সোশাল মিডিয়া ফেসবুক থেকে নেয়া এই লেখাটি রোজাদারের জন্য, ফেসবুকে শেয়ার করেছেন মুজাহিদুল ইসলাম
হযরত আবু হুরায়রা (রা) হইতে বর্ণিত হইয়াছে, তিনি বলিয়াছেন, হযরত রাসূলে করীম (স) বলিয়াছেনঃ আমার উস্মতকে রমযান মাসে পাঁচটি বিশেষ বৈশিষ্ট্য দান করা হয়, যাহা তাহাদের পূর্বের কোন উস্মতকে দেওয়া হয় নাই। সে পাঁচটি বৈশিষ্ট্য হইলঃ রোদারের মুখের বিকৃত গন্ধ আল্লাহর নিকট মিশকের সুগন্ধি হইতেও উত্তম, যতক্ষণ না ইফতার করে ফেরেশতাগণ তাহাদের জন্য ক্ষমা চাহিতে থাকে, আল্লাহ তাআলা প্রত্যেক দিন তাঁহার জান্নাতকে সুসজ্জিত করিয়া রাখেন; অতঃপর (জান্নাতকে সম্বোধন করিয়া) বলিতে থাকেনঃ আমার নেক বান্দাদের বৈষায়িক শ্রম,দায়িত্ব ও কষ্ট-নির্যাতন শীঘ্রই দুর করা হইবে। তাহারা তোমার নিকট পরিণতি পাইবে। এই মাসে প্রধান দুষ্কৃতিকারী শয়তানদিগকে রশি দিয়া বাঁধিয়া রাখা হইবে। অতঃপর তাহরা মুক্ত হইবে না যেমন তাহারা মুক্ত থাকে রমযান ছাড়া অন্য সময়ে। আর নেক বান্দাদের জন্য শেষ রাত্রে মাগফিরাত দান করা হইবে। প্রশ্ন করা হইল, হে রাসূল্লাহ। ইহা কি কদর রাত্রির কথা? বলিলেনঃ না, কিন্তু আমলকারী যখন তার আমল সম্পূর্ণ করিবে, তখন তাহার প্রতিফল তাঁহাকে পুরাপুরি আদায় করিয়া দেওয়া হইবে।-মুসলাদে আহমদ,বায়হাকী,আল-মুনযেরী
ব্যাখ্যা হাদীসটি রোযাদারদের জন্য বিশেষ উৎসাহব্যঞ্জক এবং পরম সৌভাগ্য সুসংবাদদাতা। রাসূলে করীম (স)-এর উষ্মতকে রমযান মাসের রোযা রাখার ফলে পাঁচটি বিশেষ সৌভাগ্য দানের কথা বলা হইয়াছে। এই উষ্মত কাহারা?-যাহারা রাসূলে করীম (স)-এর দ্বীনের দাওয়াত সর্বান্তঃ করণে কবুল করিয়াছে ও সেই অনুযায়ী জীবন-যাপন করিতেছে এবং দ্বীনের সব আদেশ নিষেধ যথাযথভাবে পালন করিতেছে।
প্রথম সৌভাগ্য হইল, রোযাদারের মুখে বিকৃত গন্ধ আল্লাহর নিকট মিশক-এর গন্ধ হইতেও অধিক প্রিয়। রোযাদার সারাদিন কিছুই পানাহার করে নাই। এইজন্য মুখে এক প্রকার গন্ধ স্বাভাবিকভাবেই জন্মে; উহা আল্লাহর নিকট সাধারণ সুগন্ধি হউতেও অধিক প্রিয়। কেননা মুখের এই গন্ধ বিকৃতি ঘটিয়াছে আল্লাহর আদেশ পালন করিতে গিয়া রোযা পালনের ফলে সারাদিন কিছুই পানাহার না করার দরুন। আর এই কাজ যে আল্লাহর নিকট অধিক প্রিয় হইবে তাহাতে আর সন্দেহ কি।
দ্বিতীয় সৌভাগ্য হইল, তাহারা যতক্ষণ রোযাদার থাকিবে ইফতার করিবে না, ততক্ষণ পর্যন্ত ফেরেশতাগণ তাহাদের জন্য আল্লাহর নিকট মাঘফিরাত চাহিতে থাকিবে। রোযাদারের জন্য ফেরেশতাদের এই মাগফিরাত চাওয়া যে তাহাদের বড়ই সৌভাগ্যের ব্যাপার, তাহা বলাই বাহুল্য।
