ঢাকা: কাদের মোল্লার ফাঁসির প্রতিবাদে জামায়াতের ডাকা দেশব্যাপী সকাল-সন্ধ্যা হরতালে সহিংসতায় নিহত হয়েছে ৮ জন। এর মধ্যে ছাত্রশিবিরের রয়েছে ৫ নেতাকর্মী, ছাত্রলীগ ও আওয়ামী লীগের দুই নেতা। অপর একজন পথচারী।
রোববার সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত হরতাল সমর্থকদের সঙ্গে আইন-শৃঙ্খলাবাহিনী ও হরতাল বিরোধীদের সংঘর্ষে নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষের মৃত্যু হয়েছে। লালমনিরহাটের পাটগ্রাম, রক্ষ্মীপুরের রায়পুর ও জয়পুরহাট সদরে এসব মৃত্যুর ঘটনা ঘটে।
লালমনিরহাটে নিহতরা হলেন- পাটগ্রাম উপজেলা ইসলামী ছাত্রশিবিরের সভাপতি ও পাটগ্রাম সরকারি কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র মনিরুল ইসলাম (২৫), শিবিরকর্মী আব্দুর রহিম (২২) ও সাজু (৩০)। এছাড়া পাটগ্রাম পৌরসভার ৬ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের ধর্মবিষয়ক সম্পাদক ও পাটগ্রাম উপজেলার শাখের ডাঙ্গা এলাকার বাহারউদ্দিন ছেলে মিন্টু (৩৫)।
জয়পুরহাটে নিহতরা হলেন- শিবিরকর্মী ফিরোজ ও শামিম এবং সাধারণ মানুষ ইনছান আলী। এছাড়া লক্ষ্মীপুরের রায়পুরে নিহত হয়েছেন জেলা ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও রায়পুর শহরের বয়াতি বাড়ির আবুল কালামের ছেলে মিরাজুল ইসলাম মিরাজ(৩০)। প্রতিনিধিদের পাঠানো প্রতিবেদন-
লালমনিরহাট: সকাল সোয়া ৭টার দিকে পাটগ্রামের কফির বাজার এলাকায় পুলিশের সঙ্গে জামায়াত-শিবির নেতাকর্মীদের সংঘর্ষে উপজেলা শিবির সভাপতি ও যুবলীগ নেতাসহ ৪ জন নিহত হয়। এসময় গুলিবিদ্ধ হয় দুইজন।
পাটগ্রাম থানার সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) আশরাফুল আলম জানান, সকালে লালমনিরহাট-বুড়িমারী আঞ্চলিক মহাসড়কে পেট্রোল বোমা নিক্ষেপ করে ট্রাকসহ বেশ কয়েকটি যানবাহনে আগুন দেয়ার চেষ্টা করে পিকেটাররা। এতে বাধা দিলে দুই পক্ষে সংঘর্ষ বাধে। গুলিবিদ্ধ হয়ে ঘটনাস্থলেই শিবিরকর্মী আব্দুর রহিম নিহত হন।
গুলিবিদ্ধ শিবির নেতা মনিরুলসহ ৪ জন পাটগ্রাম হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে মনিরুলের মৃত্যু হয়। পরে অন্যদের রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতলে ভর্তি করা হয়। সেখানে বেলা সাড়ে ১১টার দিকে গুলিবিদ্ধ সাজুর মৃত্যু হয়।
অপরদিকে, শিবির নেতাদের নিহত হওয়ার জের ধরে দুপুর সোয়া ১টার দিকে স্থানীয় সরেয়ার বাজার এলাকায় আওয়ামী লীগ নেতা মিন্টুকে পিটিয়ে হত্যা করেছে জামায়াত শিবিরকর্মীরা।
জয়পুরহাট: বিকেল থেকে জয়পুরহাটের হালট্রি এলাকায় জামায়াত-শিবির কর্মীদের সঙ্গে পুলিশের দেড় ঘন্টাব্যাপী সংঘর্ষে ছাত্রশিবিরের দুই কর্মীসহ তিনজন নিহত হয়েছে। গুলিবিদ্ধ হয়েছেন কমপক্ষে ২০ জন।
এ ঘটনায় বিকেল ৫টা থেকে আগামীকাল সোমবার সকাল ৬টা পর্যন্ত জয়পুরহাট সদর উপজেলায় ১৪৪ ধারা জারি করেছে প্রশাসন।
ঘটনার পর পুরো জেলা শহরে থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। বিক্ষুব্ধ শিবির নেতারা শহরের বাটার মোড় এলাকায় দুইটি মোটরসাইকেলে অগ্নিসংযোগ করে।
লক্ষ্মীপুর: বিকেলে রামগঞ্জ-পানপাড়া সড়কের পাশে লক্ষ্মীপুর জেলা ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মিরাজুল ইসলাম মিরাজকে (৩০) কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে। এসময় আহত হয়েছে যুবলীগ কর্মী মাসুদ। মাসুদ পৌরসভার ৬নং ওয়ার্ড যুবলীগের কর্মী ও শ্রমিক নেতা মো. ইউছুফের ছেলে।
লক্ষ্মীপুর জেলা ছাত্রলীগ সভাপতি শেখ জামাল রিপন দাবি করে বলেন, ছাত্রশিবির নেতাকর্মীরা তাকে কুপিয়ে হত্যা করেছে।
এ ঘটনার আগে দুপুর ১২টার দিকে রায়পুর-চাঁদপুর সড়কের পাশে চায়ের দোকান বসে নাস্তা করার সময় কুপিয়ে জখম করা হয়েছে আরেক যুবলীগ নেতা মো. বাহারকে। আশঙ্কাজনক অবস্থায় বাহারকে রায়পুর উপজেলা স্বাস্থ্য-কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়।
আর ডি