জার্মানি’র ফ্রাঙ্কফুর্টে বর্ণাঢ্য আয়োজনে বৈশাখি উৎসব অনুষ্ঠিত

0

13115681_1352276628121980_1887181968_n

হাবিবুল্লাহ আল বাহার, জার্মানি থেকেঃ বর্ণাঢ্য আয়োজনের মধ্যে দিয়ে জার্মানির ফ্রাঙ্কফুর্টে বৈশাখি উৎসব পালিত হয়েছে। বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন ফ্রাঙ্কফুর্ট এর আয়োজনে শনিবার স্থানীয় একটি অডিটোরিয়ামে ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনার মধ্যে দিয়ে বর্ণিল আয়োজনে এই উৎসব পালিত হয়। জার্মানিতে বসবাসকারী বিপুল সংখ্যক প্রবাসী এতে অংশগ্রহন করেন।

অনুষ্ঠানে শিশু কিশোরদের অংশগ্রহন এবং তাদের নাচ গান উৎসবকে করে তুলেছিল আনন্দময়। সাদা রঙের শাড়ি আর মাথায় ফুলের খোপায় বৈশাখী সাঁজে জার্মানি প্রবাসী রমনীদের আনন্দ অনেকটাই ছিল লক্ষনীয়। শিশু থেকে শুরু করে প্রাপ্ত বয়স্ক সবাই মগ্ন ছিল বৈশাখ উদযাপনে। গান নাচ সব কিছু মিলিয়ে পুরু অনুষ্ঠানকে মনে হয়েছিল ঠিক যেন পহেলা বৈশাখের রমনার বটমূল। প্রবাসের বুকে এক টুকরো বাংলাদেশ।

13101561_1352283644787945_383180292_n

জার্মানি প্রবাসী শিল্পী বুলবুল দম্পতির একের পর এক পুরানো দিনের দেশীয় গান অনুষ্ঠানে এনে দিয়েছিল বাড়তি বাঙ্গালিয়ানা। শিশু কিশোরদের কবিতা, নাচ, গান সহ বিভিন্ন পারফরমেন্স ছিল প্রশংসনীয়। পিতামাতারা তাদের সন্তানদেরকে সুন্দর বাঙালি সংস্কৃতি শিখাতে এবং মঞ্চে গিয়ে তা উপস্থাপন করতে সোচ্চার দেখা গিয়েছে।

নূর উদ্দিন মিঠু এবং মিষ্টি ভাষী রত্না ভাবীর মনোমুগ্ধ উপস্থাপনা অনুষ্ঠানকে করে তুলেছিল প্রানবন্ত। অসংখ্য গানের মাঝে লাল সবুজের জাতীয় পতাকা হাতে জার্মানিতে জন্মনেয়া শিশু কিশোরদের গাওয়া “ও পৃথিবী এবার এসে বাংলাদেশ নাও চিনে’’ গানটি যেন সবাইকে হারিয়ে দিয়েছিল প্রিয় মাতৃভূমি বাংলাদেশে। কয়েকটি ভাগে বিভক্ত এ অনুষ্ঠানে বিশেষ আকর্ষণ ছিল বাংলাদেশী খাবারের ব্যাপক আয়োজন, প্রবাসী ভাবীদের ব্যবস্থাপনায় শাড়ি মেলা, শিশুদের জন্য বালিশ খেলা, মহিলাদের জন্য প্রশ্নোত্তর পর্ব, লাকি ড্র ইত্যাদি। স্থানীয় সময় বিকাল ৬ টা থেকে শুরু হয়ে রাত বারটা পর্যন্ত চলে এ অনুষ্ঠান।

13090545_1352281501454826_1804548971_n

মন মাতানো এ অনুষ্ঠানের সার্বিক তত্ত্বাবধায়নে ছিলেন বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন ফ্রাঙ্কফুর্ট এর সভাপতি শাহআলম, সাধারন সম্পাদক এ সবুর সরকার, ফয়সাল আহমেদ, মালেক মোল্লা, মোঃ মোতালেব, মোজাম্মেল হক, দেলোয়ার ফারুক সহ অ্যাসোসিয়েশনের নির্বাহী কমিটির সদস্যরা।

সম্পূর্ণ অরাজনৈতিক সংগঠন হিসেবে সকল দলের এবং সকল মতের বাঙালি কমুউনিটির প্রায় সবাই এই উৎসবে অংশগ্রহন করে ফলে অনুষ্ঠানটি রুপ নেয় বাংলাদেশিদের মিলন মেলা হিসেবে।

আয়োজকদের সাথে কথা বলে জানা যায়, প্রবাসী বাংলাদেশীরা প্রতি বছর অধীর আগ্রহের সাথে অপেক্ষা করে এই উৎসবটির জন্য। তাঁরা জানান, একটি অরাজনৈতিক সংগঠন হিসেবে সবাই এই অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করে ফলে এটি একটি বার্ষিক মিলন মেলায় পরিনত হয়। জানা যায়, অডিটোরিয়াম পেতে দেরি হওয়ায় কিছুটা বিলম্বে হলেও সফলভাবে বৈশাখী উৎসব পালন করতে পেরে সবাই সন্তুষ্ট।

অনুষ্ঠানে বাচ্চাদের বালিশ খেলা, মহিলাদের প্রশ্নোত্তর পর্ব, লাকি ড্র ইত্যাদিতে বিজয়ীদেরকে পুরস্কৃত করা হয়। বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন ফ্রাঙ্কফুর্ট এর নেতৃবৃন্দ এবং কমুউনিটির নেতৃবৃন্দ বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন।

প্রবাসের শত ব্যস্ততার মাঝে বৈশাখের এই উৎসব সবার জীবনে নিয়ে আসে নতুন করে পথচলার উদ্দীপনা। নতুন করে ভালবাসতে শিখায় দেশকে এবং দেশীয় সংস্কৃতিকে এমনটাই বলছিলেন অংশগ্রহণকারীদের অনেকে।

Leave A Reply

Your email address will not be published.

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More