দৌলতপুর (কুষ্টিয়া): বকেয়া বিল পরিশোধ না করায় কুষ্টিয়ার দৌলতপুরে বেসরকারি মোবাইল ফোন অপারেটর সিটিসেলের টাওয়ারে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে। ফলে গত দুই সপ্তাহ ধরে এ উপজেলায় সিটিসেলের নেটওয়ার্ক সম্পূর্ণ বন্ধ রয়েছে। নেটওয়ার্ক বন্ধ থাকায় উপজেলার সিটিসেল গ্রাহকদের ভোগান্তি চরমে পৌঁছেছে।
অন্যসব মোবাইল ফোন কোম্পানিগুলোর নেটওয়ার্ক টাওয়ারে নিজস্ব বিদ্যুৎ ব্যবস্থা থাকলেও দৌলতপুর উপজেলায় সিটিসেলের নিজস্ব বিদ্যুৎ ব্যবস্থা নেই। তারা পল্লীবিদ্যুতের ওপর নির্ভরশীল। কিন্তু চলতি বছরের ৪ মাসে (মার্চ, এপ্রিল, মে ও জুন) এই মোবাইল ফোন কোম্পানির ৩৫ হাজার ৭৮০ টাকা বিদ্যুৎ বিল বকেয়া হয়ে পড়ে। জুন ক্লোজিংয়ের কারণে বকেয়া বিদ্যুৎ বিল পরিশোধের জন্য সিটিসেল কর্তৃপক্ষকে পল্লীবিদ্যুৎ অফিস থেকে কয়েক দফা তাগাদা দেয়া সত্ত্বেও তারা এ ব্যাপারে কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। অবশেষে গত ৩০ জুন দৌলতপুর হাসপাতালের সামনে অবস্থিত সিটিসেল টাওয়ারের বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেয় পল্লীবিদ্যুৎ কর্তৃপক্ষ। এরপর থেকে গত দুই সপ্তাহ ধরে এ উপজেলায় পুরোপুরি বন্ধ রয়েছে সিটিসেলের নেটওয়ার্ক ব্যবস্থা।
এদিকে, টানা দুই সপ্তাহ দিন নেটওয়ার্ক না থাকায় উপজেলার সিটিসেল গ্রাহকরা চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন। সবচেয়ে বেশি বেকায়দায় পড়েছেন কোম্পানিটির ইন্টারনেট মডেম (জুম আল্ট্রা) ব্যবহারকারীরা। জুম মডেম ব্যবহারকারীদের অনেকে এখন অন্য মডেম ব্যবহার করছেন।
বিল বকেয়া রাখার কারণে টাওয়ারের বিদ্যুৎ সংযোগ কেটে দেয়ার ঘটনাকে ‘সিটিসেলের দেউলিয়াত্ব’ হিসেবে আখ্যা দিয়ে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন এখানকার সিটিসেল গ্রাহকরা। উপজেলা সদরের ব্যবসায়ী আব্দুর রাজ্জাক জানালেন, তিনি সিটিসেলের মোবাইল ও মডেম দুটোই ব্যবহার করে আসছিলেন। কিন্তু এতদিন ধরে নেটওয়ার্ক না থাকায় তিনি দুটোই বর্জন করতে বাধ্য হয়েছেন।
আরেক সিটিসেল গ্রাহক এমএস রেজা বলেন, ‘জরুরি প্রয়োজনের জন্য নিয়মিত ইন্টারনেট ব্যবহার করতে হয়। এ জন্য আমি জুম মডেম ব্যবহার করি। কিন্তু জুমের নেটওয়ার্ক বন্ধ থাকায় প্রথমের দিকে অন্যের কাছ থেকে ধার করা মডেম ব্যবহার করছিলাম, কিন্তু এভাবে আর কতদিন, তাই অন্য মডেম কিনতে বাধ্য হয়েছি।’
নেটওয়ার্কের এ দৈন্যতার ব্যাপারে জানার জন্য অন্য অপারেটরের মোবাইল ফোন থেকে সিটিসেলের ০১১৯৯১২১১২১ নম্বরে যোগাযোগ করা হলে কাস্টমার ম্যানেজার জাহিদ আহমেদ বলেন, ‘কমার্শিয়াল কারণে এই সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে। এ জন্য আমরা আন্তরিকভাবে দুঃখিত। তবে কবে নাগাদ নেটওয়ার্ক পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে তা এই মুহূর্তে বলা যাচ্ছে না।’
পল্লী বিদ্যুতের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার (ডিজিএম) মিলন কুমার কুণ্ডু জানান, সিটিসেল কর্তৃপক্ষকে বারবার অবগত করার পরও তারা বকেয়া বিদ্যুৎ বিল পরিশোধের কোনো উদ্যোগ নেয়নি। তাই তাদের মোবাইল টাওয়ারের বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, দৌলতপুর উপজেলায় সিটিসেলের এমন বিড়ম্বনা এবারই প্রথম নয়, বছর দুয়েক আগেও একই কারণে এই মোবাইল অপারেটরের টাওয়ারে বিদ্যুৎ সংযোগ কেটে দেয়া হয়েছিল।