সিটি করপোরেশন নির্বাচন, সাধারণ আসনে সাহসী ২০ নারী

0

EC1ঢাকা: নারী ক্ষমতায়নের লক্ষ্যে জাতীয় ও স্থানীয় সরকার নির্বাচনগুলোতে সংরক্ষিত আসনের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। তবু বসে নেই কর্মোদ্দমী নারীরা। ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন নির্বাচনে সাধারণ কাউন্সিলর পদে ৬৫১ জন পুরুষ প্রার্থীর পাশাপাশি অংশ নিয়েছেন সাহসী ২০ নারী। নানা প্রতিবন্ধকতার মাঝে পুরুষ প্রার্থীদের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় এসছেন। নারী প্রার্থীরা বলছেন, সংরক্ষিত আসনের ব্যবস্থা থাকলেও নারীর সাহসীকতার জানান দিতেই পরুষদের সঙ্গে তাদের এই প্রতিযোগিতা।

উত্তর সিটি করপোরেশনের ৩৬টি সাধারণ ওয়ার্ডে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ২৮১ জন প্রার্থী। এর মধ্যে ১০টি ওয়ার্ডে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ১২ জন নারী। দক্ষিণে ৮টি ওয়ার্ডে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ৩৭০ জন প্রার্থী। এর মধ্যে ৮টি ওয়ার্ডে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ৮ জন নারী। এরা হচ্ছেন উত্তরের ৭ নং ওয়ার্ডে ঝুড়ি প্রতীক নিয়ে ৬ জন প্রার্থীর সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন মিসেস স্বপ্না আহমেদ। ৮ নং ওয়ার্ডে করাত প্রতীক নিয়ে ৩ জন পুরুষের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ফেরদৌসী আহমেদ। ১২ নং ওয়ার্ডে ৭ জন প্রার্থীর সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন রুনু আক্তার (ট্রাক) ও শিরিন রুখসানা রেডিও। ১৬ নং ওয়ার্ডে মাহমুদা বেগম (ঝুড়ি)। তার সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় রয়েছেন ১০ পরুষ প্রার্থী।

১৮ নং ওয়ার্ডে এয়ারকন্ডিশনার প্রতীক নিয়ে মাঠে রয়েছেন বিলকিস আলম ও টিফিন ক্যারিয়ার নিয়ে রাবেয়া আলম। তার সঙ্গে লাড়ছেন ৮ জন পুরুষ কাউন্সির প্রর্থী। ২৩ নং ওয়ার্ডে ৬ পরুষ প্রার্থীর সঙ্গে ঘুড়ি প্রতিক নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন মোছা. নীলুফা ইয়াসমীন নীলু। ২৬ নং ওয়ার্ডেও ৬ প্রার্থীর সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন জোহরা রহমান। তার মার্কা লাটিম।

২৮ নং ওয়ার্ডে ঝুড়ি প্রতিক নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন খোন্দকার রোমানা হাসান। তার প্রতিদ্বন্দ্বিপ্রার্থী ১১ জন পুরুষ। ৩৫ নং ওয়ার্ডে মিষ্টি কুমড়ার দাওয়াত দিচ্ছেন শরমিলা ইমাম। তার প্রতিদ্বন্দ্বিপ্রার্থী ১০জন পুরুষ প্রার্থীএবং ৩৬ নং ওয়ার্ডে ৬ প্রার্থীর সঙ্গে ঝুড়ি নিয়ে একই লড়াই করছেন সাজেদা আলী হেলেন।

৮ নম্বর ওয়ার্ডে সাধারণ কাউন্সিলর প্রার্থী ফেরদৌসি আহমেদ মিষ্টি বাংলামেইলকে বলেন, ‘আমাদের দেশের রাজনৈতিক দলগুলো নারী পুরুষের সমান অধিকারের কথা বললেও সরাসরি নির্বাচনে যাওয়ার ব্যাপারে উৎসাহ দিচ্ছে না। অন্যদিকে বেশিরভাগ নারী তাদরেকে পুরুষের চেয়ে ছোট মনে করে। তাই তারা নির্বাচনে আসতে চায় না। এটা ঠিক না।’

তিনি বলেন, ‘আমি মনে করি সরকার আমাদের জন্য যে সংরক্ষিত আসন রেখেছে এটা দিয়ে আমাদেরকে ছোট করেছে। আমি এর জবাব দিতেই সাধারণ আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছি। আশা করি জয়ী হবো।’

উত্তর সিটি করপোরেশনের ৫৭টি আসনের বিপরীতে ৮টি আসনে প্রার্থী হয়েছেন ৮ নারী। এরা হচ্ছেন- ২ নং ওয়ার্ডে হাবিবা চৌধুরী বিথি। তার প্রতীক টিফিনক্যারিয়ার। তিনি ৬ পুরুষ প্রার্থীর সঙ্গে লড়াই করছেন।

৮ নং ওয়ার্ডে সাবিনা জাহান লড়ছেন ঘুড়ি প্রতিক নিয়ে। তার সঙ্গে মাঠে রয়েছেন ৯ জন পুরুষ প্রার্থী। ১৩ নং ওয়ার্ডে রয়েছেন আনজুমান আরা বেগম। তার প্রতীক কাঁটা চামচ। তিনি লড়ছেন ৮জন পুরুষের সঙ্গে। ২৭  নং ওয়ার্ডে শাহিদা মোর্শেদ। তার প্রতীক লাটিম। তিনি লড়ছেন ১০জন হ্যাভী ওয়েট পুরুষ প্রার্থীর সঙ্গে।

২৮ নং ওয়ার্ডে ঘুড়ি নিয়ে ১০ পুরুষ প্রার্থীর সঙ্গে লড়ছেন উম্মে খাদিজা পারভেজ। ৩৮ নং ওয়ার্ডে মেহেরুন নেছা। তিনি রেডিও প্রতীক নিয়ে লড়ছেন ৬ প্রার্থীর সঙ্গে। ৫৩ নং ওয়ার্ডে করাত প্রতীক নিয়ে লড়ছেন কোহিনুর বেগম। তার প্রতিদ্বন্দ্বি প্রার্থী ১০ পুরুষ ও ৫৪ নং ওয়ার্ডে ঝুড়ি প্রতীক নিয়ে ৭ জন পুরুষের সঙ্গে লড়ছেন আলপনা শিকদার।

২নং ওয়ার্ডের প্রার্থী হাবিবা চৌধুরী বিথি বলেন, ‘আমি মাঠে শতফূর্ত সাড়া পাচ্ছি। জনগণ আমাকে পেয়ে খুশি। বিশেষ করে নারীদের তো কথাই নেই। তারা সবাই বলছেন আপনাদের মতো সাহসী নারীরা এগিয়ে আসা উচিৎ।

তবে  ১৩ নং ওয়ার্ডের আনজুমান আরা বেগম এক সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে অভিযোগ করে বলেন, তাকে প্রতিপক্ষের প্রার্থীদের লোকজন প্রচারণা চালাতে বাধা ও পোস্টার-ব্যানার ছিঁড়ে ফেলার অভিযোগ করেছেন। একই সঙ্গে তার সমর্থকদেরকেও পুলিশি হয়রানি করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন তিনি। তিনি বলেন, সরকার নারীর ক্ষমতায়নের কথা বলছে। অথচ নারী প্রার্থীদের প্রচারণা বাধা দেয়া হলেও এতে কোনো ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে না।

Leave A Reply

Your email address will not be published.

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More