খুলনা-৪ আসনের সংসদ সদস্য ও বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফে) সহ-সভাপতি আব্দুস সালাম মুর্শেদীকে ‘ক্রিমিনাল, করাপ্ট’ বলায় ব্যারিস্টার সুমনের বিচার চান সালাম মুর্শেদীর মেয়ে ব্যারিস্টার শেহরিন সালাম ঐশী।
সুপ্রিমকোর্টের এনেক্স ভবনের সামনে রবিবার উপস্থিত সাংবাদিকদের কাছে ব্যারিস্টার সুমনের সমালোচনা করে সালামা মুর্শেদীর মেয়ে ঐশী তার বক্তব্য তুলে ধরেন।
সরকারের সম্পত্তি সালাম মুর্শেদী নিজের নামে লিখে নিয়ে বাড়ি বানানোর অভিযোগে হাইকোর্টে একটি রিট মামলা চলমান রয়েছে। সরকারি সম্পত্তি দখলের বিষয়ে আব্দুস সালাম মুর্শেদীকে ‘ক্রিমিনাল, করাপ্ট’ বলেছেন ব্যারিস্টার সুমন।
বাবা সালাম মুর্শেদীকে নিয়ে সুমনের বক্তব্যের সমালোচনা করে ঐশী বলেন, ‘আমার বাবার বিরুদ্ধে ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন রিট করেছেন। রিটটি করার পর থেকেই দুঃখজনকভাবে তিনি একাধিক লাইভ করেছেন। তিনি সংসদ সদস্য আব্দুস সালাম মুর্শেদীকে বিভিন্ন নামে ট্যাগ দিয়েছেন। তাকে তিনি ক্রিমিনাল-করাপ্ট ট্যাগ দিয়েছেন। এটা দুঃখজনক, তিনি (ব্যারিস্টার সুমন) একজন আইনজীবী। আমি নিজেও একজন আইনজীবী।’
‘আমি বুঝতে পারি না, যে বিষয়টি আদালতে বিচারাধীন আছে। আদালতকে অবমাননা করে কিভাবে তিনি বিচারাধীন বিষয় নিয়ে লাইভ করতে পারেন। এটা দুঃখজনক।’
ঐশী বলেন, ‘আমার বাবা শুধু সংসদ সদস্যই নন। তিনি বাংলাদেশের একজন স্বনামধন্য সাবেক ফুটবলার। যারা ক্রীড়া সাংবাদিকতা করেন তারা আমার বাবা সম্পর্কে জানেন। আমি আজ আইনজীবী হিসেবে নয়, আমি একজন মেয়ে হিসেবে এসেছি বাবার জন্য বিচার চাইতে।’
ঐশী বলেন, ‘যারা তার বাবাকে ব্যবসায়ী হিসেবে, পলিটিশিয়ান হিসেবে দেখেছেন তারা জানেন, তিনি (সালাম মুর্শেদী) কী ধরনের মানুষ। বাবাকে এভাবে লাইভে যখন হেয় করা হয়, তখন দুঃখ লাগে। আমি অনুরোধ জানাব, প্লিজ পাবলিসাইজ করবেন না। একটা ম্যাটার যখন কোর্টে আছে। কোর্টই সিদ্ধান্ত নেবেন। আমরা আদালতকে সম্মান দিচ্ছি।’
এদিকে সালাম মুর্শেদীর বিরুদ্ধে দায়ের করা রিটটির পরবর্তী শুনানির জন্য আগামী ১ ডিসেম্বর দিন নির্ধারণ করেছেন আদালত। আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার অনীক আর হক। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল এএম আমিন উদ্দিন, ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল একেএম আমিন উদ্দিন মানিক। সালাম মুর্শেদীর পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী সাঈদ আহমেদ রাজা।
উল্লেখ্য, গত ৩০ অক্টোবর সরকারের সম্পত্তি নিজের নামে লিখে নিয়ে বাড়ি বানানোর অভিযোগে সালাম মুর্শেদীর বিরুদ্ধে হাইকোর্টে রিট করেন সুপ্রিমকোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন। রিটে দুর্নীতি দমন কমিশনসহ (দুদক) সংশ্লিষ্টদের বিবাদী করা হয়েছে।
এরপর ১ নভেম্বর আবদুস সালাম মুর্শেদীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে বিবাদীদের নিষ্ক্রিয়তা কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না জানতে চেয়ে রুল জারি করেন হাইকোর্ট।
একইসঙ্গে ওই সম্পত্তি সম্পর্কিত সব কাগজপত্র ১০ দিনের মধ্যে আদালতে দাখিল করতে রাজউক, গণপূর্ত বিভাগ ও সালাম মুর্শেদীকে নির্দেশ দিয়েছেন। বিচারপতি নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি খিজির হায়াতের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
রিটের বিষয়ে ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন সাংবাদিকদের বলেন, সালাম মুর্শেদীর গুলশানের বাড়িটি পরিত্যক্ত হিসেবে তালিকাভুক্ত। ওই বাড়ি সালাম মুর্শেদী দখল করে বসবাস করছেন। বিষয়টি নিয়ে গণপূর্ত মন্ত্রণালয় রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাউজক) চেয়ারম্যানের কাছে ২০১৫ ও ১৬ সালে জানতে চাইলেও কোনো জবাব দেওয়া হয়নি।
(ঢাকাটাইমস