তৃতীয় সৌভাগ্যের বিষয় হইল, আল্লাহ্ তা’আলা প্রত্যেক দিন তাঁহার জান্নাতকে সুন্দরভাবে সাজাইয়া রাখিবেন, প্রত্যেক দিন উহাকে নতুন করিয়া সজ্জিত করিবেন এবং জান্নাতকে লক্ষ্য করিয়া বলিতে থাকিবেন, আমার নেক বান্দাদের সব বৈষায়িক কষ্ট-শ্রম ক্লেশ ও পীড়ন দুর হইয়া গেলে তাহারা এই জান্নাতে আসিয়া প্রবেশ করিবে। দুনিয়ার জীবন শেষ হওয়ার পর এই জান্নাতই হইবে তাহাদের শেষ পরিণতি, শেষ আশ্রয়স্থল। এখানে নেক বান্দা বলিয়া যে রোযাদার -রীতিমত রোযা পালনকারীমুসলমানদের-কথা বলা হইয়াছে,তাহাতে সন্দেহ নাই। বস্তুত দুনিয়ার সব মানুষকেই-আল্লাহর নেক বান্দাদেরকেও-সন্তান পালনও পরিবার বহনের জন্য প্রাণ্যন্তকর খাটা-খাটনি করিতে হয়। সেইজন্য অনেক কষ্ট ও ক্লেশ স্বীকার করিতে হয় এবং দুনিয়ার জীবনে নানা প্রতিকূল অবস্থায় অনেক অত্যাচার ও নিপীড়ন সহ্য করিতে হয়। কিন্তু ইহা অশেষ নয়। ইহার চুড়ান্ত অবসান হয় মৃত্যুর সঙ্গে সঙ্গে। আর মৃত্যু অবধারিত। এই মৃত্যু সংঘটিত হওয়ার পরই রোযাদার নেক-বান্দারা জান্নাতবাসী হইবে। দুনিয়ার শত শত কষ্ট ও দুঃখের মাঝেও তাহারা যে রোযা পালনের কষ্ট স্বীকার করিয়াছে, এই জান্নাত হইবে তাহাদের এই আমলের পরিণাম।
চতুর্থ এই যে, রোযাদার মাসে শয়তানের দলের প্রধান প্রধান দুষ্কৃতিকারীদিগকে বাধিঁয়া রাখা হয়- সব শয়তানকে নয়। তাহাদিগকে বাঁধিয়া রাখার ফলে আল্লাহর নাফরমানীর কাজ এই মাসে অন্যান্য মাসের তুলনায় অনেক কম হইয়া থাকে। ফলে সমগ্র পরিবেশ ঈমানদার লোকদের জন্য খুবই অনুকূল হইয়া পড়ে। নেক আমলের পথে প্রতিকূলতা অনেকখানি হ্রাস পাইয়া যায়।
পঞ্চম এই যে সারা রোযার মাসের শেষরাত্রে তাহাদের জন্য গুনাহ নাফী দেওয়া হয়। রোযার মাসে তাহারা যেন নেক কাজ করে, এই মাফী তাহারই প্রতিফল। কিন্তু ইহা কদর রাত্রিতে প্রাপ্তব্য ক্ষমা হইতে ভিন্নতর। এই মাফী কেবল তাহারাই পাইবে, যাহারা রমযান মাস রোযা রাখিবে ও প্রতিমুহুর্তে আল্লাহর নির্দিষ্ট সীমাসমূহ রক্ষা করিয়া চলিবে। কিন্তু যাহারা রোযা রাখিবে না, তাহারা এই মাফী পাইবে না। তাহারা পাইবে অপমান ও লাঞ্জনা-দুনিয়াও আখিরাত-উভয়ক্ষেত্রেই।
রোযার পরকালীন ফল
===========================================
