ডেস্ক: কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে রবিবার ১৮ দলের বিক্ষোভ মিছিল চলাকালে টাঙ্গাইল, নারায়ণগঞ্জ ও বরিশালে পুলিশের সঙ্গে নেতাকর্মীদের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে পুলিশ ও সাংবাদিকসহ অন্তত ১৫০ জন আহত হয়েছেন। টাঙ্গাইল ও নারায়ণগঞ্জের সংঘর্ষস্থল থেকে পুলিশ বিএনপি-জামায়াতের আট নেতাকর্মীকে আটক করেছে।
টাঙ্গাইল সংবাদদাতা জানান, কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে টাঙ্গাইল জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক শামছুল আলম তোফার নেতৃত্বে দুপুর সোয়া ১২টায় শহরের স্থানীয় শহীদ স্মৃতি পৌর উদ্যান থেকে একটি মিছিল বের হয়। মিছিলটি ভিক্টোরিয়া সড়কে জাহাজ বিল্ডিংয়ের সামনে পৌঁছলে চারদিক থেকে পুলিশ ঘিরে ফেলে। পুলিশের লাঠিচার্জ ও ফাঁকা গুলিবর্ষণে মিছিল ছত্রভঙ্গ হয়ে যায়। এ সময় বিক্ষুব্ধ নেতাকর্মী পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে। এতে উভয়পক্ষে সংঘর্ষ বেধে যায়। সংঘর্ষে ইন্ডিপেন্ডেন্ট টেলিভিশনের জেলা প্রতিনিধি এহসানুল হক শাহীন, কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের সহসাধারণ সম্পাদক তারেকুল ইসলাম ঝলক ও পুলিশের এসআই আরিফসহ অন্তত ৩০ জন আহত হয়। এদের মধ্যে তারেকুল ইসলাম ঝলকসহ বিএনপি-জামায়াতের ৫ জন গুলিবিদ্ধ হয়েছে বলে দাবি করেছে জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক শামছুল আলম তোফা।
এ ঘটনার সময় শহরের নিরালা মোড় থেকে ছাত্রলীগ ও শ্রমিকলীগ নেতাকর্মী রড ও লাঠি নিয়ে ভিক্টোরিয়া সড়কে ঘটনাস্থলে আসে। পুলিশের হাতে আটক এক জামায়াত নেতাকে তারা মারপিট করে। এ সময় সেখানে পর পর দুটি ককটেল বিস্ফোরিত হয়। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে ছয়জনকে আটক করে। তারা হলেন— জেলা ছাত্রদলের ক্রীড়া সম্পাদক রাশেদ খান সোহাগ, ছাত্রদল কর্মী হূদয় আকন্দ, হাবিবুর রহমান, শান্ত, জামায়াত কর্মী নিজামুল হক ও ইদ্রিস আলী। টাঙ্গাইল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নজরুল ইসলাম জানান, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ১০ রাউন্ড ফাঁকা গুলিবর্ষণ করা হয়েছে। গুরুত্বপূর্ণ স্থানে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি জানান, বিকাল সাড়ে ৫টায় ফতুল্লার শিবু মার্কেট এলাকা থেকে ফতুল্লা থানা বিএনপির সাবেক সভাপতি অধ্যাপক খন্দকার মনিরুল ইসলামের নেতৃত্বে একটি মিছিল বের হয়। মিছিলটি নারায়ণগঞ্জ জেলা পরিষদের সামনে আসামাত্র পুলিশ বাধা দেয়। এক পর্যায়ে দুই পক্ষের ধাওয়া পাল্টাধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এ সময় পুলিশ ২-৩ রাউন্ড ফাঁকা গুলি করলে নেতাকর্মীরা ছত্রভঙ্গ হয়ে যায়। পুলিশের লাঠিপেটায় অধ্যাপক মনিরুল ইসলাম, কবির প্রধান, চয়ন, জুয়েল, বিল্লাল হোসেনসহ অন্তত ১০ জন আহত হয়েছে।
অধ্যাপক মনিরুল ইসলাম বলেন, আমাদের শান্তিপূর্ণ মিছিলে পুলিশ লাঠিচার্জ ও গুলিবর্ষণ করে।
ফতুল্লা মডেল থানার এসআই মিজানুর রহমান মিজান জানান, রাস্তা বন্ধ করে মিছিল করার সময় পুলিশ মৃদু লাঠিচার্জ করে ছত্রভঙ্গ করে দেয়। ঘটনাস্থল থেকে নিজাম ও সেলিম নামে দুজনকে আটক করা হয়েছে বলে তিনি জানান।
বরিশাল অফিস জানায়, হিজলা উপজেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক নূরুল আলমের নেতৃত্বে সকাল ৮টায় কাশিমাবাজার থেকে বিক্ষোভ মিছিল বের হয়। মিছিলটি কিছুদূর যেতেই স্থানীয় আওয়ামী লীগকর্মীরা বাধা দেয়। এতে উভয়পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ বেধে যায়। এ সময় বিএনপি নেতা কাঞ্চন বেপারি (৪৫), আল আমিন (৩০), সম্রাট (২৫) ও মহসিন হাওলাদার (৩০) আহত হন। তাদের হিজলা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়।