বিএনপির যুগ্মমহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, সন্ত্রাস, সংঘাত, সহিংসতা অবলম্বনকারী এই সরকার কখনোই গণতন্ত্রের পথে হাঁটার আহবান কান পেতে শুনবে বলে মনে হয় না। শুধুমাত্র তারা নিজেদের ক্ষমতাকে জোর করে আঁকড়ে ধরতে এমন কোন নোংরামি নেই যা করতে বাদ রাখবে। আর সেই জন্যই তারা গ্রেপ্তার আর ক্রস ফায়ার অব্যাহত রেখেছে।
রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে বুধবার বিকেলে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন- বিএনপির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক ও যুবদলের সিনিয়র সহ-সভাপতি অ্যাডভোকেট আবদুস সালাম আজাদ, সহ-দফতর সম্পাদক আসাদুল করিম শাহীন, স্বেচ্ছাসেবক দলের সিনিয়র সহ-সভাপতি মনির হোসেন, স্বেচ্ছাসেবক দলনেতা সাইফুল ইসলাম পটু, ছাত্রদল দফতর সম্পাদক মো. আবদুস সাত্তার পাটোয়ারি প্রমুখ।
রিজভী বলেন, সরকার তরুণদের ভয় পায়, যুব সমাজকে ধ্বংস করতে ক্রস ফায়ার দিয়ে ত্রাস সৃষ্টি করছে।
৫ জানুয়ারির সমাবেশে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সংলাপ প্রস্তাবে সরকারের নেতিবাচক মনোভাব সম্পর্কে রিজভী বলেন, এদেশে বিএনপি বহুদলীয় ও বহুমাত্রিক গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেছে। গণতন্ত্র মানেই হচ্ছে, সকল রাজনৈতিক দল এবং মানুষের স্বাধীন মতামত প্রকাশ করা। একটি নিরপেক্ষ নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের মতামতের ভিত্তিতে রাষ্ট্র পরিচালনার সুযোগ গ্রহণ করা।
তিনি বলেন উল্লেখিত সব পথ আওয়ামী লীগ বন্দ করে দিয়েছে। সুতরাং তাদের একমাত্র ইচ্ছা হচ্ছে আমরা জোর করে ক্ষমতায় থাকব। কারও কোনো গণতান্ত্রিক অধিকার দিব না। কারো গণতান্ত্রিক অধিকার দিলে তারা ক্ষমতায় থাকতে পারবে না। ক্ষমতার পালাবদল ঘটবে। এই কারণে তাদের মিথ্যা অহঙ্কার, তাদের দুর্বৃত্তপরায়ণ ইচ্ছা বাস্তবায়ন করার জন্য তারা এ ধরনের কথা বার্তা বলছেন।
এর আগে ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভানেত্রীর রাজনৈতিক কার্যালয়ে বুধবার দুপুরে যৌথসভা শেষে এক সংবাদ সম্মেলনে দলটির যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ খালেদা জিয়ার সংলাপ আহ্ববান প্রসঙ্গে বলেন, উনি (খালেদা জিয়া) সরকারের সঙ্গে আলোচনায় বসতে চান। অন্যদিকে যুদ্ধাপরাধীদের সঙ্গে নিয়ে তাঁদের রক্ষার জন্য দেশবিরোধী ষড়যন্ত্র করবেন। তাঁর সঙ্গে আর কি সংলাপ হতে পারে?
রিজভী বলেন, আজ আদালতে জামিনের জন্য উপস্থিত হলে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বিএনপি জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য, ঢাকা মহানগর বিএনপির আহবায়ক, সাবেক মন্ত্রী মির্জা আব্বাসকে এবং গাজীপুর মহানগর কৃষক দলের সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর হোসেনকে। গত দুইদিন আগে হাজারীবাগে গ্রেপ্তার করা হয়েছে সাবেক এমপি মরহুম নাসির উদ্দিন আহমেদ পিন্টুর ভাই রেন্টুকে। গতকাল (মঙ্গলবার) গ্রেপ্তার করা হয়েছে বরিশাল জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহবায়ক কমিশনার শহীদকে। মিথ্যাচারের উপর বসে থাকা সরকার সাংবিধানিক বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানকেও নিজেদের মতো করে সাজিয়ে রেখে জনগণের সাথে তামাশা ও ইয়ার্কি করছে।
ঢাকা মহানগর বিএনপির আহ্ববায়ক ও দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাসের মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করে নিঃশর্ত মুক্তি দাবি জানান রিজভী। একইসঙ্গে তিনি গ্রেপ্তারকৃত নেতৃবৃন্দের মিথ্যা মামলাসহ নিঃশর্ত মুক্তি দাবি করেন।
গাজীপুর সদর থানা যুবদলের সদস্য মনির হোসেনকে ক্রসফায়ারে হত্যা করা হয়েছে, এমন অভিযোগ করে রিজভী বলেন, এই হত্যাকান্ডে বিএনপি তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছে এবং নিহত মনির হোসেনের আত্মার মাগফিরাত কামনা করছে।
রিজভী বলেন, গত ৩০ ডিসেম্বর পৌর নির্বাচনে যে সহিংস ভোট ডাকাতির চিত্র মানুষ দেখেছে; এই ভোটে নাকি ৭৪ শতাংশ ভোট পড়েছে। বর্তমান ভোটারবিহীন সরকার হচ্ছে ভোট চোর। আর তাদের সহায়তাকারী নির্বাচন কমিশন হচ্ছে পরিসংখ্যান চোর।