হযরত আবু হুরায়রা (রা) হইবে বর্ণিত হইয়াছে, তিনি বলিয়াছেন, হযরত রাসূলে করীম (স) ঘোষণা করিয়াছেনঃ যে লোক রমযান মাসের রোযা রাখিবে ঈমান ও চেতনাসহকারে, তাহার পূর্ববর্তী ও পরবর্তী গুনাহ মাফ হইয়া যাইবে।
-বুখারী, মুসলিম, তিরমিযী, আবু দাউদ, নাসারী, ইবনে মাজাহ, মুসনাদে আহমদ
ব্যাখ্যা রমযানের রোযা ফরয রোযা। এই রোযা যথাযথভাবে রাখার জন্য এই হাদীসে বিশেষ উৎসাব্যঞ্জক সুসংবাদ দান করা হইয়াছে। এই পর্যায়ে দুইটি শব্দের উল্লেখ হইয়াছে। একটি =======আর দ্বিতীয়টি ======= এখানে প্রথম শব্দটির অর্থ, নিয়্যত এবং দ্বিতীয় শব্দটির অর্থ দৃঢ়সংকল্প। অর্থাৎ রোযা রাখিতে হইতে ঈমান সহাকারে, এই বিশ্বাস সহকারে যে, রোযা আল্লাহ তা আলাই ফরয করিয়াছেন এবং মসুলমান হিসাবে ইহা আমার অবশ্য পালনীয় কর্তব্যের অন্তর্ভুক্ত। দ্বিতীয়ত এই রোযা রাখিতে হইবে একান্তভাবে আল্লাহর সন্তোষ বিধানের উদ্দেশ্যে,লোক দেখানোর জন্য নয় এবং রাখিতে হইবে এই আশায় যে, এই জন্য আল্লাহতাআলার নিকট হইতে বিশেষ সওয়াব ও প্রতিফল পাওয়া যাইবে। উপরন্ত এইজন্য মনে দুরন্ত ইচ্ছা বাসনা ও কামনা থাকিতে হইবে। রোযা রাখার প্রতি একবিন্দু অনীহা ও বিরক্তিভাবে থাকিতে পারিবে না, উহাকে একটা দুর্বহ বোঝা মনে করিতে পারা যাইবে না-রোযা রাখা যতই কষ্টকর হউক না কেন। বরং রোযার দিন দীর্ঘ হইলে ও রোযা থাকিতে কষ্ট অনুভুত হইলে উহাকে আল্লাহর নিকট হইতে আরো বেশী সওয়াব পাওয়ার কারণ মনে করিতে হইবে। বস্তুত এই ধরনের মন ও মানুসিকতা সহকারে রোযা রাখা হইলে উহার ফলস্বরূপ অতীতের যাবতীয় গুনাহ মাফ হইয়া যাইবে।
রোযার বিনিময়ে গুনাহ মাফ হইবে। হাদীসের শাব্দিক ঘোষণার আলোকে স্পষ্ট হয় যে, সগীরা-কবীরা সর্বপ্রকার গুনাহ মাফ হইয়া যাইবে। আল্লাহর অনুগ্রহ সীমা-শেষহীন। কিন্তু এ পর্যায়ে হাদীসবিদদের সিদ্ধান্ত এই যে, কেবলমাত্র সগীরা গুনাহই মাফ হইবে, কবীরা নয়। কেননা কবীরা গুনাহ তওবা ছাড়া মাফ না হওয়া সম্পর্কে কোন দ্বিধা বা সন্দেহ নাই ইমাম নবতী অবশ্য হাদীসের সাধারণ ঘোষণার প্রেক্ষিতে কেবল সগীরা গুনাহ মাফ হইবে বলার আপত্তি জানাইয়াছেন। তিনি বলিয়াছেনঃ গুনাহ মাফীর কাজ গুলি যদি সমস্ত গুনাহ মাফ করাইবার মত হয় তবে উহা তাহাই করিবে। কবীরা গুনাহ মাফীর মত আমল হইলে তাহাও মাফ হইয়া যাইবে। আর কবীরা গুনাহ্ না থাকিলে ইহার দরুন জান্নাতে রোযাদারের মর্যাদা অনক বৃদ্ধি পাইবে। কোন কোন হাদীসবিদ মনে করেন,সগীরার সঙ্গে সঙ্গে কিছু কিছু কবীরা গুনাহও যে মাফ হইবে না-সেইরূপ ধারণা ঠিক নয়। বরং কবীরা গুনাহের মাফী পাওয়ারও আশা মনে মনে করা আবশ্যক।
