মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস ও শহীদের সংখ্যা বিকৃত করা রোধে গণহত্যা অস্বীকার আইনসহ ১০ দাবিতে জাতীয় সংসদের স্পিকারকে স্মারকলিপি দিয়েছে আন্তর্জাতিক যুদ্ধাপরাধ গণবিচার আন্দোলন। তবে স্মারকলিপি প্রদানের আগে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে এক ঘণ্টা রাস্তা আটকে সমাবেশ করে সংগঠনটি। এতে ভোগান্তিতে পড়ে সাধারণ মানুষ।
আজ বুধবার রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে স্মারকলিপি পেশ পূর্ব সমাবেশে শাজাহান খান আসেন বিকেল চারটার দিকে। কিন্তু বিকেল তিনটা ২০ মিনিটের দিক থেকে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনের রাস্তা আটকে সমাবেশ শুরু হয়। রাস্তার মাঝখানে ট্রাক রেখে অস্থায়ী মঞ্চে বক্তব্য দেন সংগঠনটির নেতা-কর্মীরা। এতে প্রেসক্লাব, পল্টন, সচিবালয় এলাকায় তীব্র যানজটের কবলে পড়েন সাধারণ মানুষ। বক্তব্য শেষ করে সংগঠনটির আহ্বায়ক ও নৌপরিবহন মন্ত্রী শাজাহান খানের নেতৃত্বে কদম ফোয়ারা-হাইকোর্ট-মৎস্য ভবন ও ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তন পর্যন্ত মিছিল যায়। এ সময় হাইকোর্টের সামনে দুটি অ্যাম্বুলেন্স মিছিলের মধ্যে আটকা পড়ে। পরে ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনের সামনে পুলিশ গণবিচার আন্দোলনের কর্মীদের বাধা দিলে একটি প্রতিনিধি দল গিয়ে জাতীয় সংসদে গিয়ে স্পিকারকে স্মারকলিপি দেন।
ওই সমাবেশে শাজাহান খান বলেন, পাকিস্তানের আত্মসমর্পণ চুক্তি অনুযায়ী চিহ্নিত ১৯৫ পাকিস্তানি সেনার বিচার, বাংলাদেশের জনগণের কাছে সে দেশের রাষ্ট্রপতির ক্ষমা প্রার্থনা ও আর্থিক হিসাব-নিকাশ মেটানোর কথা থাকলেও তারা সে চুক্তি লঙ্ঘন করেছে। তারা যেহেতু চুক্তি ভঙ্গ করেছে, সে ক্ষেত্রে তাদের বিচারে আর কোনো বাধা নেই।
স্মারকলিপিতে মানবতাবিরোধী অপরাধীদের স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত ও সপরিবারে নাগরিকত্ব বাতিল; গণহত্যার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতির জন্য প্রয়োজনীয় কার্যক্রম গ্রহণ; জামায়াত ও তাদের সহযোগী সংগঠনগুলোকে নিষিদ্ধ ও বিচার; স্বাধীনতাবিরোধী কার্যক্রমে অর্থ যোগদানকারী ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা; বাংলাদেশে আটকে পড়া পাকিস্তানের ফেরত; ১৯৭০ সালের ঘূর্ণিঝড়ে পূর্ববাংলাকে দেওয়া বিদেশিদের সাহায্যের নগদ অর্থ ও ত্রাণ আদায়ের উদ্যোগ এবং পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর গণহত্যা, খুন, ধর্ষণ, লুণ্ঠন ও অগ্নিসংযোগের যথোপযুক্ত ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলা হয়।
কর্মসূচিতে অধ্যাপক আবদুল মান্নান চৌধুরী, ইসমত কাদির গামা, ওসমান আলী, কামরুল আলম, অভিনেত্রী রোকেয়া প্রাচী, বদরুদ্দোজা নিজাম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।