লক্ষ্মীপুরের রায়পুর উপজেলায় কোষ্টগার্ড পরিচয়ে ৩০ হাজার টাকা চাঁদা না পেয়ে দুই বসত বাড়িতে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করে নুর হোসেন দেওয়ান (৩৫) নামে এক কৃষককে তুলে নেয়ার অভিযোগ উঠেছে। এদিকে তুলে নেয়ার তিন দিনেও ওই কৃষকের সন্ধান মেলেনি বলে জানিয়েছে ভুক্তভোগীরা। পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করলেও এ নিয়ে চরম আতঙ্কে রয়েছে পরিবারটি।
শনিবার বিকেলে সুস্থ অবস্থায় স্বামীর সন্ধান ও দোষীদের বিচারের দাবি জানিয়েছেন নিখোঁজ নুর হোসেনের স্ত্রী নার্গিস বেগম।
তবে,স্থানীয় কোষ্টগার্ডের ক্যাম্প থেকে অভিযোগ অস্বীকার করে বলা হয়েছে,এ ঘটনার সঙ্গে তাদের কোন সদস্য জড়িত নয়।
এলাকাবাসী ও ভুক্তভোগীরা জানায়, উত্তর চর আবাবিল গ্রামের ১ নম্বর ওয়ার্ড দেওয়ান বাড়ির নুর হোসেনের কাছে পার্শ্ববর্তী কুচিয়ামারা গ্রামের মনোহর আলী ওরফে কুট্টি রাঢীসহ একদল লোক ৩০ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করে।
বৃহস্পতিবার সকালে তারা কয়েকজন বাড়িতে এসে ওই টাকা চেয়ে না পেয়ে চলে যায়। পরে ১২টার দিকে দলবল নিয়ে কোষ্টগার্ড পরিচয়ে তাদের বাড়িতে অতর্কিত হামলা করে। এসময় নুর হোসেন ও তার ভাই জাফর দেওয়ানের টিনসেট ঘর ও আলমিরা, চেয়ার-টেবিলসহ মালামাল ভাঙচুর করা হয়। তারা জাফরের ঘর থেকে ৫০ হাজার টাকা ও মোবাইল ফোন সেট লুটে নেয়। ঘটনার সময় নুর হোসেনকে বেদম মারধর করে তুলে নিয়ে যায়। এসময় পরিবারের সদস্যরা বাড়িতে ছিল না।
নিখোঁজ নুর হোসেনের স্ত্রী নার্গিস বলেন, কোষ্টগার্ড পরিচয় দিয়ে হামলার পর আমার স্বামী কুকুরের মতো পিটিয়ে তুলে নেয়া হয়েছে। হামলাকারীদের শরীরে কোষ্টগার্ডের পোশাক ছিল, তা অনেকে দেখেছে। তিনদিন ধরে স্বামীর খোঁজ পাচ্ছি না। আমি সুস্থ অবস্থায় স্বামীকে চাই। দুই সন্তান নিয়ে আমি এখন কার কাছে যাবো?
বক্তব্য জানতে মনোহর আলী ওরফে কুট্টি রাঢীর সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি।
উত্তর চর আবাবিল ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান শহিদ উল্যা বলেন, ঘটনাটি আমিও শুনেছি। এ ঘটনায় তাদের থানায় মামলা করার পরামর্শ দেয়া হয়েছে।
রায়পুরের চরআবাবিল রচিম উদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয়ে অবস্থিত কোষ্টগার্ড ক্যাম্পের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম বলেন, ঘটনাটি আমি অবগত নয়। হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনার সঙ্গে কোষ্টগার্ডের কোন সদস্য জড়িত নয় বলে দাবি করেন তিনি।
এ ব্যাপারে হায়দরগঞ্জ পুলিশ ফাঁড়ির উপপরিদর্শক রফিকুল ইসলাম বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করা হয়েছে। নুর হোসেন কোথায় আছে, তা খোঁজ নেয়ার চেষ্টা চলছে। হামলার ঘটনাটি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।