বেশ কয়েক দশক আগের কথা। ‘যদি কিছু মনে না করেন’ নামে বেশ জনপ্রিয় একটি ম্যাগাজিন অনুষ্ঠান চলত বাংলাদেশ টেলিভিশনে।
টিয়ার গ্যাসের ধোঁয়ায় চোখ লাল করে বাসায় ফিরে রাত্রে মানুষ দেখেছে কিভাবে আন্দোলনকারীদের নিয়ে হাসি ঠাট্টা করা হতো সেই অনুষ্ঠানে। যাদের বয়স কম, তাঁরা হয়তো দেখেননি। অথবা যাদের বয়স কম তাদের হয়ত মনে নেই। তবে যে সময়ের আমরা যারা কিছউটা হলেও বুঝতে শিখেছি, আমাদের স্মৃতি থেকে তো এই কথা মুছে যাবার কথা না।
‘যদি কিছু মনে না করেন’ অনুষ্ঠানের ফজলে লোহানির পাশের সেই মেয়েটার নাম রুবানা, আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী আনিসুল হকের বর্তমান (দ্বিতীয় স্ত্রী-মতান্তরে তৃতিয়) স্ত্রী রুবানা হক।
এরশাদের পতনের পর এই রুবানা ছিলেন এরশাদের দালাল হিসেবে চিহ্নিত বেশ কয়েকজন অতি পরিচিত মউকের মধ্যে একজন এবং এরকম চিহ্নিত দালালদের মধ্যে সম্ভবত তরুনতম।
আর কি বিচিত্র এই দেশ, সেই রুবানা হক আজকে এই মুহূর্তে একাত্তর টেলিভিশনে আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থীর প্রতিনিধি হিসেবে এসে নারী নির্যাতন সংক্রান্ত টক শোতে এসে বেশ আলোচনা করছেন। মেরে দেওয়া কম্পানি মোহাম্মাদি গ্রুপের কর্ণধার হিসাবে টিভি’র আলোচনা অনুষ্ঠানে সবক দিচ্ছেন।
আবার আশ্চর্যের বিষয় পতিত স্বৈরাচার এরশাদের অতি ঘনিষ্ট এই মহিলাই এখন আনিসুল হকের ইলেকশন ম্যানিফেস্টো তুলে ধরছেন। তাঁর সাথে আছেন ক্ষমতাসীন দলের ছাত্রসংগঠনের সভাপতিও। আর তাদের পাশে সাথে কপাল কুঁচকানো বিরক্ত মুখ নিয়ে সুলতানা কামালও বসে আছেন।
যারা পরিবর্তনের জন্য লড়ছেন, মনে রাখবেন বদলাতে হবে অনেক কিছু, দখল করতে হবে অনেক কিছু, ভাঙতে হবে অনেক কিছু, ছুড়ে ফেলতে হবে অনেক কিছু। চূড়ান্ত লড়াইয়ে হয়ত আজকের গতানুগতিক ধারার সব তথাকথিত রাজনৈতিক দলই আমাদের বিপক্ষের ক্যাম্পেই থাকবে।
লেখক: তপ্ত সীসা
(ব্লগ থেকে সংগৃহিত)
সম্পাদিত