আইসিটি প্রতিমন্ত্রী পলক, আপনি এটা কী করলেন?

0

মন্তব্য প্রতিবেদন[ads1]

Polokআহমেদ আরিফ: আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনায়েদ আহমেদ পলক ৪ই জুলাই ২০১৬  বাংলাদেশ সময় রাত ১০টা ২১ মিনিটে একটি নিউজ সাইটের এক সংবাদের লিংক শেয়ার করেছেন। শেয়ারকৃত নিউজটির সংবাদের মুল বিষয় হচ্ছে সিম ক্লোনিং!

আমজনতাকে সতর্ক করতে যে নিউজটি মিঃ পলক শেয়ার করেছেন সে নিউজকে সংক্ষিপ্ত করলে দাঁড়ায়, যে কোন গ্রাহকের মোবাইলে জঙ্গীরা মিসকল দিলে গ্রাহক যদি কলব্যাক করেন তাহলে মাত্র ৩ সেকেন্ডের মধ্যে মোবাইল ডিভাইসে থাকা সব নাম্বার কপি করে নেবে জঙ্গীরা। শুধুই তাই নয়, গ্রাহকের মোবাইলের ডেবিট/ ক্রেডিট কার্ডের কোন তথ্য থাকলে তাও তিন সেকেন্ডে হাতিয়ে নেবে জঙ্গীরা!তাই +৩৭৫,+৩৮১,+৩৭০,+৫৬৩,+২৫৫ নাম্বারগুলো থেকে সাবধান! এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে চলছে তুমুল আতংক!সবাই আতংকিত হয়ে এ খবর শেয়ার করছেন, আর চারদিকে প্যানিক সৃষ্টি হচ্ছে! দেশের আইসিটি মন্ত্রণালয়ের কর্তা শেয়ার দিয়েছেন তা তো মিথ্যা হতে পারেনা! তাও আবার র‍্যাবের বরাত দিয়ে করা নিউজের লিংক![ads2]

বেশ কয়েকমাস ধরে বাংলাদেশে সিম ক্লোনিং এর নিউজ প্রায় বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশ হচ্ছে। কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে, এ ধরনের খবরের কোনো সত্যতা নেই। যে পদ্ধতিতে একজন গ্রাহকের কল মোবাইল নেটওয়ার্কের মাধ্যমে আদান প্রদান হয় সে পদ্ধতিতে নেটওয়ার্ক টু নেটওয়ার্ক কোন ডাটা ট্রান্সপার হয়না। এতে ৩ সেকেন্ড কেন, একজন গ্রাহক যদি টানা ৩ বছরও মোবাইলে কথা বলেন  তাহলে  কথা বলা অবস্থায় কারো সাধ্য নাই যে, সিম ক্লোন করে গ্রাহকের সব তথ্য হাতিয়ে নেবে অথবা ডুপ্লিকেট সিম বানিয়ে ফেলবে দূরে বসে।

আসল ঘটনা হচ্ছে, টাইমস অব ইন্ডিয়া ২০১২ সালে সিম ক্লোনিং নিয়ে একটি প্রতিবেদন ছাপে যা টেলিকম বিশেষজ্ঞদের তীব্র আপত্তির মুখে পরে প্রত্যাহার করে নেয়। এমনকি টাইমস অব ইন্ডিয়া নিউজটি প্রত্যাহার করে নিয়ে একটি সংশোধনীও ছাপে। আর সেই সংবাদটি কিছুদিন পর পর নতুন রুপে নানা রঙে পাঠকের সামনে উপস্থাপন করে বাংলাদেশের মিডিয়াগুলো। যেমন রিজার্ভ চুরির পর যখন চারদিকে হ্যাকার আতংক তখন একশ্রেনীর মিডিয়া হ্যাকাররা মিসকল দিয়ে সিম ক্লোন করে ফেলছে- টাইপের নিউজ পাবলিশ করা শুরু করে। গুলশান আ্যটাকের পর জঙ্গী ইস্যু তাজা, তাই এখন হ্যাকারের জায়গায় জঙ্গী বসিয়ে দিয়েছে একশ্রেণীর মিডিয়া। আর এই ভুল কাজটি খ্যাত-অখ্যাত অনেক মিডিয়াই করেছে।[ads2]

তাহলে +৩৭৫,+৩৮১,+৩৭০,+৫৬৩,+২৫৫ সহ যেসব নম্বর থেকে কল, মিসকল আসে সেসব কল কেন করা হয়? কারা করে? উত্তর হচ্ছে, একশ্রেনীর ইন্টারন্যাশনাল প্রতারক চক্র। এসব কল থেকে মিসকল আসলে  গ্রাহক যদি কল ব্যাক করে তাহলে গ্রাহকের মোবাইলের ব্যালেন্সের ইন্টারন্যাশনাল কলের যে স্বাভাবিক চার্জ তার কয়েকগুন বেশী কাটা হয়। অভিযোগ আছে যে, মোবাইল কোম্পানীগুলোর এক শ্রেনীর অসাধু কর্মকর্তাদের যোগ সাজশেই প্রতারক চক্র এই অপকর্মটি করে।

সিম কপি করার জন্য দরকার IMSI এবং Authentication Key । ফোন কলের মধ্যে Authentication Key থাকেনা। Key can only be discovered electronically using a SIM duplicator অর্থ্যৎ কেউ যদি কারো সিমটি ডুপ্লিকেট করতে চায় SIM duplicator ডিভাইসের মধ্যে আসল সিমটি থাকতে হবে। ২০০৩ এর আগের সিমগুলো কপি করা যেত সিম ডুপ্লিকেটর এর ভেতর আসল সিমটি ঢুকিয়ে। যেটা পরিচত ছিল সুপার সিম নামে। কিন্তু ২০০৩ পরবর্তী সিমগুলো সিম ডুপ্লিকেটরের মাধ্যমে কপি করতে গেলে উলটো আসল সিমটিই নষ্ট হয়ে যায়।[ads1]

আইন-শৃঙ্গলা বাহিনীর বিভিন্ন সংস্থার উর্ধতন কর্মকর্তারা প্রায়ই সিম ক্লোনিং নিয়ে বক্তব্য দিয়ে থাকেন। ন্যূনতম টেকনিক্যাল জ্ঞান না থাকা সত্ত্বেও অনেকে লেখালেখিও করেন। এ নিয়ে কিছুই বলার নেই। কারণ, যে পুলিশ-ডিবির সদস্যরা তথ্য উদ্ধারের জন্য মান্ধাতা আমলের প্রিন্টার জব্দ করে, তাদের টেকনিক্যাল নলেজ কতটুকু সহজেই অনুমেয়। কিন্তু দেশের আইসিটি মন্ত্রাণালয়ের কর্তা যখন ভুয়া নিউজ অফিসিয়াল ফেসবুকে শেয়ার করেন, তখন স্বভাবতই প্রশ্ন এসে যায় যে মিঃ পলকের কি আদৌ আইসিটি মন্ত্রাণালয়ের কর্তা হওয়ার যোগ্যতা আছে?

ahmedarif2011@gmail.com

সূত্রঃ শীর্ষনিউজ

Leave A Reply

Your email address will not be published.

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More