[উদ্ধৃত হাদীসটির শেষ শব্দটি ==================== কেবলমাত্র মুসনাদে আহমদের বর্ণনায় বড়তি শব্দ হিসাবসে আসিয়াছে । অন্যান্য হাদীসগ্রন্থে এই শেষ শব্দটি নাই।]
==================================================
হযরত সহল ইবনে সা’দ (রা) হইতে বর্ণিত হইয়াছে, তিনি বলিয়াছেন, হযরত রাসূলে করীম (স) বলিয়াছেনঃ বেহেশতের একটি দুয়ার আছে, উহাকে রাইয়্যান বলা হয়। এই দ্বারপথে কিয়ামতের দিন কেবমাত্র রোযাদার লোকেরাই বেহেশতে প্রবেশ করিবে। তাহাদের ছাড়া অন্য কেহ এই পথে প্রবেশ করিবে না। সেদিন এই বলিয়া ডাক দেওয়া হইবেঃ রোযাদার কোথায়? তাহারা যেন এই পথে প্রবেশ করে; এইভাবে সকল রোযাদার ভিতরে প্রবেশ করার পর দুয়ারটি বন্ধ করিয়া দেওয়া হইবে। অতঃপর এই পথে আর কেহই প্রবেশ করিবে না।
-বুখারী, মুসলিম
ব্যাখ্যা রোযাদার ত্যাগ ও তিতিক্ষা অনুপাই যে তাহাকে রোযার প্রতিফল দেওয়া হইবে, উপরিউক্ত হাদীসটিতে অত্যন্ত বলিষ্ঠ ভাষায় তাহা বলা হইয়াছে। বস্তুত রোদারের পিপাসার্ত থাকাই তাহার সর্বাপক্ষা বড় ত্যাগ ও কষ্ট স্বীকার। এই কারণে তাহাকে উহার যে প্রতিফল দেওয়া হইবে, তাহাতে পিপাসার বিপরীত অধিক বেশী পানীয় পান করার পান করিয়া পিপাসার জ্বালা নিবৃত্ত করার ব্যবস্থা থাকা একান্তই বাঞ্জনীয়। হাদীসটিতে জান্নাতের যে দরজা দিয়া প্রবেশ করার কথা বলা হইয়াছে, পিপাসার্তের প্রতিফলের সহিত সামঞ্জস্য রাখিয়া উহার নামকরণ করা হইয়াছে ’রাইয়্যান’==========ইহার অর্থ ‘সদা-প্রবহমান প্রসবণ’। ইহার বিপরীত শব্দ========খুব বেশী পিপাসার্ত,’পিপাসা-জর্জরিত। রোযাদার থাকিয়া দুনিয়ার জীবনে নিরতিশয় পিপাসা কষ্ট ভোগ করিয়াছে-করিয়াছে একান্তভাবে আল্লাহর জন্য। এই কারণে তিনিই তাহাদিগকে পরকালে ‘চিরনিঝর দ্বারপথে জান্নাতে প্রবেশ করাইবেন। যেন তাহারা জান্নাতে প্রবেশ করিলেই চির জীবনের পিপাসা নিবৃত্ত করার সার্থক সুযোগ লাভ করিতে পারে। নাসায়ী ও ইবনে খুযায়মা উদ্ধৃত হাদীসে তাই বলা হইয়াছেঃ
=====================================================
যে লোকই সেই দ্বারপথে প্রবেশ করিবে, সে-ই পান করিবে। আর যেই পান করিবে,সে আর কোন দিনই পিপাসার্ত হইবে না।
