[ads1]তারা বিয়ে করে সংসারী হয়েছিলেন। তারপর বিদেশে গিয়েছিলেন। আশা ভালো আয় করে সংসার সচ্ছল করবেন। স্ত্রীর মুখে হাসি ফুটবে। কিন্তু সে আশা তাদের জন্য হিতে বিপরীত হয়ে ধরা দিয়েছে। সংসার তো ভেঙেছে। তদুপরি খুনের কারণে মামলা নিয়ে বিপর্যস্ত হচ্ছে কয়েকটি পরিবার।
চলতি মাসে খুলনা মহানগরী এলাকায় সংঘটিত এমন দু’টি ঘটনার পরিণতি দাঁড়িয়েছে এমনই।
নূরনবী ভূঁইয়ার (২৮) বাড়ি গোপালগঞ্জ জেলার কাঠিগ্রামে। ২০১৪ সালের ২০ মে তিনি বিয়ে করেন খুলনা মহানগরীর ৮৬, পশ্চিম টুটপাড়া মেইন রোডের এস এম মেহনাজ মুন্নার মেয়ে আয়েশা সিদ্দিকা টুকটুকিকে (২০)। বিয়ের দু-তিন মাস পর নূরনবী চাকরি করতে চলে যান সৌদি আরব। আর টুকটুকি থাকে তার পিত্রালয়ে। দুই বছর চাকরি করে ৭ জুন দেশে আসেন। ৯ জুন আসেন শ্বশুরবাড়িতে। ১১ জুন তিনি স্ত্রী টুকটুকির অন্য এক যুবকের সাথে পরকীয়া সম্পর্কের বিষয় নিশ্চিত হয়ে প্রচণ্ড ক্রোধে হাতের কাছে পাওয়া একটি ইট দিয়ে টুকটুকির মাথায় আঘাত করেন। এ ঘটনায় টুকটুকিকে খুলনা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হলে চিকিৎসক জানান টুকটুকি মারা গেছেন।
সে দিনই টুকটুকির দাদা এস এম মান্নান খুলনা সদর থানায় নূর নবী এবং একই গ্রামের বাসিন্দা বাবু (৩০) ও নগরীর ট্যাংক রোডের বাসিন্দা সুমন (২৭) নামের দুইজনকে অভিযুক্ত করে মামলা করেন। নূরনবীকে পুলিশের কাছে সোপর্দ করা হয়।
অন্য ঘটনা নগরীর আড়ংঘাটা থানা এলাকার সরদারডাঙ্গার। গ্রামের হাফিজুর রহমান (৩৬) বেশ কিছুদিন বিদেশ ছিলেন। তার প্রবাসে থাকার সময় সোনিয়া নামে গৃহবধূ হাফিজুর রহমান নামে অপর এক যুবকের সাথে পরকীয়ার সম্পর্ক গড়ে তোলে। ৯ জুন আদালতে হাফিজুর বলেন, এ ঘটনার প্রেক্ষাপটে তিনি ছয় মাস আগে স্ত্রীকে তালাক দেন। দুই ছেলে ও স্ত্রীকে নিয়ে সুখে সংসার করার স্বপ্ন শেষ হয়ে যায়। ঘটনা সেখানেই শেষ হলে ভালো হতো। কিন্তু পরিস্থিতি আরো মারাত্মক হয়েছে, গত ৬ জুন। সেদিন বিকেলে খেলতে গিয়ে নিখোঁজ হয় তার ছেলে হাসমি মিয়া (৯)। এরপর অনেক খুঁজেও হাসমিকে না পেয়ে ৮ জুন আড়ংঘাটা থানায় জিডি করা হয়। আর ৯ জুন সন্ধ্যায় সরদারডাঙ্গা বিলে কচুরিপানার ভেতর থেকে হাসমির বস্তাবন্দী লাশ উদ্ধার করা হয়।[ads1]
এ ঘটনায় হাসমির গর্ভধারিণী সোনিয়াকে পুলিশ প্রথম আটক করে। জিজ্ঞাসাবাদে সোনিয়া হাসমির হত্যার বিষয় জানায়। পরে ১১ জুন ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তি দেয়। সেদিন বিকেলে দুই যুবকের সাথে তার অসামাজিক কার্যকলাপ ছেলে হাসমি দেখে ফেলায় তাকে খুন করা হয়। হত্যাকাণ্ডের পর থেকে পলাতক নূরুন্নবী ও রসূল গত ১৫ জুন আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন আবেদন করে। আদালত তা নামঞ্জুর করে তাদের কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। তাদের সাত দিনের রিমান্ড আবেদন করে পুলিশ। আদালত পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। রিমান্ডে থাকাকালে ১৮ জুন মহানগর হাকিম মো: ফারুক ইকবালের কাছে ১৬৪ ধারায় তারা স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী দেন। তারা জবানবন্দীতে হাসমির মা সোনিয়া আক্তারের নির্দেশে শিশুটিকে হত্যা করেছে বলে জানায়। তারা জানায়, হাসমিকে হত্যা করার জন্য তার মা সোনিয়া আক্তার ব্যাগে থাকা ছুরি বের করে তাদের দেয়।[ads2]
Next Post