স্বাধীনতার পর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান একাত্তরে নিহতের সংখ্যা বের করতে উদ্যোগ নিয়েছিলেন দাবি করে বিএনপিপন্থি এই পেশাজীবী নেতা বলেছেন, বিএনপি নেত্রী তার বক্তব্যের মধ্য দিয়ে ‘বঙ্গবন্ধুর উদ্যোগকেই’ সামনে এনেছেন।
“সংকীর্ণতার ঊর্ধ্বে উঠে উনি শেখ মুজিবকেই উচ্চকিত করেছেন, এজন্য আপনাকে (খালেদা জিয়া) ধন্যবাদ।”
শুক্রবার রাজধানীর রমনায় ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন সেমিনার কক্ষে এক আলোচনা সভায় বক্তব্য দেন জাফরুল্লাহ। দলীয় বক্তব্য ও কর্মকাণ্ড প্রচারে বিএনপির ‘দুর্বলতা’ ধরিয়ে দেওয়ার পাশাপাশি সংগঠন শক্তিশালী করতে খালেদাকে গুলশান ছেড়ে দেশজুড়ে সফর করার পরামর্শ দেন তিনি।
গত ২১ ডিসেম্বর এক আলোচনা সভায় বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা বলেন, “আজকে বলা হয়, এতো লক্ষ লোক শহীদ হয়েছেন। এটা নিয়েও অনেক বিতর্ক আছে যে আসলে কত লক্ষ লোক মুক্তিযুদ্ধে শহীদ হয়েছেন। নানা বই-কিতাবে নানারকম তথ্য আছে।”
তার এই বক্তব্যের পর তীব্র প্রতিক্রিয়া হয়। বক্তব্য প্রত্যাহার করে খালেদাকে ক্ষমা চাওয়ার আহ্বান জানায় একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি। খালেদার নামে আদালতে একাধিক মামলাও দায়ের করা হয়।
জাফরুল্লাহ চৌধুরী (ফাইল ছবি) জাফরুল্লাহ চৌধুরী (ফাইল ছবি) সেই সমালোচনার মধ্যেই খালেদার বক্তব্যের সমর্থনে জাফরুল্লাহ বলেন, “মুজিব ভাইয়ের (বঙ্গবন্ধু) বড় গুণ ছিল মহানুভবতা। তিনি উপলব্ধি করেছিলেন- মুক্তিযুদ্ধে যারা মারা গেছেন, তাদের সঠিক তথ্যটা উপস্থাপন করা।
“উনি ১৩ তারিখ দায়িত্বভার নেওয়ার পরে ড. সাত্তারকে দিয়ে মুক্তিযুদ্ধে কতজন মারা গেছেন, মুক্তিযুদ্ধে হতাহতের সংখ্যা নিরূপনের জন্য কমিটি করেছিলেন। এখনও ড. সাত্তারের জুনিয়র আসাফুদ্দৌলা সাহেব জীবিত। উনি তো কমিটিতে ছিলেন, জানেন সেই কমিটিতে কী হয়েছে। উনার এটা দায়িত্ব জানানোর।”
মুক্তিযুদ্ধে হতাহতের সংখ্যা নির্ধারণে সে সময় আরেকটি কমিটি করা হয়েছিল দাবি করে তিনি বলেন, “শেখ মুজিবুর রহমান আরেকটা দ্বিতীয় মহান কাজ করেছিলেন, উনি তৎকালীন আইজি আবদুর রহীম সাহেবের নেতৃত্বে একটা ১০ জনের কমিটি করেছিলেন মুক্তিযুদ্ধে হতাহতের সংখ্যাটা নিরূপনের জন্য- ইউনিয়ন থেকে শুরু করে এই পর্যন্ত। এসব কথা (ইতিহাস) আমরা ভুলে গিয়েছিলাম।”
একাত্তরে নিহতের সংখ্যা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করে দেওয়া বক্তব্যে খালেদা জিয়া আবারও সেই বিষয়টিকে সামনে এনেছেন বলে মনে করছেন জাফরুল্লাহ চৌধুরী, যিনি যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনাল অবমাননার দায়ে সম্প্রতি শাস্তি পেয়েছেন।
জাফরুল্লাহ বলেন, “খালেদা জিয়া সম্পূর্ণ সংকীর্ণতাকে পরিহার করে আমাদের বঙ্গবন্ধু, আমাদের প্রিয় মুজিব ভাইয়ের যে চিন্তা-চেতনা ছিল তাকে উনি তুলে ধরার চেষ্টা করেছেন।”