মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এন্থনি ব্লিঙ্কেনের বিশেষ কৌশলগত উপদেষ্টা ও দেশটির পররাষ্ট্র দপ্তরের কাউন্সেলর (আন্ডার সেক্রেটারি) ডেরেক শোলে দুই দিনের সফরে ঢাকা এসেছেন। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে তাকে স্বাগত জানান পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, শোলের এ সফরের উদ্দেশ্য হচ্ছে, বাংলাদেশ এবং যুক্তরাষ্ট্রের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক আরো জোরদার করা। দুই সরকারের মধ্যে যে সম্পর্কটা আছে তা আরো শক্তিশালী করা। এ ছাড়া রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানের বিষয়টি গুরুত্ব পাবে। তার এ সফর দুদেশের সম্পর্ককে ‘আরো শক্তিশালী’ করতে ভূমিকা রাখবে বলে আশা প্রকাশ করা হচ্ছে।
কূটনৈতিক সূত্র বলছে, বুধবার পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেনের সঙ্গে বৈঠকে করবেন ডেরেক শোলে। এ ছাড়া প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গেও সৌজন্য বৈঠক করবেন তিনি। আলোচনায় দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য, গণতন্ত্র, মানবাধিকার ও নিরাপত্তা বিষয়গুলো থাকছে। পাশাপাশি র্যাব এবং এর সাবেক-বর্তমান কর্মকর্তাদের ওপর মার্কিন নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের বিষয়টি বাংলাদেশের পক্ষ থেকে বরাবরের মতোই জোর দেওয়া হবে।
মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর জানিয়েছে, ১৪-১৮ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশ ও পাকিস্তানে একটি মার্কিন প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন ডোরেক শোলে। ডোরেক শোলের সফরে রোহিঙ্গা শরণার্থী সংকটের সমন্বয় ও প্রতিক্রিয়া, আন্তর্জাতিক ফোরামে সহযোগিতা জোরদার নিয়ে আলোচনা হবে। এ ছাড়া যুক্তরাষ্ট্র ও বাংলাদেশের মধ্যে নিরাপত্তা অংশীদারত্ব এগিয়ে নেয়ার বিষয়ে আলোচনা করতে ঊর্ধ্বতন বাংলাদেশি কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক হবে।
ডেরেক শোলের সফরের আগেই ইউএসএআইডি’র একটি অগ্রবর্তী দল বাংলাদেশে এসেছে। দলটি কক্সবাজার রোহিঙ্গা ক্যাম্পে গিয়েছে। সেখানকার পরিস্থিতি সরেজমিনে দেখে ঢাকায় ফিরে তারা ডেরেক শোলের কর্মসূচীতে যোগ দেবেন।
ডেরেক শোলে ঢাকা সফরের আগে ভার্চুয়াল প্লাটফর্মে বেসরকারি একটি টেলিভিশনে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বলেন, আগামী দশকগুলোতে যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় স্বার্থের ক্ষেত্রে ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চল গুরুত্বপূর্ণ এবং সেই সেখানে গুরুত্বপূর্ণ অংশ হচ্ছে বাংলাদেশ। সে কারণেই উচ্চপর্যায়ের সফরকারীদের আমরা ঘন ঘন দেখছি। সামনের দিনগুলোতে আমরা যুক্তরাষ্ট্র ও বাংলাদেশের সম্পকর্কে আরো বড় পরিসরে দেখতে চাই।
তিনি বলেন, মিয়ানমারের পরিস্থিতি নিয়ে আমরা গভীরভাবে উদ্বিগ্ন, যা কেবল খারাপের দিকেই যাচ্ছে। এই শরণার্থী সংকট বাংলাদেশের উপর চাপ ফেলছে, তা কমানোর জন্য আমরা যুক্তরাষ্ট্র সাধ্যমতো সহায়তা দিয়ে যাচ্ছি বাংলাদেশকে। মানবিক প্রয়োজন মেটাতে বাংলাদেশকে গুরুত্বপূর্ণ সহায়তা দেওয়ার পাশাপাশি কিছু শরণার্থীকে যুক্তরাষ্ট্রে নিয়ে আসার কার্যক্রমও রয়েছে।