শেখ হাসিনার ফ্যাসিবাদী সরকারের বিভিন্ন কর্মকাণ্ডের সমালোচনা থাকার কারণে ৩টি বই বিক্রি না করার শর্তে আদর্শ প্রকাশনীকে বাংলা একাডেমির মেলায় স্টল বরাদ্দ দিতে নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্টের একটি বেঞ্চের আওয়ামী বিচারকদ্বয়।
বুধবার (৮ ফেব্রুয়ারি) চিহ্নিত আওয়ামী বিচারক মো. খসরুজ্জামান ও মো. ইকবাল কবিরের হাইকোর্ট বেঞ্চ রুলসহ এ আদেশ দেন।
উল্লেখ্য, খসরুজ্জামান হাইকোর্টের আইনজীবী থাকার সময় ২০০৬ সালের ৩০ ডিসেম্বর সুপ্রিমকোর্টে আওয়ামী তাণ্ডবে সন্ত্রাসীর ভূমিকায় ছিলেন। সুপ্রিমকোর্টের প্রধান বিচারপতির এজলাস ভাংচুরসহ কোর্টের দরজায় লাথি মারার সচিত্র প্রতিবেদন আমার এদেশ তখন প্রকাশ করেছিল। সমঝোতার নির্বাচনে ২০০৯ সালে শেখ হাসিনা ক্ষমতায় আসার পর খসরুজ্জামানকে বিচারক হিসাবে নিয়োগের তালিকা প্রকাশ করা হলে আমার দেশ সেই তাণ্ডবের ছবি প্রকাশ করেছিল। তৎকালীন প্রধান বিচারপতি তখন শপথ দেওয়া থেকে বিরত থাকেন। দীর্ঘ ৬ মাস পর চরম আওয়ামীপন্থী খায়রুল হক প্রধান বিচারপতি হিসাবে শপথ নেওয়ার পর খসরুজ্জামানকে শপথ পড়িয়ে এজলাসে বসার সুযোগ করে দিয়েছিলেন। এই খসরুজ্জামান এখন সরকারের কর্মকাণ্ডে সমালোচনা থাকার কারণে বই মেলায় বিক্রি না করার শর্ত দিয়েছেন।
আওয়ামীরা সব সময় মুক্ত মনের কথা বলেন। মুক্ত মনের কথা বলে ইসলাম ও মুসলমানদের কঠোর সমালোচনা করেন আওয়ামী লেখক বুদ্ধিজীবীরা। কিন্তু ফ্যাসিবাদী সরকারের সমালোচনা করলে বই নিষিদ্ধ করার পর মুক্তমনা ও মুক্ত মতামত ওলায়ারা নীরব চুপসে থাকেন।
যে ৩টি বই বিনি না করার শর্তে স্টল বরাদ্দ দেওয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে, এ তিনটি বই হচ্ছে, ফাহাম আব্দুস সালামের লেখা ‘মিডিয়োক্রিটির সন্ধানে।’ জিয়া হাসানের ‘উন্নয়ন বিভ্রম’ এবং ফয়েজ আহমদ তৈয়ব এর ‘অপ্রতিরোধ্য উন্নয়নের অভাবনীয় কথামালা।’
শুনানিতে ব্যারিস্টার অনিক আর হক বলেন, একটি বইকে কেন্দ্র করে বইমেলায় আদর্শ প্রকাশনীর অংশগ্রহণ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। অথচ বইটি কালো তালিকাভুক্ত বা নিষিদ্ধ নয়। আর এই প্রকাশনীর আরও ৬শ বই রয়েছে। স্টল বরাদ্দ না দিলে এসব বইয়ের লেখকরা বঞ্চিত হবেন। তাই যদি কোনো বই নিয়ে বাংলা একাডেমির আপত্তি করে সেটা আমরা না হয় স্টলে রাখবো না।
এ প্রকাশনীর স্বত্বাধিকারী মাহবুব রহমান ২রা ফেব্রুয়ারি হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় এ রিটটি করেন।
রিটে আদর্শ প্রকাশনীকে স্টল বরাদ্দ না দেওয়া কেন অবৈধ হবে না, এ বিষয়ে রুল জারির আর্জি জানানো হয়েছে। পাশাপাশি আদর্শ প্রকাশনীকে দ্রুত স্টল বরাদ্দ দিতেও নির্দেশনা চাওয়া হয়েছে রিটে। রিটে বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক ও সভাপতিসহ চার জনকে বিবাদী করা হয়েছে।