[ads1]দলের স্থায়ী কমিটি গঠন নিয়ে যেন শ্যাম রাখি না কূল রাখি অবস্থায় পড়েছেন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। কাকে বাদ দিয়ে কাকে দলের নীতি র্নিধারণী সর্বোচ্চ ফোরামে জায়গা দেবেন এ সিদ্ধান্ত নিতে পারছেন না বিএনপি প্রধান। ফলে নতুন স্থায়ী কমিটি ঘোষণা করতে দেরি হচ্ছে। বেগম খালেদা জিয়ার বরাত দিয়ে এ তথ্য জানিয়েছেন চলমান স্থায়ী কমিটির একজন প্রবীণ সদস্য। তিনি জানান, ঈদের আগে নতুন স্থায়ী কমিটি গঠনের কোনো সম্ভাবনা নেই।নাম না প্রকাশ করার শর্তে বিএনপির স্থায়ী কমিটির ঐ সদস্য বলেন, বেগম খালেদা জিয়া দলের সিনিয়র নেতাদের ডেকে বলেছেন যে স্থায়ী কমিটি গঠন নিয়ে তিনি সংকটে আছেন। যা কেউ বুঝতে পারছে না। দলে স্থায়ী কমিটির সদস্য হওয়ার মতো অসংখ্য যোগ্য নেতা রয়েছেন। তাই কাকে রাখবেন আর কাকে অন্য যোগ্য সম্মান দেবেন তা নির্ধারণ করা কষ্টকর হয়ে গেছে।তবে বেগম খালেদা জিয়া সিনিয়র নেতাদের স্পষ্ট জানিয়েছেন তিনি বর্তমান স্থায়ী কমিটি থেকে গুরুতর অসুস্থ দুইজন ছাড়া আর কাউকে বাদ দিতে চান না। এ ক্ষেত্রে নতুন স্থায়ী কমিটি গঠন না বলে কমিটি পুনর্গঠন প্রক্রিয়া চলছে বলে উল্লেখ করেন খালেদা জিয়া।স্থায়ী কমিটির আরও একজন জ্যেষ্ঠ নেতা জানান, শুধু দলের জন্য শ্রম দেওয়া বা বেশি সময় দল করাকেই প্রাধান্য দিচ্ছেন না বেগম খালেদা জিয়া। এবার নিজের একান্ত বিশ্বস্ত ও সরকারের সাথে ন্যূনতম যোগাযোগ নেই এমন কয়েকজনকে বেছে নিতে চান তিনি। কারণ এর আগে স্থায়ী কমিটির বেশ কয়েকজন সদস্য সরকারের সাথে আঁতাত করে চলেছেন বলে দলে সমালোচনা ছিল। যে কারণে বিএনপির সরকার বিরোধী আন্দোলনের কৌশল বা খালেদা জিয়ার গোপন কিছু সিদ্ধান্ত দ্রুততম সময়ে সরকারের কানে চলে যেত।[ads1]
দলীয় সূত্র জানায় বিএনপির স্থায়ী কমিটি পুনর্গঠন হলে প্রয়াত মহাসচিব খোন্দকার দেলোয়ার হোসেনের জায়গায় নামটি আসছে বর্তমান মহাসচিব মীর্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের। এর বাইরে মারা গেছেন ড. আর এ গণী ও গুরুতর অসুস্থতায় দীর্ঘ কয়েক বছর শয্যাশায়ী এম শামসুল ইসলাম। এ দুটি পদে কেবল নতুন মুখ আনার সুযোগ আছে বিএনপি চেয়ারপারসনের হাতে। কিন্তু এ দুই পদের বিপরীতে বেগম জিয়ার হাতে যোগ্য নেতার নাম রয়েছে ১৫ জনের। অন্যদিকে স্থায়ী কমিটির একমাত্র মহিলা সদস্য সারোয়ারি রহমান অসুস্থ । কিন্তু সারোয়ারি রহমানকে এখনই বাদ দেওয়ার মতো কোনো সিদ্বান্তে যাওয়াও কঠিন হয়ে পড়েছে।