‘পৃথিবী নিষ্ঠুর, প্রয়োজন শেষে সবাই ডাস্টবিনে ফেলে দেয়’

0

‘‘৪ বার ব্লেজারের জন্য মতিহার হল থেকে নির্বাচিত হয়েও পায়নি একটিও। সর্বশেষ সাঁতারে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পর প্রভোস্ট স্যার ব্লেজার দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিলেও হয়তো সেটাও দিবে না। কারণ অর্থসংকটের দোহায় দিয়েছেন প্রভোস্ট। রিক্ত হস্তেই হল থেকে বিদায় নিতে হবে। পৃথিবীটা নিষ্ঠুর, প্রয়োজন শেষে সবাই ডাস্টবিনে ফেলে দেয়। চ্যাম্পিয়ন ব্লেজার একটা আবেগ। যা গায়ে দেওয়া এ জীবনে আর হলো না।’’

শুক্রবার (৩ ফেব্রুয়ারি) সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এভাবেই নিজের প্রতি অন্যায়ের কথা জানান রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) ইতিহাস বিভাগের ২০১৬-১৭ সেশনের শিক্ষার্থী শামীম আহমেদ।

তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের মতিহার হলের আবাসিক শিক্ষার্থী এবং একজন অ্যাথলেট। ২০১৮ সালে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন কর্তৃক আয়োজিত ৪১তম আন্তঃকলেজ এ্যাথলেটিক্স প্রতিযোগিতায় ২টি গোল্ড মেডেল ও ১টি সিলভার অর্জন করায় ব্লেজারের জন্য নির্বাচিত হন তিনি।

তবে তার অভিযোগ, মতিহার হলের প্রভোস্ট তাকে ব্লেজার পরিয়ে দেওয়ার কথা থাকলেও হল প্রভোস্ট পরিবর্তন হওয়ার কারণে সেবার ব্লেজার থেকে বঞ্চিত হন তিনি। যদিও হল প্রভোস্ট খেলার পূর্বেই বলেছিলেন কোনো শিক্ষার্থী অ্যাথলেটিক্সে গোল্ড মেডেল পেলেই তাকে দেওয়া হবে ব্লেজার।

তারপর ২০১৯ সালে ৪২তম আন্তঃকলেজ অ্যাথলেটিক্স প্রতিযোগিতায় ১টি গোল্ড আর ২টি সিলভার অর্জন করেন শামীম। সদ্য দায়িত্ব পাওয়া হল প্রভোস্ট ব্লেজার দেওয়ার জন্য ৬ জন সাঁতারু ও শামীমকে নির্বাচিত করেন। কিন্তু কিছুদিন পরে করোনার জন্য ক্যাম্পাস বন্ধ হয়ে গেলে ক্যাম্পাস খোলার পর আর ব্লেজার দেয়নি।

এরপর ২০২২ সালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে আয়োজিত ক্রীড়া উৎসবে ৩টি গোল্ড ও ১টি ব্রোঞ্জ পেয়েছিলেন তিনি। সেই সময় সেরা খেলোয়াড়ও নির্বাচিত হয়েছিলেন শামীম। সেসময় হল থেকে বলা হয়েছিল শামীমসহ ১৪ জনকে ব্লেজার দেওয়া হবে। সবার গায়ের মাপও নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু সেবারও ব্লেজারের স্বপ্ন অধরায়ই রয়ে গেলো।

সবশেষ ২০২২ সালের ৫ ও ৬ সেপ্টেম্বরে আয়োজিত সাঁতার প্রতিযোগিতায় চ্যাম্পিয়ন হয় মতিহার হল। সেবারও শামীমসহ চারজনকে ব্লেজার দেওয়ার কথা থাকলেও অর্থ সংকটের দোহায় দিয়ে ব্লেজার দেওয়া হয়নি কাউকেই।

এ নিয়ে আক্ষেপ জানিয়ে শামীম আহমেদ জানিয়েছেন, ব্লেজারের জন্য চারবার নির্বাচিত হওয়া সত্ত্বেও একবারও পাইনি। প্রতিবারই বঞ্চিত হয়েছি। ব্লেজারের জন্য চাতক পাখির মতো অপেক্ষায় থাকতাম। শেষবার না পেয়ে অনেক কষ্ট পেয়েছি। কারণ এটাই আমার ক্যাম্পাসের শেষ খেলা। চ্যাম্পিয়ন ব্লেজার একটা আবেগ। এ জীবনে আর হলো না চ্যাম্পিয়ন ব্লেজার পরা।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে মতিহার হল প্রভোস্ট অধ্যাপক এম. নজরুল ইসলাম বলেন, আমাদের প্রভোস্ট কাউন্সিলের মিটিংয়ে সিদ্ধান্ত হয়েছে কোনো খেলোয়াড় পরপর তিনবার চ্যাম্পিয়ন হলে তাকে ব্লেজার দেওয়া হবে। আমি দায়িত্বে আসার পরে সে একবারই চ্যাম্পিয়ন হয়েছে। পূর্বে তাকে প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে কিনা সেটা আমি জানিনা।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. সুলতান-উল-ইসলাম বলেন, এ বিষয়ে তো আমি জানিনা। আমার বরাবর একটি অভিযোগ করলে আমি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে জানিয়ে ব্লেজারের ব্যবস্থা করবো।

উৎসঃ   দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাস
Leave A Reply

Your email address will not be published.

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More