তারিকুল ইসলাম, হাবিপ্রবি : রাখশান্দা রুখাম। ক্যাম্পাসে বন্ধুরা ডাকেন রাখশু বলে, কেউ কেউ আবার দুষ্টুমি করে ডাকেন ইরানী। জন্ম রংপুর শহরে। বাবা-মায়ের সঙ্গে বেড়ে ওঠা সেখানেই। বাবা রংপুর ক্যান্টনম্যান্ট পাবলিক স্কুল এন্ড কলেজের প্রধান শিক্ষক। বলছি গুগলকন্যা হাজী দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী রাখশান্দা রুখামের কথা। নারী প্রযুক্তিবিদদের নিয়ে গুগলের তৈরি আর্ন্তজাতিক কমিউনিটি উইম্যান টেকমেকারস এর বাংলাদেশ চ্যাপ্টারের নারী প্রতিনিধি তিনি। এমন স্টারকে নিয়েই আমাদের বিশেষ প্রতিবেদন।
প্রথমদিকে রাখশান্দার স্বপ্নগুলো ছিল এলোমেলো। ছোট বেলায় ইচ্ছা ছিল সামরিক বাহিনীতে চাকরি করার। কিন্তু বড় হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে স্বপ্নগুলো রং বদলাতে শুরু করে। নতুনভাবে ইচ্ছা হলো ইঞ্জিনিয়ার হওয়ার। তাই নিজেকে সেভাবে প্রস্তুত করতে থাকলেন তিনি। সবার থেকে একটু ব্যতিক্রম হওয়ার ইচ্ছাতেই মূলত তার এই ইঞ্জিনিয়ার হওয়ার স্বপ্ন।
ছোটবেলা থেকে তিনি খুব চঞ্চল স্বভাবের ছিলেন। অভিনয় করতে ভালবাসতেন, নতুন কুঁড়ি থেকে অভিনয়ে পুরস্কারও পেয়েছেন। মাঝে মধ্যে গানও গাইতেন, তবে শিল্পী হওয়ার জন্য নয়, ভালবাসতেন তাই…
বাবা ইংরেজির শিক্ষক ছিলেন, তাই বাবার সঙ্গে ইংরেজিতে কথা বলা, কবিতা আবৃতি করা এগুলো ছোট থেকেই করে আসছিলেন। ছোটবেলা থেকেই ব্যাটমিন্টন খেলতে খুব ভালবাসেন, যা তিনি বাবার কাছ থেকে শিখেছিলেন।
এতগুলো স্বপ্ন রং বদল করে শেষ পর্যন্ত ইঞ্জিনিয়ার হওয়ার স্বপ্ন বুনে নিলেন রাখশান্দা। ২০১১ সালে ভর্তি হলেন উত্তরবঙ্গের সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠ হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের টেলিকমিউনিকেশন ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগে। শুরু হলো স্বপ্নডানা মেলে ধরার পালা। ক্যাম্পাসে পড়াশোনা, বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা ঘোরাঘুরি এবং নিজেকে বিজ্ঞানের বিভিন্ন সেকশনে নিয়োজিত রেখে কাজ করে যাচ্ছেন তিনি।
বন্ধুদের অনেক ভালোবাসেন রাখশান্দা। বন্ধুদের কাছেও তিনি অসম্ভব জনপ্রিয়।
বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির পরেই ফটোগ্রাফির শখ তার মাথায় চাপে। সে কারণে ডিএসএলআর কিনে ফটোগ্রাফি শুরু করেন। এভাবেই চলছে তার। জীবনের প্রতিটি মুহুর্ত উপভোগ করতে চান রাখশান্দা।
রাখশান্দা নিজেকে কোন গন্ডির মধ্যে আবদ্ধ রাখতে চান না। সবসময় নতুন কিছু করতে চান। নতুন কিছু করার ইচ্ছা থেকেই তিনি নিজেকে বিভিন্ন গবেষণামূলক কাজে নিয়োজিত করেন। ক্যাম্পাসে বিভিন্ন ক্রিয়েটিভ বিষয়ে নিজেকে জড়ানো তার আর একটি বিশেষ গুণ। তিনি বিগত কয়েক বছর ধরে বিভিন্ন গবেষণা কাজে নিজেকে নিয়োজিত রেখেছেন। এবং গত কয়েক বছর ধরে তিনি গুগল ডেভলপারদের সঙ্গে কাজ করে আসছেন। সেই সূত্র ধরে তিনি নারী প্রযুক্তিবিদদের নিয়ে গুগলের তৈরি আর্ন্তজাতিক কমিউনিটি উইম্যান টেকমেকারস এর বাংলাদেশ চ্যাপ্টারের নারী প্রতিনিধি নির্বাচিত হয়েছেন।
রাখশান্দা ক্যাম্পাসলাইভকে বলেন, গত কয়েক বছর ধরে প্রযুক্তির সাথে কাজ করে আসছি। গুগলের ম্যাসেজটা পেয়ে আমি অনেক খুশি। সামনে এগিয়ে যাওয়ার স্বপ্ন দেখেন তিনি। তবে সেটা অবশ্যই বাংলাদেশকে নিয়েই।
একনজরে রাখশান্দা :
প্রিয় খেলা: ব্যাটমিন্টন
খেলোয়ার: আফ্রিদি, রোলানদিনহো
শখ: ঘুরেবেড়ানো
প্রিয় রং: আকাশি, সাদা
প্রিয় খাবার: মায়ের হাতের সকল রান্না
ভালো লাগা: নতুন গান শুনতে
প্রিয় পোশাক: থ্রি-পিচ, শাড়ি
শিল্পী: কেটি পেরি
অভিনেতা: উইল স্মিথ, হাগ জ্যাক ম্যান
ভালবাসেন: ছোট বনকে সবচেয়ে বেশি
অপছন্দ: কেউ এড়িয়ে চললে
অবসরে: আইপড গুতানো, গান শুনা
জীবনসঙ্গী হিসেবে পছন্দ: যে আমাকে বুঝবে আমার মতো করে
সূত্রঃ ক্যাম্পাসলাইভ২৪.কম