বিজেপির জয়, বিএনপির আস্ফালন গুরুত্ব দিচ্ছে না আ.লীগ

0

image_92437_0ঢাকা: ভারতের লোকসভা নির্বাচনে ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) নেতৃত্বাধীন এনডিএ জোটের জয়ে বিএনপির আস্ফালন গুরুত্ব দিচ্ছে না আওয়ামী লীগ। তারা মনে করেন বিএনপির নেতারা জানেন এ বিজেপির সঙ্গে ৯৬ সালে আওয়ামী লীগ সরকারই গঙ্গার পানি চুক্তি করেছিল। কিন্তু তারপরও তারা (বিএনপি) বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কথা বলে দেশের মধ্যে একটা অস্থিতিশীল পরিবেশ সৃষ্টি করতে চায়। এতে আওয়ামী লীগ সঙ্কিত নয়।

এছাড়া ভারতের ক্ষমতার পালাবদলে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যকার সম্পর্কে কোনো নেতিবাচক প্রভাব পড়বে না বলেও মনে করে ক্ষমতাসীন দলটি।

দলটির নেতাদের সঙ্গে আলাপকালে তারা বলেন, ভারতের নির্বাচন নিয়ে বিএনপির উল্লাসে উদ্বিগ্ন হওয়ার কিছু নেই। কারণ বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের যে বন্ধুপ্রতিম সম্পর্ক রয়েছে, তাতে কোনো প্রভাব পড়বে না। ভারতের সঙ্গে আমাদের বৈদেশিক ও বাণিজ্যিক সম্পর্ক সবসময় ইতিবাচক ছিল, এখনো আছে এবং ভবিষ্যতেও থাকবে। তাই ভারতের নতুন সরকারের সঙ্গে সম্পর্ক হবে বন্ধুত্বপূর্ণ।

গঙ্গার পানি চুক্তির কথা স্মরণ করিয়ে দলটির নেতারা আরো বলেন, বিজেপির সঙ্গে আওয়ামী লীগের কখনো খারাপ সম্পর্ক ছিল না। ১৯৯৬ সালে বিজেপি সরকারের সঙ্গেই আমরা গঙ্গার পানি চুক্তি করেছিলাম। আশা করি ভবিষ্যতে দেশের স্বার্থ রক্ষা করে আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে তিস্তাচুক্তিসহ যে কোনো সমস্যা সমাধান করতে সক্ষম হবে আওয়ামী লীগ।

তবে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করেন, ৫ জানুয়ারি জাতীয় নির্বাচনে কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন ভারত সরকারের অবস্থানের পর তাদের নির্বাচনের গুরুত্ব বেড়ে যায় বাংলাদেশের রাজনীতিতে। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের ঐতিহাসিক মিত্র কংগ্রেসের ভরাডুবিতে নতুন করে সমস্যায় পড়বে বর্তমান সরকার। কারণ বিজেপি সরকার গঠন করলে দুই দেশের মধ্যে বিরাজমান দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কে নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে। বিএনপি-জামায়াতের সঙ্গে বিজেপির পুরনো সম্পর্ক এক্ষেত্রে কিছুটা নিয়ামক হতে পারে।

কিন্তু রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতামতকে পাত্তা দিচ্ছে না আওয়ামী লীগের নেতারা।

তারা বলছেন, ভারত সরকার বাংলাদেশ নীতিতে ভিন্ন কোনো পথ অবলম্বন করবে না। কারণ ভারতের অতীত ইতিহাস দেখলে বোঝা যায় ভারত তাদের পররাষ্ট্রনীতিতে তেমন কোনো পরিবর্তন করে না। সুতরাং ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক অব্যাহত থাকবে।

আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য নূহ উল আলম লেনিন বলেন, ‘ভারতের নির্বাচন নিয়ে উল্লসিত বা উদ্বিগ্ন হওয়ার কিছু নেই। ভারতে নতুন সরকার গঠিত হলেও বাংলাদেশের সঙ্গে বিরাজমান বন্ধুত্বের সম্পর্ক ইতিবাচক ধারায় প্রবাহিত হবে। ভারতে নতুন সরকারের সঙ্গে সম্পর্ক হবে বন্ধুত্বপূর্ণ।’

তিনি আরো বলেন, ‘ভারতের মতো বৃহৎ একটি রাষ্ট্রের পররাষ্ট্রনীতিতে মৌলিক কোনো পরিবর্তন হয় না এটা বিএনপি নেতারাও জানেন। কংগ্রেসের সঙ্গে আওয়ামী লীগের ঐতিহাসিক সম্পর্ক থাকলেও বিজেপির সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক খারাপ নয়। ৯৬-এ গঙ্গার পানিচুক্তি হয়েছে এই বিজেপির সঙ্গে, আশা করি এবার তিস্তাচুক্তিও হবে।’

এ বিষয়ে আওয়ামী লীগের আন্তর্জাতিকবিষয়ক সম্পাদক কর্নেল (অব.) ফারুক খান বলেন, ‘ভারতে যে-ই ক্ষমতায় আসুক, বাংলাদেশের সঙ্গে প্রতিবেশীসুলভ সুন্দর সম্পর্ক বজায় থাকবে। শুধু প্রতিবেশী রাষ্ট্র নয়, দক্ষিণ এশিয়ার স্বার্থ রক্ষার বিষয়টি তারা ভালোভাবে অনুধাবন করবে, সজাগ থাকবে।’

তিনি আরো বলেন, ‘আমি মনে করি, দুই দেশের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কে কোনো প্রভাব পড়বে না। ১৯৯৬ সালের গঙ্গাচুক্তির কথা নিশ্চিয় আপনাদের মনে আছে। সুতরাং বিজেপির সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক খারাপ এমনটা মনে করার কোনো কারণ নেই। তাছাড়া বিজেপির আমলেই পার্বত্য শান্তিচুক্তিও হয়েছে। আশা করি ভবিষ্যতেও দেশের স্বার্থ রক্ষা করে আলাপ-আলোচনার মধ্য দিয়ে আমরা যে কোনো বিষয় সমাধান করে সামনে অগ্রসর হতে পারব ‘

Leave A Reply

Your email address will not be published.

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More