কয়েকদিন আগে এক তরুণের ফেসবুক ইনবক্সে একটি মেসেজ আসে। রুচি সাঙ্গভি নামের একজন তাকে মেসেজ করে জানিয়েছেন, তিনি ভাগ্যবানদের একজন যিনি লটারির মাধ্যমে ২ লাখ ৫০ হাজার মার্কিন ডলার জিতেছেন। তাকে কয়েকটি ইমেইল এড্রেস, ফোন নম্বর, ফেক্স নম্বর পাঠিয়ে সেই ঠিকানায় যোগাযোগ করতে বলা হয়। এমন বার্তা পেয়ে আনন্দে উৎফুল্ল হয়ে সেই তরুণ বিভিন্ন কাগজপত্র তৈরি করে যোগাযোগের চেষ্টা করেন। তার ধারনা, তিনি আড়াই লাখ ডলার পাবেন।
গত কয়েক দিনে এমন বার্তা আসে আরো অনেকেরই ফেসবুক মেসেজে। সবাইকে একইভাবে জানানো হয়, তিনি এ বছরের ২০ জন ভাগ্যবানের একজন।
৮ মার্চ রাত ২টার দিকে একই মেসেজ পান এক সংবাদকর্মী। কয়েকজনের সাথে আলাপ করেই জানতে পারেন, একই সময়ে তাদের ফেসবুকেও ওই মেসেজ এসেছে। বার্তাটি প্রেরণকারী হিসেবে রয়েছে সেই রুচি সাঙ্গভির নাম।
এ ধরনের ঘটনা এটাই প্রথম নয়। কিছু দিন আগেও বিভিন্ন বিদেশে মেয়েদের ছবি ব্যাবহারকারী ফেসবুক আইডি থেকে মেসেজ প্রেমের প্রস্তাব দিয়ে মেসেজ দেয়া হতো। এই ফাঁদে পা দিয়ে অনেকে বিড়ম্বনার শিকারও হয়েছেন।
ধনকুবেরের কন্যা পরিচয় দিয়েও মেসেজ দেয়া হতো। বলা হতো, তার কয়েক লাখ ডলার আটকে গেছে। এই জন্য টাকা ফেরত পেতে তাকে আইনী লড়াই করতে হবে। সেজন্য কিছু অর্থনৈতিক সার্পোট প্রয়োজন। যদি এই বিপদের সময়ে তাকে সাহায্য করা হয়, তাহলে উদ্ধারকৃত অর্থের অর্ধেকটা সাহায্যকারীকে দেয়া হবে। আর এই জাতীয় মেসেজে ফেসবুক ব্যবহারকারীদের কাছে প্রায়ই আসে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এগুলো আসলে ফেসবুকে স্পাম হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। স্পামের মাধ্যমে একই মেসেজ হাজার হাজার মানুষের কাছে পাঠানো হচ্ছে। যারা এই ফাঁদে পা দেয়, তারা নানা ভাবে প্রতারিত হয়। এতে ফেসুবক আইডি হ্যাকড থেকে শুরু করে নানা ধরনের বিড়ম্বনার শিকার হতে হয়। তাদের দেয়া নম্বরে ফোন করতে গেলে ফোন স্ক্যামিংয়ের কবলেও পড়তে হতে পারে। কয়েক সেকেন্ডেই ফোনের সব টাকা হাতিয়ে নিতে পারে চক্রগুলো। আবার তাদের সাথে যোগাযোগ করা হলে ‘সিকিউরিটি মানি’ চায়। আর সেই টাকা দিলে যে ফেরত আসবে না তা বলাই বাহুল্য।
একটি গবেষণায় দেখা গেছে , এই ধরনের স্পাম সম্প্রতি ব্যাপক মাত্রায় বেড়েছে। সামাজিক মিডিয়ায় প্রতি ২০০ পোস্টের একটি স্পাম এবং সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাপের প্রায় পাঁচ শতাংশই স্পাম। সামাজিক মিডিয়াগুলো এখন স্পামারদের বিরাট এক ব্যবসার জায়গায় পরিণত হয়েছে। শুধু ফেসবুকেই স্পাম থেকেই প্রতিবছর ২০ কোটি ডলার আয় করছে এরা।