্রেস কাবে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে জেলা জামায়াতের নায়েবে আমির ও শিবগঞ্জ উপজেলা পরিষদের নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান মাওলানা আলমগীর হুসাইন প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করেন। এ সময় তিনি বলেন, বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া এবং তারেক রহমানের প্রতি সম্মান জানিয়ে গাবতলী উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী দেয়নি জামায়াত।
লিখিত বক্তব্যে মাওলানা আলমগীর বলেন, ১৯ দলীয় জোটের শরীক হিসেবে জামায়াতে ইসলামী নির্দলীয় কেয়ারটেকার সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে আন্দোলন করে আসছে। জোটনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার আহ্বানে আন্দোলন করতে গিয়ে সারাদেশে অসংখ্য নেতাকর্মী শহীদ, হাজার হাজার নেতাকর্মী কারাবরণ করেছেন। এ সময় শুধু বগুড়াতেই ২৫ জন জামায়াত-শিবির নেতাকর্মী শহীদ হয়েছেন এবং জেলা আমির অধ্য শাহাবুদ্দিনসহ অসংখ্য নেতাকর্মী এখনো কারাগারে বন্দী আছেন। তিনি বলেন, প্রতিকূল পরিবেশ এবং অপপ্রচার সত্ত্বেও চলমান উপজেলা নির্বাচনে সারাদেশে বিপুল বিজয়ের পাশাপাশি বগুড়ায় জামায়াত সমর্থিত পাঁচজন চেয়ারম্যান এবং একজন মহিলা ভাইস চেয়ারম্যানসহ ছয়জন ভাইস চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন। আগামী ৩১ মার্চ অনুষ্ঠিতব্য বগুড়া সদর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে সব ক’টি পদেই প্রতিদ্বন্দ্বিতার সিদ্ধান্ত নিয়েছে জামায়াত। চেয়ারম্যান পদে জামায়াতের কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও বগুড়া জেলা আমির বীর মুক্তিযোদ্ধা মো: শাহাবুদ্দিন, ভাইস চেয়ারম্যান জেলা জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি অধ্য আবিদুর রহমান সোহেল এবং মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে মহিলা জামায়াতের আঞ্চলিক নেত্রী সাজেদা সামাদ জামায়াতের সমর্থনে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন। তবে, ২৩ মার্চ অনুষ্ঠিতব্য গাবতলী উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে শুধু ভাইস চেয়ারম্যান পদে উপজেলা জামায়াতের সেক্রেটারি মাওলানা আবদুল মজিদকে সমর্থন দেয়া হয়েছে। গাবতলী উপজেলায় শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের জন্মস্থান হওয়ায় বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া এবং তারেক রহমানের প্রতি সম্মান জানিয়ে সেখানে চেয়ারম্যান পদে কোনো প্রার্থী দেয়নি জামায়াত। সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে জামায়াতে ইসলামী সমর্থিত প্রার্থীদের ভোট প্রদানের জন্য ভোটারদের প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানানো হয়।
অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন জেলা জামায়াতের নায়েবে আমির ও কাহালু উপজেলা পরিষদের পুনঃনির্বাচিত চেয়ারম্যান মাওলানা তায়েব আলী, নন্দীগ্রাম উপজেলা জামায়াতের আমির ও নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান নুরুল ইসলাম মণ্ডল, শেরপুর উপজেলা জামায়াতের সেক্রেটারি ও নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান আলহাজ দবিবুর রহমান, আদমদীঘি উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান ডা: ইউনুছ আলী, সোনাতলা উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান মুক্তিযোদ্ধা এনামুল হক মণ্ডল, সারিয়াকান্দি উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান প্রভাষক নজরুল ইসলাম, জেলা জামায়াতের প্রচার সেক্রেটারি মাওলানা আবু বকর ছিদ্দিক, শাহীন মিয়া, আনোয়ার হোসেন প্রমুখ।
এ দিকে সংবাদ সম্মেলন শেষ হওয়ার পর পরই ডিবি ও থানা পুলিশের সদস্যরা প্রেস কাবে পৌঁছেন। সেখান থেকে তারা আজিজুল হক কলেজসংলগ্ন জামিলনগরের বিভিন্ন ছাত্রাবাসে অভিযান চালিয়ে ইসলামী ছাত্রশিবিরের ১৩ জন নেতাকর্মীকে আটক করে। তাদেরকে থানায় নিয়ে সদর থানায় দায়েরকৃত বিভিন্ন ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ ঘটনার মামলায় গ্রেফতার দেখানো হয়। তবে তারা এজাহারভুক্ত আসামি নন।
এ ব্যাপারে সদর থানার ওসি ফায়জুর রহমান জানান, আটককৃতদের নামে বিভিন্ন সময় ককটেল বিস্ফোরণ, গাড়ি ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় মামলা রয়েছে।
ইসলামী ছাত্রশিবির বগুড়া শহর শাখার সভাপতি আলাউদ্দিন সোহেল ও সেক্রেটারি রেজাউল করিম এক বিবৃতিতে বলেছেন, পুলিশ বিনা উসকানিতে নিরীহ ছাত্রদের গ্রেফতার করে উত্তেজনা সৃষ্টি করছে। অবিলম্বে অন্যায় অভিযান ও গ্রেফতার বন্ধ করতে হবে। একই দাবিতে বিবৃতি দিয়েছেন বগুড়া জেলা জামায়াতের ভারপ্রাপ্ত আমির মাওলানা আবদুল হক সরকার।
Prev Post