হাসিনার পদত্যাগ ও অর্থবহ নতুন নির্বাচন ছাড়া বর্তমান সঙ্কটের কোনো সমাধান হবে না বলে জানিয়েছেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। বার্তা সংস্থা এএফপিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি এ কথা বলেন। বুধবার টেলিফোনে এএফপিকে ওই সাক্ষাৎকার দেন। এক মাসেরও বেশি সময় নিজ কার্যালয়ে অবরুদ্ধ থাকা অবস্থায় এটাই কোনো পশ্চিমা মিডিয়াকে দেওয়া তার প্রথম সাক্ষাৎকার। এতে তিনি বলেন, দেশের বিবেক বোধ সম্পন্ন প্রতিটি মানুষ জানেন যে, বর্তমান রাজনৈতিক সংকট সমাধানের একটিই মাত্র পথ আছে। তা হলো সবার অংশগ্রহণমূলক, প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক ও অর্থপূর্ণ নির্বাচন।
বিএনপির চেয়ারপারসন আরো বলেন, যত দ্রুত নির্বাচন আয়োজন করা যাবে ততই মঙ্গলজনক হবে। গড়িমসি করা হলে সংকট আরও জটিল আকার ধারণ করতে পারে।
এএফপি তার রিপোর্টে বলেছে, বাংলাদেশের রাজনৈতিক দলগুলোর অন্যতম জনপ্রিয় দল বিএনপি। আর এ দলের নেতৃত্বে রয়েছেন বেগম খালেদা জিয়া। তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে নির্বাচনী কাঠামো নিয়ে ঐকমত্যে পৌঁছাতে চেয়েছিলেন। কিন্তু এ জন্য তিনি যে প্রস্তাব দিয়েছেন এর আগে, সে বিষয়ে কোনো সাড়া পাননি।
বেগম খালেদা জিয়া বলেন, আমরা বলেছি সুষ্ঠু নির্বাচন হতে হবে আলোচনার মাধ্যমে ও সব দলের ঐকমত্যের ভিত্তিতে। আমরা সেটাই চেয়েছি। সব দলের জন্য যাতে সমান ক্ষেত্র (লেভেল প্লেইং ফিল্ড) তৈরি হয় সে জন্য আমাদেরকে নির্বাচন কমিশন, প্রশাসন ও নির্বাচনী আইন নিয়ে কিছু সিদ্ধান্তে আসতে হবে।
বেগম জিয়া বলেন, “কিছুদিন আগে আমরা সাত দফা প্রস্তাব দিয়েছি। কিন্ত তাদের কাছ থেকে এ বিষয়ে কোনো সাড়া পাইনি।”
তিনি বলেন, দেশে চলমান সহিংসতার নেপথ্যে রয়েছে আওয়ামী লীগ। তারাই এ ঘটনা ঘটিয়ে আমাদের দোষারোপ করছে। আমরা খবরের কাগজে পড়েছি, কিভাবে আওয়ামী লীগ অফিসে পাওয়া গেছে পেট্রলবোমা।
এএফপি তার রিপোর্টে বলেছে, বেগম খালেদা জিয়ার তথ্য অনুযায়ী, গত এক মাসে বিরোধী দলের ১৮,০০০ নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
রিপোর্টে বলা হয়, গত বছর একতরফা নির্বাচনের পর প্রধানমন্ত্রী হাসিনার ওপর নতুন নির্বাচন দেওয়ার জন্য আন্তর্জাতিকভাবে আহ্বান জানানো হচ্ছিল। শেখ হাসিনার ওপর আন্তর্জাতিক চাপকে স্বাগত জানিয়েছেন বেগম খালেদা জিয়া। তিনি বলেন, বিশ্ব সম্প্রদায়ের উচিত সরকারের ওপর কঠোর ও অধিক কার্যকর চাপ দেয়া, যাতে তারা সমঝোতা ও সংলাপে আসে।