ছাত্রলীগের হামলায় হাসপাতালে ছাত্র অধিকারের ২৬ নেতা–কর্মী, এক দিন পরও ঘটনা জানে না পুলিশ

0

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) ক্যাম্পাসে গতকাল শুক্রবার ছাত্রলীগের দুই দফা হামলায় গুরুতর আহত হয়ে ধানমন্ডিতে গণস্বাস্থ্য মেডিকেলে চিকিৎসাধীন রয়েছেন ছাত্র অধিকার পরিষদের ২৬ নেতা-কর্মী। আজ শনিবার হামলার এ ঘটনার এক দিন পার হলেও বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এ বিষয়ে কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। আর পুলিশ বলেছে, তারা এ ঘটনা জানে না।

গতকাল বেলা ১১টার দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্র (টিএসসি) এলাকার ডাস ক্যাফেটেরিয়ার সামনে হামলার ওই ঘটনা ঘটে। ছাত্র অধিকারের পঞ্চম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদ্‌যাপন উপলক্ষে সংগঠনটির নেতা-কর্মীরা মিছিল নিয়ে টিএসসিতে গেলে ছাত্রলীগের নেতা–কর্মীরা লাঠি, রড দিয়ে ওই হামলা চালান বলে অভিযোগ তাঁদের।

হামলার এ ঘটনার পর এক দিন পার হলেও পুলিশ বলছে, এ ধরনের কিছু তাদের জানা নেই। অন্যদিকে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বলছে, ছাত্রসংগঠনের পক্ষ থেকে কোনো লিখিত অভিযোগ তারা পায়নি।

ছাত্রলীগের দাবি, তাদের নেতা–কর্মীরা এ হামলার সঙ্গে জড়িত নন। কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ প্রথম আলোকে বলেন, বিপিএলে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ানসের জয়ের পর ঢাবির কুমিল্লা জেলার শিক্ষার্থীদের একটি অনুষ্ঠান ছিল। একই স্থানে ছাত্র অধিকারের কর্মসূচি ছিল। একই স্থানে কর্মসূচি নিয়ে তাঁদের মধ্যে ঝামেলা হয়েছে।

ওই ঘটনার বিষয়ে আজ পুলিশের কাছে জানতে চাইলে শাহবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নূর মোহাম্মদ প্রথম আলোকে বলেন, এ ধরনের কোনো ঘটনা তাঁর জানা নেই।

গণ অধিকার পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক রাশেদ খান প্রথম আলোকে বলেন, ছাত্রলীগের হামলায় তাঁদের ছাত্রসংগঠনের ৪০ নেতা–কর্মী আহত হয়েছেন। ২০ জনের অবস্থা গুরুতর। হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন তাঁরা। তিনি অভিযোগ করেন, গণতান্ত্রিক আন্দোলন যাতে সফল না হয়, সে জন্য সরকারের ওপরের মহলের নির্দেশে এ হামলা হয়েছে। হামলায় জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে মামলা করবেন তাঁরা।

গণ অধিকার পরিষদ বলেছে, হামলায় গুরুতর আহত হয়ে ধানমন্ডির গণস্বাস্থ্য মেডিকেলে চিকিৎসা নিচ্ছেন ২৬ নেতা–কর্মী। তাঁরা হলেন ছাত্র অধিকার পরিষদের সভাপতি বিন ইয়ামিন মোল্লা, সাধারণ সম্পাদক আদিব আরিফ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক সভাপতি আখতার হোসেন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নুসরাত তাবাসসুম, সাংগঠনিক সম্পাদক মোল্লা রহমতুল্লাহ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপ-প্রচার সম্পাদক এহসানুল মাহবুব জুবায়ের, পরিষদের সহসাংগঠনিক সম্পাদক মামুনুর রশীদ, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এইচ এম রুবেল, কেন্দ্রীয় কমিটির নেতা তাসলিম হোসেইন, ঢাকা মহানগর উত্তরের সভাপতি ফয়সাল রকি, সাধারণ সম্পাদক আবির হোসেন সবুজ। এ ছাড়া আছেন পরিষদের কর্মী ইউনুস, ফয়সালা, নীরব, আফতাব মাবুদ, নায়েক নুর, মৌসুম লিল্লাহ, আবু রায়হান সোহান, রিপন হাসান, জহিরুল ইসলাম, সাব্বির হোসাইন, সম্রাট, মোসাদ্দেক সাদ, আবু ত্বহা, রিপন হাসান ও জহিরুল ইসলাম শান্ত।

ছাত্র অধিকারের সভাপতি বিন ইয়ামিন মোল্লা প্রথম আলোকে বলেন, ‘ছাত্রলীগের হামলায় আমার মাথা, মুখ, নাক ও চোখে গুরুতর জখম হয়েছে। রডের আঘাতে মাথার বেশ কয়েক জায়গায় ফেটে গেছে। আমার মতো হামলার শিকার অনেকে হাসপাতালে কাতরাচ্ছেন।’

এ ঘটনায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর গোলাম রব্বানী প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমি যতটুকু জেনেছি, দুই পক্ষ মুখোমুখি অবস্থানে ছিল। কিছুক্ষণ পরে তাদের সরিয়ে দেওয়া হয়। কোনো ছাত্রসংগঠনের পক্ষ থেকে আমরা লিখিত অভিযোগ পাইনি। তারপরও খোঁজখবর রাখছি।’

উৎসঃ   প্রথমআলো
Leave A Reply

Your email address will not be published.

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More