সাগরে গ্যাসের কাঠামো পেয়েছে সান্তোস ও ক্রিশ এনার্জি

0

crisবাংলাদেশের অগভীর সাগরের ১১ নম্বর ব্লকে গ্যাসের একটি কাঠামো (স্ট্রাকচার) পেয়েছে সান্তোস ও ক্রিস এনার্জি। তবে ওই কাঠামোতে গ্যাস আছে কিনা, গ্যাস থাকলে তা কি পরিমাণ কিংবা এই গ্যাস বাণিজ্যিকভাবে উত্তোলনযোগ্য কিনা তা এখনই বলা সম্ভব নয়। ত্রিমাত্রিক জরিপ ও অনুসন্ধান কূপ করার পরই সে বিষয়ে নিশ্চিত হওয়া যাবে বলে পেট্রোবাংলা সূত্র জানায়।
মাটির নিচে অথবা সাগরের তলদেশে গ্যাস বা তেলের স্তর থাকলে সেখানে ছাতার উপরের অংশের মতো একটি শক্ত পাথরের স্তর থাকে। এই স্তর খনন করেই সাধারণত তেল-গ্যাস পাওয়া যায়। এই স্তরকেই বলা হয় স্ট্রাকচার বা কাঠামো।
সাগরের এসএস ১১ নম্বর ব্লকে তেল গ্যাস অনুসন্ধানে ২০১৪ সালের ১২ মার্চ পেট্রোবাংলার সঙ্গে অস্ট্রেলিয়াভিত্তিক কোম্পানি সান্তোস সাঙ্গু ফিল্ড লিমিটেড (এসএসএফএল) ও  সিঙ্গাপুরভিত্তিক ক্রিস এনার্জি এশিয়া লিমিটেডের (কেইএএল) পিএসসি স্বাক্ষর করে।
পেট্রোবাংলার এক কর্মকর্তা জানান, পিএসসি করার পর নিয়ম অনুযায়ী কোম্পানি দুটি দ্বিমাত্রিক ও ত্রিমাত্রিক জরিপ করার জন্য একটি পাঁচ বছর মেয়াদি পরিকল্পনা জমা দিয়েছে। এরই অংশ হিসেবে গত বছর জানুয়ারি মাসে তারা দ্বিমাত্রিক জরিপ করেছে। জরিপে তারা কি পেয়েছে আনুষ্ঠানিকভাবে না জানালেও একটি স্ট্রাকচার পেয়েছে বলে ইঙ্গিত দিয়েছে। তবে ত্রিমাত্রিক জরিপ ও অনুসন্ধান কূপ খননের আগে ওই গ্যাস উত্তোলনযোগ্য কিনা তা নিশ্চিত করে বলা যাবে না।
এদিকে সূত্র জানায়, সাগরের এসএস ১১ নম্বর ব্লকটি মিয়ানমারের সীমান্ত এলাকায় অবস্থিত। আশার কথা হচ্ছে যে, মিয়ানমারের ওই অংশের ব্লকে গ্যাস পাওয়া গেছে এবং এখন ওখান থেকে গ্যাস উত্তোলনের জন্য খনন কাজও শুরু করেছে তারা। ফলে বাংলাদেশের ওই অঞ্চলে গ্যাস পাওয়ার সম্ভাবনা প্রবল।
সম্প্রতি এক অনুষ্ঠানে বিদ্যুৎ জ্বালানি ও খনিজসম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদও এ বিষয়ে ইঙ্গিত দেন। তিনি বলেন, আগামী ছয় মাসের মধ্যে সাগরে তেল-গ্যাস উত্তোলনের ক্ষেত্রে একটি সুসংবাদ পাওয়া যাবে।
পিএসসি অনুযায়ী, পাঁচ বছর মেয়াদি অনুসন্ধান কাজে ৮৭০ বর্গকিলোমিটার এলাকায় দ্বিমাত্রিক ভূকম্পন জরিপ করার কথা কোম্পানি দুটির। জরিপে কোনো গ্যাসের কাঠামো পেলে তারা ৩০০ বর্গকিলোমিটার এলাকায় ত্রিমাত্রিক ভূকম্পন জরিপ করবে। এরপর একটি অনুসন্ধান কূপ খননের কথাও রয়েছে।
গত বছর দ্বিমাত্রিক জরিপের জন্য ফ্রান্সভিত্তিক আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান সিজিজিকে নিয়োগ দেয় সান্তোস ও ক্রিশ। তারা জাহাজ নিয়ে মিয়ানমারের সীমান্তবর্তী এসএস-১১ নম্বর ব্লক এলাকায় দ্বিমাত্রিক জরিপ কাজ করে। সম্প্রতি জরিপের কাজ শেষ করে তারা। নিয়ম অনুযায়ী, তারা জরিপের একটি প্রতিবেদন পেট্রোবাংলার কাছে জমা দেয়ার কথা।  চলতি সপ্তাহে সান্তোস পেট্রোবাংলাকে জানিয়েছে, আগামী মার্চ মাসে তারা প্রতিবেদনটি জমা দেবে এবং একই সময় তারা একটি ইতিবাচক বিষয় ঘোষণা দেয়ার কথা বলেছে।
সান্তোস আগে থেকে বাংলাদেশে কাজ করলেও ক্রিস এনার্জির জন্য এটিই প্রথম। সান্তোস বাংলাদেশের সাগরের একমাত্র গ্যাসক্ষেত্র সাঙ্গুতে কাজ করেছে। এর আগে কনোকো ফিলিপস সাগরের ১০ ও ১১ নম্বর ব্লকে দ্বিমাত্রিক জরিপ করে। সেখানেও তারা গ্যাসের স্ট্রাকচার পেয়েছে বলে জানিয়েছিল পেট্রোবাংলাকে। এরপর নিয়ম অনুযায়ী ত্রিমাত্রিক জরিপ করার কথা থাকলেও তারা তা না করে গ্যাসের দাম বাড়ানোর দাবি করে। সেই সময় পিএসসি করার পর গ্যাসের দাম পরিবর্তন করা যায় না- এ কথা জ্বালানি মন্ত্রণালয় থেকে জানানো হয়। এরপর কনোকো ত্রিমাত্রিক জরিপ না করে বাংলাদেশ থেকে চলে যায়।

Leave A Reply

Your email address will not be published.

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More