চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ১৬ জনের পদত্যাগের নেপথ্যে উপাচার্য-প্রক্টর দ্বন্দ্ব!

0

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) প্রক্টরসহ ১৬ জন একসঙ্গে পদত্যাগ করেছেন। পদত্যাগের কারণ হিসেবে তারা ‌‘ব্যক্তিগত কারণ’ উল্লেখ করলেও নেপথ্যে প্রক্টর ও উপাচার্যের দ্বন্দ্বের বিষয়টি উঠে এসেছে।

রোববার (১২ মার্চ) দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার বরাবর পদত্যাগপত্র জমা দেন তারা। পদত্যাগের কারণ জানতে পদত্যাগ করা কয়েকজন শিক্ষকের সঙ্গে কথা বলে জাগো নিউজ। সেখানে কারণ হিসেবে প্রক্টর ও উপাচার্যের দ্বন্দ্বের বিষয়টি উঠে এসেছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক পদত্যাগ করা একজন শিক্ষক বলেন, ‘উপাচার্য নিজের ইচ্ছামতো বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনা করেন। কোথাও শৃঙ্খলার লেশমাত্র নেই। এক থেকে দুজন সিন্ডিকেট সদস্যের সিদ্ধান্ত অনুসারে সব কাজ করা হয়। আমাদের কাছ থেকে কোনো পরামর্শ নেওয়া হয় না।’

তিনি বলেন, ‘বিভিন্ন নিয়োগে প্রচুর অনিয়মের কথা গণমাধ্যমসহ সর্বত্র চাউর হচ্ছে। দায়ভার দেওয়া হচ্ছে আমাদের ওপর অথচ আমরা কিছুই জানি না। এভাবে একটা বিশ্ববিদ্যালয় চলতে পারে না। তাই পদত্যাগের সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’

আরেক শিক্ষক বলেন, ‘উপাচার্য প্রশাসনিক কাজে এমন লোক চান যারা উনার সব কাজে শুধু সমর্থন দেবেন। উপাচার্যের বিভিন্ন সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করার কারণে প্রক্টর ও সহকারী প্রক্টরকে তিনি পদত্যাগের নির্দেশ দেন। উপাচার্য আর তাদের ওপর আস্থা রাখতে পারছেন না। এ কারণে প্রক্টরিয়াল বডিসহ বিভিন্ন হল প্রভোস্ট ও আবাসিক শিক্ষকরাও পদত্যাগের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।’

তবে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক উপাচার্যপন্থি একজন শিক্ষক জাগো নিউজকে বলেন, ‘যারা পদত্যাগ করেছেন সবাই প্রক্টরের অনুগত। পদত্যাগকারী প্রক্টর ড. রবিউল হাসান ভুঁইয়া তার স্ত্রীকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ দিতে চেয়েছিলেন। উপাচার্য তাতে রাজি না হওয়ায় উভয়ের মধ্যে দূরত্ব তৈরি হয়। যার ফলস্বরূপ আজকের এই পদত্যাগ।’

এ বিষয়ে জানতে উপাচার্য অধ্যাপক ড. শিরীণ আখতারের মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করে তাকে পাওয়া যায়নি।

তবে গণমাধ্যমের উদ্দেশে দেওয়া এক বক্তব্যে উপাচার্য বলেন, ‘তারা (পদত্যাগকারী শিক্ষকরা) তিনমাস আগে থেকে নিজেরা নিজেরা মিটিং করছেন। বিভিন্ন জায়গায় প্রশাসনবিরোধী কথা বলছেন যা আমার কানে এসেছে। যারা পদত্যাগ করেছেন তাদের সবাইকে রবি (প্রক্টর) নিয়োগ দিয়েছেন। তারা যা বলছেন সব মিথ্যা।’

তিনি বলেন, “তাদের কিছু এজেন্ডা ছিল। একে ওকে প্রোভাইডেড করবে। হয়তো তাদের ওপরও চাপ ছিল বিভিন্ন জায়গার। আমি তাদের কথায় সায় দিতে পারিনি। তাদের দু-একজনের নিয়োগ সংক্রান্ত কিছু ছিল, সেগুলো এখন বলবো না। দু-একজনের ব্যক্তিগত কিছু চাওয়া-পাওয়াও ছিল। তাদের একটা দাবি পূরণ না হওয়ার ক্ষেত্রে সিনিয়রদের প্রতি তাদের অবজ্ঞা এসেছে। এর প্রতিফলন তারা ‘দেখে নেবে’ বলেছিলেন।”

উপাচার্য আরও বলেন, ‘আমি জানতাম এমন কিছু ঘটতে পারে। তাই ভেতরে ভেতরে আমিও তাদের বিকল্প তৈরি করে ফেলেছি। তাই পদত্যাগের এক ঘণ্টার মধ্যেই নতুন নিয়োগ দিতে পেরেছি।’

এ বিষয়ে প্রক্টর ড. রবিউল হাসান ভুঁইয়ার বক্তব্য পাওয়া যায়নি। তবে পদত্যাগের পর তিনি বলেছিলেন, ‘আমি গবেষণার মানুষ। করোনাকালীন দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে আমার গবেষণায় ব্যাঘাত ঘটেছে। গবেষণায় পূর্ণ সময় দেওয়ার জন্যই পদত্যাগের সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’

উৎসঃ   জাগোনিউজ
Leave A Reply

Your email address will not be published.

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More