হাদীসের ভাষা হইল===========জান্নাতের মধ্যে =======জান্নাতের জন্য বলা হয় নাই। এইভাবে বলিয়া বুঝানো হইয়াছে যে, জান্নাতের এই বিশেষ দরজাটিতে এমন সব নিয়ামত ও সুখ-আনন্দ সমগ্রী রহিয়াছে, যাহা জান্নাতের ভিতরে নাই। সেই সঙ্গে উহার প্রতি অধিকতর উৎসাহী ও আগ্রহান্বিত হইয়া উহা লাভ করার জন্য জনগণকে উৎসাহিত ও করা হইয়াছে।
কিয়ামতের দিন এই দ্বারপথে কেবলমাত্র রোযাদাররাই প্রবেশ করিবে। হাশরের ময়দানে রোযাদার কে কোথায় রহিয়াছে তাহাদিগকে ডাকিয়া আনা হইবে ও সেই দরজা দিয়া জান্নাতে প্রবেশ করানো হইবে। এইভাবে সব রোযাদারের প্রবেশ সম্পূর্ণ হইয়া যাওয়ার পর-প্রবেশ করার মত আর একজনও যখন বাহিরে পড়িয়া থাকিবে না, তখন সেই দরজাটি স্থায়ীভাবে বন্ধ করিয়া দেওয়া হইবে। অতঃপর সেই পথে আর কেহই প্রবেশ করিবে না। এই সম্পূর্ণ কথাটিই রোযাদের জন্য আল্লাহর বিশেষ অনুগ্রহ ও নিয়ামতদানের ব্যবস্থা করার কথাই বুঝাইয়াছে। বস্তুত যে ধরনের উত্তম ও বিষেশ প্রতিফল রোযাদারগণকে দেওয়া হইবে তাহা আর কাহাকেও দেওয়া হইবে না।================ ==================================হযরত আবূ সাঈদ খুদরী (রা) হইতে বর্ণিত হইয়াছে, তিনি বলিয়াছেনঃ আমি রাসূলে করীম (স)-কে বলিতে শুনিয়াছিঃ যে লোক একটি দিন আল্লাহর পথে রোযা রাখিবে, আল্লাহ্ তাহার মুখমণ্ডলকে জাহান্নাম হইতে সত্তর বৎসর দূরে সরাইয়া রাখিবেন।
-বুখারী, মুসলিম, তিরমিযী, নাসায়ী, ইবনে মাজাহ্ , মুসনাদে আহমদ
ব্যাখ্যা এই হাদীসটিতে রোযার পরকালীন শুভফলের একটি দিক ঘোষিত হইয়াছে। যে লোক একটি দিন রোযা রাখিবে, আল্লাহ্ তাহাকে কখনো জাহান্নামে যাইতে দিবেন না। জাহান্নাম হইতে তাহাকে বহুদুরে সরাইয়া রাখিবেন। কিন্তু এই রোযা ফী-সাবিলিল্লাহ্-আল্লাহর উদ্দেশ্য ও আল্লাহর সন্তুষ্টি পাইবার আশায়-রাখিতে হইবে।এই রোযা রাখার দরুন তাহাকেও ক্ষতিগ্রস্ত করা চলিবে না, কোন ‘হক’ বা অধিকার নষ্ট করা চলিবে না। এমনকি রোযার মাসে কাফিরদের সহিত যুদ্ধ বাধিলে যুদ্ধে ঝাঁপাইয়া পড়া ইহার কারণে বাধাগ্রস্থ হইয়া পড়িতে পারিবে না।
এইরূপ রোযাদারকে আল্লাহ তা’আলা জাহান্নাম হইতে দূরে রাখিবেন’ অর্থ তাহাকে জাহান্নাম হইতে নিষ্কৃতি দিবেন। ‘সত্তর খরীফ’ অর্থ সত্তর বৎসর। ‘আর সত্তর বৎসর’ পরিমাপ পথের দূরত্ব হয় ২১০ মাইল। এখানে এই নির্দিষ্ট পরিমাণ দূরত্বই আসল উদ্দেশ্য নয়। আসল উদ্দেশ্য বহু-বহু দূরত্বে রাখার, তাহার গায়ে জাহান্নামের একবিন্দু আচঁও না-লাগানোর কথা বুঝানো হইয়াছে।