বসতভিটার ১৭শতাংশ জমি নিজ নামে ফেরত পেতে দীর্ঘদিন মানুষের দ্বারে দ্বারে ঘুরেছেন নাটোরের সিংড়া উপজেলার ৭৫ বছরের বৃদ্ধ অন্ধ ভিক্ষুক আ. ছালাম। কিন্তু কোন লাভ হয়নি। শেষ পর্যন্ত সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট জাহিদুল ইসলামের সদিচ্ছায় আইনি জটিলতা শেষে দীর্ঘ ১৪বছর পর বসতভিটার ১৭শতাংশ জমি নিজ নামে ফিরে পেয়েছেন তিনি। ভিক্ষুক হওয়ায় প্রয়োজনীয় অর্থ না থাকার কারণে নিজ পকেট থেকে ৪২ বছরের লিজমানি ৩ হাজার ৫৭০টাকা পরিশোধ করে জমিটি অন্ধ ভিক্ষুক আ. ছালামকে পাইয়ে দিতে সহযোগিতা করেছেন সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট জাহিদুল ইসলাম। এমনই ঘটনা ঘটেছে নাটোরের সিংড়া উপজেলার সুকাশ ইউনিয়নের শতকুঁড়ি গ্রামে। দীর্ঘ ১৪বছর পর নিজ নামে জমি ফেরত পেয়ে খুশি মৃত রইচ উদ্দিন ছেলে অন্ধ ভিক্ষুক আ. ছালাম।
সিংড়া উপজেলা ভূমি অফিস সূত্রে জানা যায়, ১৩৮১ বঙ্গাব্দে উপজেলার ১নং সুকাশ ইউনিয়নের শতকুঁড়ি মৌজায় ১১৮ দাগে ১৭ শতাংশ জমি ফয়েজ কারিকর লিজ নেন। জমিটি তার নামে অনুমোদন হওয়ার পর নবায়ন না করে এ সময় টাকার বিনিময়ে জমিটি আ. ছালামকে দখল ছেড়ে দেন ফয়েজ কারিকর। তারপর দীর্ঘ ১৪ বছর সেই জায়গায় বসবাস করছেন আ. ছালাম। আ. ছালাম জমিটি তার নামে নেয়ার জন্য জনপ্রতিনিধি, বিভিন্ন দফতর ও মানুষের দ্বারে দ্বারে গিয়েছেন। কিন্তু ‘ক’ তফশিল ভুক্ত জমি ও এ সংক্রান্ত একটি মামলা চলমান থাকায় কোন লাভ হয়নি। গত বুধবার পূর্বের লিজ গ্রহীতার নামে আদেশ ও মিসকেস (২/৭৭-৭৮) বাতিল করে ৪২ বছরের (১৩৮১-১৪২২ পর্যন্ত) নবায়নের (৩ হাজার ৫৭০ টাকা) পরিশোধ করে জমিটি অন্ধ ভিক্ষুক আ. ছালামকে পাইয়ে দেন সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট জাহিদুল ইসলাম।
এ ব্যাপারে সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট জাহিদুল ইসলাম জানান, আইনে রয়েছে ‘ক’ তফশিল ভুক্ত জমি নিয়ে মামলা চলমান থাকলেও লিজের কার্যক্রম চালু থাকবে। আর পূর্বের লিজ গ্রহীতা লিজ গ্রহণের পর কোনদিনও বকেয়া লিজ মানি পরিশোধ করেন নাই। বরং কর্তৃপক্ষকে ভুল বুঝিয়ে বর্ণিত জমি তার নিজ নামে খারিজ করে হোল্ডিং চালু করেন। কিন্তু কখনই ভূমি উন্নয়ন কর পরিশোধ করেননি। তাছাড়া নালিশি জমি দীর্ঘদিন যাবত পূর্বের লিজ গ্রহীতার ভোগ দখলে নাই। যেহেতু আ. ছালাম দীর্ঘ ১৪ বছর যাবত শান্তিপূর্ণ ভাবে সেই জায়গা ভোগদখল করছেন। সেহেতু পূর্বের লিজ গ্রহীতার নাম পরিবর্তন করে আ. ছালামের নামে লিজ নবায়ন ও ডিসিআর প্রদান করা হয়েছে।
Next Post