ঢাকা: ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট ঘটে যাওয়া গ্রেনেড হামলার সঙ্গে বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমান জড়িত বলে মন্তব্য করে আইনমন্ত্রী অ্যাডভোকেট আনিসুল হক বলেছেন, ‘ক্ষমতায় যখন যে সরকার থাকবে তখন সে আমলে ঘটে যাওয়া সকল দুর্ঘটনার দায়-দায়িত্ব ওই সরকারকেই নিতে হবে। সে হিসেবে ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট এ দেশে সরকার পরিচালনায় ছিল বিএনপি-জামায়াত জোট। কাজেই ২১ আগস্টের গ্রেনেড হামলার দায়-দায়িত্ব জোট সরকারকেই নিতে হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘শুধু গ্রেনেড হামলাই নয়, যে কোনো সরকারের আমলে যদি লঞ্চ এবং ট্রেন দুর্ঘটনাও ঘটে সেই ঘটনার দায়ও সরকার এড়াতে পারে না।’
শনিবার রাজধানীর একটি হোটেলে বাংলাদেশ চ্যাপ্টার অব দ্যা এশিয়ান সোসাইটি অব ইন্টারন্যাশনাল ল এর উদ্যোগে আয়োজিত দুইদিনব্যাপী অনুষ্ঠানের উদ্বোধন শেষে সাংবাদিকেদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।
আইনমন্ত্রী বলেন, ‘গ্রেনেড হামলায় তৎকালীন সরকারের ভূমিকা সন্দেহজনক। ওই ঘটনায় প্রধানন্ত্রী শেখ হাসিনা যে বক্তব্য দিয়েছেন তাতে বিচারে কোনো প্রভাব ফেলবে না।’
তারেক রহমান জড়িত দাবি করে তিনি বলেন, ‘তারা ক্ষমতায় থেকে কেন ব্যবস্থা নেয়নি? যদি তারেক জড়িত না থাকেন তাহলে তিনি কেন বিচারের সম্মুখীন হচ্ছেন না। তার তো বিচারের সম্মুখীন হওয়ার উচিত ছিল।’
আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনাসহ দলের সকল নেতাকে মেরে ফেলতে ওই গ্রেনেড হামলা করা হয়েছিলো বলে মন্তব্য করেন মন্ত্রী।
উদাহরণ টেনে তিনি বলেন, ‘২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার দায় বেগম খালেদা জিয়া ও তার ছেলে তারেক জিয়া ও বিএনপি জামায়াত জোট সরকারের মন্ত্রীরা এড়াতে পারেন না।’
আইনমন্ত্রী আরও বলেন, ‘২১ আগস্ট কোনো দুর্ঘটনা নয়, এটা হত্যাকাণ্ড, যা পরিকল্পনা করে ঘটানো হয়েছে। সমাবেশে শেখ হাসিনাকে মেরে ফেলার ষড়যন্ত্র করা হয়েছিল। ওই ঘটনায় ২২ জন নিহত হয়েছেন।
অন্য এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলার বিচার শেষ হয়েছে। এখন এটা পুনরুজ্জীবিত করার সুযোগ নেই। তেমনি জিয়াউর রহমানের বিরুদ্ধে মরণোত্তর বিচারেরও কোনো সুযোগ নেই।
দুইদিনব্যাপী এই সম্মেলনে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইন, আন্তর্জাতিক মানবিক আইন, শরণার্থী ও অভিবাসী আইন, আন্তর্জাতিক বাণিজ্য ও বিনিয়োগ আইন এবং আন্তর্জাতিক পরিবেশ আইনের ওপর আলোচনা হয়।
এশিয়া সোসাইটি অফ ইন্টারন্যশনাল ল অ্যান্ড ফোরামের সাবেক সভাপতি প্রফেসর ড. সুরাকিআর্ট সাথিরাথাই এর সভাপত্বিতে অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন প্রবীণ আইনজীবী ড. কামাল হোসেন, প্রফেসর বিএস মানি, প্রফেসর সায়মন চ্যাস্টারম্যান, প্রফেসর ড. বোরহান উদ্দিন খান প্রমুখ।
সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে অস্ট্রেলিয়া, চীন, জাপান, সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া, থাইল্যান্ড, ইন্দোনেশিয়া, দক্ষিণ কোরিয়া, শ্রীলংকা, ভারত, পাকিস্তান, নেপাল, গ্রীস, যুক্তরাজ্য, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ফিলিপাইন, ভিয়েতনাম ইরান এবং বাংলাদেশের নাগরিকরা অংশগ্রহণ করেন।
এছাড়াও অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে রয়েছেন আন্তর্জাতিক আদালতের বিচারপতি, আইনজ্ঞ, স্বনামধন্য আইনজীবী, শিক্ষাবিদ ও গবেষকরা।