[ads1]সাগর বিধৌত নদী বেষ্টিত দক্ষিনাঞ্চলে রেলপথ নির্মাণ করবে সরকার । নির্মাণাধীন পদ্মাসেতুর কল্যাণে সরাসরি রেলপথ যাবে ঢাকা থেকে ফরিদপুরের ভাঙ্গা হয়ে বরিশাল দিয়ে পটুয়াখালীর পায়রা সমুদ্রবন্দর পর্যন্ত । পর্যায়ক্রমে এ কাজ শেষ করা হবে । রেললাইন নির্মাণের জন্য সম্ভাব্যতা সমীক্ষা প্রকল্পের প্রিলিমিনারি ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্ট প্রপোজাল “পিডিপিপি” প্রস্তুত করা হয়েছে। পিডিপিপি অনুযায়ী প্রকল্পের সম্ভাব্য ব্যয় নির্ধারণ করা হয়েছে ৯ হাজার ৯৯০ কোটি টাকা। এর মধ্যে সরকারের নিজ অর্থায়ন ১ হাজার ৯৯৮ কোটি টাকা এবং প্রকল্প সাহায্য ধরা হয়েছে ৭ হাজার ৯৯২ কোটি টাকা। চীন সরকারের নমনীয় ঋণ অথবা যেকোনো উন্নয়ন সহযোগী দেশের অর্থায়নে প্রকল্পটি বাস্তবায়নের প্রস্তাব করা হয়েছে। প্রকল্পের বাস্তবায়নকাল ২০১৭ সালের জুলাই থেকে ২০২১ সালের জুন পর্যন্ত। এই সময় সীমার মধ্যেই এ কাজ শেষ করতে চায় সরকার ।
রেলপথ মন্ত্রণালয় সম্প্রতি কনস্ট্রাকশন অব ব্রডগেজ রেলওয়ে লাইন ফরম ভাঙ্গা টু বরিশাল ফিজিবিলিটি স্ট্যাডি ফর বরিশাল টু পায়রা সি-পোর্ট সেকশন শীর্ষক প্রকল্পের পিডিপিপি পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছে । রেলপথ নির্মিত হলে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় যোগাযোগ ব্যবস্থা আরও আধুনিক হবে। মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, নতুন রেললাইন নির্মাণ করা হলে পদ্মাসেতুর মাধ্যমে ঢাকা থেকে বরিশালের দূরত্ব কমে দাঁড়াবে ১৮৫ কিলোমিটার এবং ভ্রমণে সময় লাগবে মাত্র চার ঘণ্টা। তাই দিনের কাজ দিনেই শেষ করে গন্তব্যে ফিরতে পারবে সবাই অতি দ্রুত ।[ads2]
নদী বেষ্টিত অঞ্চল হওয়ায় এ রেলপথ নির্মাণে ব্যয় হবে অনেক । প্রকল্পের সম্ভাব্য ব্যয়ের একটি খসড়া তৈরি করেছে রেলপথ মন্ত্রণালয়। এতে দেখা গেছে, ভূমি অধিগ্রহণ বাবদ ২ হাজার ৫০০ কোটি টাকা, রেলপথ ও উপকূলীয় বাঁধ নির্মাণ বাবদ ৬ হাজার ৫০০ কোটি টাকা, সিঙ্গেল লাইন এবং যোগাযোগ বাবদ চারশ’ কোটি টাকা সম্ভাব্য ব্যয় ধরা হয়েছে। এছাড়া জনবল নিয়োগ ব্যয় বাবদ ২০ কোটি টাকা, পরামর্শক বাবদ ২০০ কোটি টাকা, স্টেশন নির্মাণ বাবদ ৩০০ কোটি টাকা, পরিববহন ও যানবাহন কেনা বাবদ ২০ কোটি টাকা ব্যয় ধরা হয়েছে। প্রকল্প বাস্তবায়নে পরিবেশের সুরক্ষা বাবদ আরও ৫০ কোটি টাকা সম্ভাব্য ব্যয় ধরা হয়েছে। এ ব্যয় আরও বাড়তে পারে ।
২০১৪ সালের ২৩ অক্টোবর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রেলপথ মন্ত্রণালয় পরিদর্শনকালে ভাঙ্গা থেকে বরিশাল পর্যন্ত রেললাইন নির্মাণ করে পায়রা সমুদ্রবন্দরের সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপনরে নির্দেশনা দেন। এর প্রেক্ষিতে পিডিপিপিটির নীতিগত অনুমোদন দেয় রেলপথ মন্ত্রণালয়।[ads1]
প্রকল্প গ্রহণ প্রসঙ্গে রেলপথ মন্ত্রণালয় পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ে নানা যুক্তি তুলে ধরেছে। এতে উল্লেখ করা হয়েছে, বরিশাল খাদ্যভাণ্ডার হিসেবে বাংলাদেশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। পায়রা গভীর সমুদ্রবন্দরের কাযর্ক্রম পুরোপুরি শুরু হলে বরিশাল ও এর পার্শ্ববর্তী অঞ্চলের অর্থনৈতিক গুরুত্ব আরও বৃদ্ধি পাবে। প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে ঢাকার সঙ্গে এ অঞ্চলের মানুষের যোগাযোগ ব্যবস্থা আরও শক্তিশালী হবে। এতে করে দেশে জিডিপি প্রবৃদ্ধির হার বৃদ্ধি পাবে। এটি পদ্মাসেতু রেলওয়ে লিংকের সঙ্গে যুক্ত হয়ে রেলপথের মাধ্যমে বরিশাল থেকে ঢাকায় যাত্রী ও পণ্য পরিবহনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। রেলপথ মন্ত্রণালয়ের সচিব মোঃ ফিরোজ সালাহ্ উদ্দিন গণমাধ্যমকে বলেন, পায়রা সমুদ্রবন্দর দেশের দক্ষিণ উপকূলের সাগরপাড়ের জনপদের অর্থনৈতিক জীবনকে পাল্টে দেবে। দেশের গুরুত্বপূর্ণ বন্দরের সঙ্গে রেল যোগাযোগ জরুরি। এ সুযোগে বরিশালের ওপর দিয়ে রেলপথ নির্মাণ করা হবে। এতে করে ঢাকা থেকে মানুষ সরাসরি রেলপথের মাধ্যমে যাতায়াত করতে পারবেন।[ads2]
এ রেলপথ নির্মিত হলে পুরো দক্ষিনাঞ্চলের স্থল পথের চিত্র পাল্টে যাবে । আশা করা হচ্ছে যাত্রীদের ভোগান্তি পুরাপুরিই কমবে। অবহেলিত এ অঞ্চলের মানুষ রেলপথ পেলেই যোগাযোগের সব মাধ্যমই পাওয়া হবে ।