বেগম খালেদা জিয়া বৃহস্পতিবার বর্তমান স্থায়ী কমিটির সদস্যদের নিয়ে একটি সভা করে সার্বিক বিষয়ে পরামর্শ করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু শেষ মুহূর্তে সে সিদ্ধান্তও বাতিল হয়। ঈদের আগে সিনিয়র নেতাদের নিয়ে একটি সভা করার পরিকল্পনা আছে বলে বিএনপি চেয়ারপারসনের গুলশান কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে।নিজেদের পরিচয় নিয়েই দ্বিধাদ্বন্দ্বে স্থায়ী কমিটির সদস্যরা
গত ১৯ মার্চ দলের জাতীয় কাউন্সিল হওয়া ও নতুন জাতীয় কমিটির এখন পর্যন্ত ৪২ জনের নাম ঘোষণার পর ‘স্থায়ী কমিটির’সদস্যরা নিজেরা বর্তমান নাকি সাবেক সদস্য হিসেবে পরিচয় দেবেন এ নিয়ে দ্বিধাদ্বন্দ্বে আছেন। এ নিয়ে সিনিয়র নেতারা গঠনতন্ত্র নিয়ে একেকজন একেক রকম ব্যাখ্যা দিচ্ছেন।যোগাযোগ করা হলে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মাহবুবুর রহমান বলেন, আমি নিজেকে এখন আর স্থায়ী কমিটির সদস্য মনে করি না। গঠনতন্ত্র অনুযায়ী কাউন্সিলের পর তিনি নিজেকে স্থায়ী কমিটির সাবেক সদস্য হয়ে গেছেন বলে মনে করেন সাবেক এই সেনা প্রধান। এ মাসের শুরুতে জাতীয় প্রেস ক্লাবে এক অনুষ্ঠানে মাহবুবুর রহমানকে স্থায়ী কমিটির সদস্য হিসেবে আয়োজকরা নাম ঘোষণা করলে তিনি দ্বিমত পোষণ করেন। তিনি বলেন, স্থায়ী কমিটির সভা বলে কাউন্সিল পরবর্তী যে সভাকে চিহ্নিত করা হচ্ছে তাও আসলে সাবেক স্থায়ী কমিটির সদস্যদের নিয়ে বেগম খালেদা জিয়ার একটি চা চক্র ছিল। পরিবর্তন ডটকমঅন্যদিকে স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন ও গয়েশ্বরচন্দ্র রায় বলেন, গঠনতন্ত্র অনুযায়ীনতুন স্থায়ী কমিটি ঘোষণা না করা পর্যন্ত বর্তমান কমিটিরই কার্যক্রম থাকবে। কারণ কাউন্সিলররা এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে বেগম খালেদা জিয়াকে ক্ষমতা দিয়েছেন। তাই কাউন্সিলে বা পরবর্তীতে বেগম খালেদা জিয়া আনুষ্ঠানিক বিলুপ্ত ঘোষণা না করা পর্যন্ত আগের স্থায়ী কমিটিকে কেউ সাবেক বলতে পারবে না। নতুন স্থায়ী কমিটি কবে ঘোষণা হতে পারে জানতে চাইলে গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, ’আমি তিন মাস বেগম জিয়ার কার্যালয়ে যাই না। কোনো খোঁজও রাখি না। নতুন স্থায়ী কমিটি কবে হবে জানি না।’বিএনপির গঠনতন্ত্রের ১০এর খ ধারার দুই অনুচ্ছেদে বলা আছে যে, কাউন্সিলের মাধ্যমে জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্যদের নির্বাচন অনুষ্ঠান করা হবে। তবে এ বিষয়ে কোনো সুনির্দিষ্ট সময়সীমার কথা গঠণতন্ত্রে উল্লেখ নেই।[ads2]