ঢাকা: ভোটারদের বিভিন্ন ভোগান্তির হাত থেকে রক্ষা ও জনগণের সুবিধার্থে এখন থেকে সব ভোটারের জাতীয় পরিচিতি নম্বর ও ভোটার নম্বরসহ বিস্তারিত তথ্য নির্বাচন কমিশনের ওয়েবসাইট থেকে জানা যাবে। ভোটাররা রেজিস্ট্রেশন করে প্রাপ্ত পাসওয়ার্ড দিয়ে নিজ নিজ তথ্য ওয়েবসাইটে দেখতে পারবেন। বর্তমানে প্রায় ৯ কোটি ভোটারের তথ্য নির্বাচন কমিশনের ডাটাবেজে রয়েছে।
নির্বাচন কমিশন সূত্র জানায়, জাতীয় পরিচিতি নম্বর ও ভোটার নম্বর ওয়েবসাইটে প্রকাশে মত দিয়ে কমিশনার আবদুল মোবারক একটি অনানুষ্ঠানিক নোট প্রধান নির্বাচন কমিশন বরাবর পাঠান। ওই নোটের ভিত্তিতে ভোটারের তথ্য ওয়েবসাইটে প্রকাশের নীতিগত সিদ্ধান্ত হয়। এর পরই নির্বাচন কমিশন এ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করেন।
ওই নোটে বলা, জাতীয় পরিচয়পত্র হারিয়ে ফেললে থানায় ডায়েরি করতে হয়। কিন্তু পরিচিতি নম্বর স্মরণ না থাকলে থানায় ডায়েরি নেয় না। ডায়েরি না থাকায় জাতীয় পরিচয়পত্র নিবন্ধন অনুবিভাগও (এনআইডি) আবেদন গ্রহণ করে না। নির্বাচনের সময় ভোটার নম্বর না জানা থাকলে সংশ্লিষ্ট সহকারী প্রিজাইডিং অফিসাররা ভোটার তালিকায় খুঁজতে অনীহা প্রকাশ করেন। এ কারণে জাতীয় পরিচয়পত্র হাতে থাকা সত্ত্বেও অনেক ভোটার ভোট দিতে ব্যর্থ হন।
এছাড়া ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খোলা, স্কুল কলেজে ভর্তির দরখাস্ত করা, ট্রেড লাইসেন্স ও অন্যান্য লাইসেন্সের জন্য ভোটার পরিচিতি নম্বর প্রয়োজন হয়। জনগণকে এসব ভোগান্তি থেকে বাঁচানোর জন্য সব তথ্য ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা যেতে পারে।
ভোটারদের তথ্য ওয়েব সাইটে প্রকাশের ব্যাপারে এনআইডি অনুবিভাগের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সুলতানুজ্জামান মো. সালেহউদ্দিন বাংলামেইলকে বলেন, ‘ভোটারদের সুবিধার্থে ভোটারের পরিচিতি, ভোটার নম্বর ও তথ্য ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হবে। তারা যেন তাদের দেয়া তথ্যগুলোর মধ্যে কোন তথ্য ভুল হয়েছে জানতে পারবে। পরে তারা ভুল সংশোধন করার জন্য আবেদন করতে পারবেন।
ভোটারদের ব্যক্তিগত তথ্য চুরি বা বিকৃত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এ সেবা পেতে হলে প্রত্যেক ব্যক্তিকে রেজিস্ট্রেশন করতে হবে। এরপর তার দেয়া তথ্য যাচাই-বাছাই করে তাদের একটি করে পাসওয়ার্ড দেয়া হবে। তারপর সেই ব্যক্তিকে একসেসের অনুমতি দেয়া হবে।’
উল্লেখ্য, ২০০৮ সালে নবম সংসদ নির্বাচনের আগে ছবিসহ ভোটার তালিকা প্রণয়ন প্রকল্পের কাজ শুরু হয়। সে সময় ভোটার ছিল ৮ কোটি ১০ লাখ ৫৮ হাজার ৬৯৮। ২০০৯ সালের হালনাগাদ হয় একবার। ২০১২ সালে হালনাগাদে ভোটার বাড়ে প্রায় ৭০ লাখ। বর্তমানে ৯ কোটির বেশি ভোটারের তথ্য ইসির ডাটাবেজে সংরক্ষিত রয়েছে।
যেভাবে ভেরিফাই করবেন:
প্রথমে আপনাকে নির্বাচন কমিশনের ওয়েবসাইটে http://www.ecs.gov.bd/Bangla/ প্রবেশ করতে হবে। এরপর ওয়েব পেজের ডানদিকের জাতীয় পরিচয় পত্র নিবন্ধন অনুবিভাগের ওয়েব লিংকে ক্লিক অথবা সরাসরি এ লিঙ্কে (www.nidw.gov.bd) (http://180.211.226.19/ecbweb/) যেতে হবে। তারপর বামপাশে তৃতীয় লাইনে ‘ভেরিফাই এনআইডি লিংকে ক্লিক করলে লগিং অপশন আসবে। এর পাশেই রেজিস্ট্রার বাটনে ক্লিক করলেই রেজিস্ট্রেশন ফর্ম আসবে। এবার ফর্মটা পূরণ করুন। ই-মেইল, মোবাইল নম্বর দিন, এনআইডি ঘরে আপনার জন্ম তারিখ দিয়ে হুবহু আইডি নম্বার লিখুন, এবার জন্ম তারিখ লিখুন, পাসওয়ার্ডের ঘরে পাসওয়ার্ড লিখুন।
সাবমিট বাটনে ক্লিক করার পরপরই আপনার মোবাইলে একটি মেসেজ কোড আসবে। এবার কোডটা বসিয়ে দিয়ে আপনার সব তথ্য জানতে পারবেন।