ঢাকা: গত দশক থেকে বিশজুড়েই সব মানুষের ইন্টারনেটের ওপর নির্ভরতা উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। ফলে জনপ্রিয়তা বৃদ্ধি পাচ্ছে অনলাইন ক্লাসিফাইড ওয়েবসাইটের। নিয়মিত বেচাকেনা হওয়ার জন্য বিশ্বজুড়েই এ খাতে অনেক আর্থিক সম্ভবনা রয়েছে।
২০১৩ সালে বৈশ্বিক বাজার গবেষণা প্রতিষ্ঠান মেট্রিক্স ল্যাব ওএলএক্স-এর জন্য বাংলাদেশের ৬টি বিভাগে ইন্টারনেট ব্যবহারকারী ১৮ থেকে ৬৫ বছর বয়সীদের নিয়ে একটি গবেষণা জরিপ পরিচালনা করে। জরিপের ফলে স্তম্ভিত করে দেয়ার মতো যে তথ্য বেরিয়ে এসেছে সেটা হচ্ছে পুরো দেশজুড়ে ইন্টারনেট ব্যবহারকারীদের বাসায় ব্যবহার করা শেষ অর্থাৎ যেসব পণ্য তারা বিক্রি করতে চায় তার সর্বমোট মূল্য দাঁড়িয়েছে ১ দশমিক ৯ বিলিয়ন মার্কিন ডলার (বাংলাদেশি মুদ্রায় ১শ’ ৪৭ বিলিয়ন)।
বাংলাদেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় অনলাইন ক্লাসিফাইড ওয়েবসাইট এখানেই ডট কমের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ২০১৪ সালের আগস্ট, সেপ্টেম্বর ও অক্টোবর মাসের তুলনায় ২০১৫ সালের একই সময়ে ক্লাসিফাইড ওয়েবসাইটে গ্রাহকদের বিজ্ঞাপন দেয়ার হার অনেক বেড়ে গেছে। অন্যান্যের মধ্যে, ঘরের সামগ্রী বিষয়ক পণ্যের বিজ্ঞাপন দেয়ার হার বেড়েছে ৩২৯%, কৃষি ও খাদ্যপণ্যের বিজ্ঞাপন দেয়ার হার বেড়েছে ১২১%, ফোন, কম্পিউটার ও ইলেকট্রিক পণ্যের বিজ্ঞাপনের হার বেড়েছে ৭৬% এবং গাড়ি, মোটরসাইকেল ও অন্যান্য যানবাহনের বিজ্ঞাপন দেয়ার হার বেড়ে গেছে ৪২%।
এখানেই ডট কমে গ্রাহকদের বিভিন্ন পণ্যের মধ্যে ফোন, কম্পিউটার ও ইলেকট্রনিক পণ্যের বিজ্ঞাপন আপলোড করার হার মোট পণ্যের মধ্যে ৫৯%। এখানেই ডট কমে বিজ্ঞাপন দেয়ার ক্ষেত্রে দেশের অন্যান্য সব অঞ্চলের চেয়ে ঢাকা এগিয়ে রয়েছে। ঢাকা থেকে মোট বিজ্ঞাপনের ৫৪% আপলোড করা হয়েছে, রাজশাহী থেকে আপলোড করা হয়েছে ১৩%, চট্টগ্রাম থেকে আপলোড করা হয়েছে ৯%, খুলনা থেকে আপলোড করা হয়েছে ৮%, সিলেট থেকে ৬%, রংপুর থেকে ৫% এবং বরিশাল থেকে ৪%। এসব পরিসংখ্যান থেকেই বুঝা হয় যে, ক্লাসিফাইড ওয়েবসাইটের জনপ্রিয়তা দিনদিন বেড়েই চলেছে।
ক্লাসিফাইড ওয়েবসাইট আমাদের জন্য অগণিত সুবিধা বয়ে এনেছে। আমাদের জীবনকে সহজ করে দিচ্ছে। এ খাত আমাদের জাতীয় অর্থনৈতিক প্রবাহ সচল রাখতেও বড় ধরনের অবদান রাখছে। ওয়েবসাইটগুলোর মাধ্যমে একজনের জন্য অপ্রয়োজনীয় পণ্য আরেকজনের প্রয়োজন মেটাচ্ছে। কোনো একটি পণ্য একজনের পছন্দ না হলে সে এটা বিক্রি করে দিতে পারছে যার ঐ পণ্যটার প্রয়োজন রয়েছে তার কাছে। এক্ষত্রে অপচয় ও অপব্যয় দুটোই কমে যাচ্ছে। ক্লাসিফাইড ওয়েবসাইটে পণ্যগুলো খুবই সাশ্রয়ী মূল্যে পাওয়া যায়। ক্লাসিফাইড ওয়েবসাইটে পণ্যের সহজলভ্যতা ও সাশ্রয়ী দামের কারণে গ্রাহকদের ঋণের ওপর নির্ভরতা কমে যাবে ও তাদের সঞ্চয় বাড়বে।
অন্যান্য উন্নত দেশের মতো বাংলাদেশেও নানা ধরনের পণ্য বেচাকেনায় অনলাইন ক্লাসিফাইড ওয়েবসাইটের জনপ্রিয়তা দিনদিন বেড়েই চলেছে। স্মার্টফোনের অ্যান্ড্রয়েড সংস্করণে এখানেই ডট কমের অ্যাপ্লিকেশন প্রায় ৫ লাখের কাছাকাছি বার ডাউনলোড করা হয়েছে। প্রতিদিন ২ লাখ বার ভিজিট করা হচ্ছে ওয়েবসাইটটি। বর্তমানে ওয়েবসাইটটিতে ৩ লাখের কাছাকাছি সক্রিয় অ্যাড রয়েছে। বাংলাদেশে ক্লাসিফাইড ওয়েবসাইট নিয়ে সচেতনতা বৃদ্ধিতে অনেক অভিনব ও কার্যকরী উদ্যোগ নিয়েছে এখানেই ডট কম। এসব উদ্যোগের মধ্যে রয়েছে টেলিসেবাদাতা শীর্ষস্থানীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর সাথে অংশীদারিত্বে কাজ করা এবং নতুন গ্রাহকদের কাছে পৌঁছাতে অন্যান্য শিল্পখাতে শীর্ষস্থানীয়দের নিয়ে বিভিন্ন উপলক্ষে বিশেষ প্রচারাভিযান চালানো।
আমাদের দেশে অনলাইন ক্লাসিফাইড ওয়েবসাইটের জনপ্রিয়তাই প্রমাণ করে প্রযুক্তির এ যুগে ডিজিটাল সময়ে প্রবেশ করতে শুরু করেছে আমাদের দেশ। স্মার্টফোন ও কম্পিউটারের ব্যবহার বৃদ্ধি দেশের প্রতিটি কোণায় ইন্টারনেট পৌঁছে দিচ্ছে। এটা নিকট ভবিষ্যতে আমাদের প্রযুক্তি ও ডিজিটাল সময়ের সম্ভাবনা উপলব্ধিতে সাহায্য করবে।