শবে বরাতে আতশবাজিকে কেন্দ্র করে মিরপুরের কালশীতে এলাকাবাসী, বিহারি ও পুলিশের মধ্যে ত্রিমুখী সংঘর্ষ, অগ্নিসংযোগ ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। এতে অগ্নিদগ্ধ হয়ে একই পরিবারের সাতজনসহ কমপক্ষে ১০ জন নিহত হয়েছেন বলে নিশ্চিত করেছে এলাকাবাসী। মৃতের সংখ্যা আরো বাড়তে পারে বলেও জানা গেছে। তবে পুলিশের পক্ষ থেকে নিহতের খবর এখনো নিশ্চিত করা হয়নি।
এ ঘটনায় পুলিশসহ বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন। গুলিবিদ্ধ কয়জনকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। পুরো এলাকাজুড়ে থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে।
শনিবার ভোরে কালশীর কুর্মিটোল বিহারি ক্যাম্পে এ ঘটনা ঘটে। নিহতরা সবাই আটকেপড়া পাকিস্তানি বলে জানা গেছে। নিহতদের মধ্যে নারী ও শিশু রয়েছে।
স্থানীয়রা জানান, শনিবার ফজরের নামাজের পর এলাকার কিছু বিহারি যুবক আতশবাজি ফোটাতে শুরু করে। এ সময় পুলিশ তাদের বাধা দিলে সংঘর্ষের সূত্রপাত হয়। পরে ওই যুবকরা আরো লোকজন জড়ো করে লাঠিসোটা সহকারে পুলিশের ওপর হামলা চালায়। এ সময় বিক্ষুব্ধ বিহারিরা রাস্তায় বাইসাইকেলে আগুন ধরিয়ে বিক্ষোভ করে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ তাদের ওপর রাবার বুলেট ও টিয়ারসেল নিক্ষেপ করে। এ সময় পুলিশের পক্ষ নিয়ে এলাকাবাসীও বিহারিদের ওপর হামলা করে। সংঘর্ষের সুযোগে কিছু অসাধু লোকজন সেখানকার দোকান-পাট ভাঙচুর করে লুট করে এবং বিহারিদের বস্তিতে আগুন ধরিয়ে দেয়। এতে এই হতাহতের ঘটনা ঘটে।
পল্লবী থানার ইন্সপেক্টর (তদন্ত) বিপ্লব কিশোর শীল ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেন। তিনি বলেন, ‘পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ গুলি চালাতে বাধ্য হয়। এখনো অপারেশনে রয়েছি। সংঘর্ষ চলছে।’ তবে হতাহতের ব্যাপারে কিছুই বলতে পারেননি তিনি।
কুর্মিটোলা বিহারি ক্যাম্পে আটকেপড়া পাকিস্তানিরা বসবাস করেন। নিহতরা সবাই তাদের লোক বলে জানা গেছে। মৃতদেহগুলো এখনো ক্যাম্পের ভেতরে রয়েছে। এলাকাবাসী বিহারিরা বিক্ষোভ করছে এবং পুলিশকে ওই এলাকায় ঢুকতে দিচ্ছে না। বিহারীদের নেতা আব্দুল জব্বার খান মোহাম্মদপুর থেকে আসার পর পুলিশকে ঢুকতে দেয়া হবে বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা। তবে সংবাদকর্মীরা ভেতরে ঢুকে নিহতের বিষয়টি নিশ্চিত হয়েছেন।