বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে বাণিজ্য ঘাটতি নিয়ে মন্তব্য করেছেন বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ। রোববার ঢাকায় বাংলাদেশ-ভারত সহযোগিতা বিষয়ক এক সম্মেলনে দেয়া বক্তব্যে তিনি প্রতিবেশী দেশটির সঙ্গে বাণিজ্য ঘাটতি প্রসঙ্গে বলেন, “এতে (আমদানিতে) আমাদের ক্ষতিটা কোথায়?”
বাংলা একাডেমিতে অনুষ্ঠিত এই সম্মেলনের আয়োজক ছিল ইতিহাস সম্মিলনী ও কলকাতার সেন্টার ফর ইস্ট অ্যান্ড নর্থইস্ট রিজিওনাল স্টাডিজ।
তোফায়েল বলেন, “চীনের সঙ্গে বাণিজ্য ঘাটতি নিয়ে কেউ কথা বলে না, সবাই শুধু ভারতের কথা বলে।”
ভারত থেকে আনা তুলা এবং কাপড়ে পোশাক তৈরি করেই বাংলাদেশ ইউরোপ ও যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে রফতানি করা হয় জানিয়ে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, “ভারত থেকে আমদানি করতে না পারলে দ্বিতীয় পছন্দ হত উজবেকিস্তান, যা অনেক দূরে। এর ফলে দামও (পোশাকের) বেড়ে যেত।”
সমালোচকদের বাস্তবতা বোঝার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, “ভারত যদি শুল্কমুক্ত সুবিধা না দিত, তাহলে আমাদের রফতানির সক্ষমতাই থাকত না।”
আলোচনায় অংশ নিয়ে সেন্টার পলিসি ডায়ালগের নির্বাহী পরিচালক মুস্তাফিজুর রহমানও বাণিজ্যমন্ত্রীর সঙ্গে সহমত পোষণ করেন।
তিনি বলেন, “শুল্কমুক্ত প্রবেশাধিকার না পেলে বাংলাদেশ ভারতের ৪৪৮ বিলিয়ন ডলারের বিশাল আমদানি বাজারের সুবিধা নিতে পারত না।”
ভারতের জন্য দুটি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল নির্মাণের বিষয় উল্লেখ করে মুস্তাফিজুর বলেন, “ভারতীয় উদ্যোক্তারা যখন বাংলাদেশে আসবে এবং এখান থেকে পণ্য রপ্তানি করবে, তখন পরিস্থিতি বদলে যাবে।”
ভারতের ক্রমবর্ধমান বাজারের সুবিধা নিতে হলে বাংলাদেশকে কার্যকর ‘হোমওয়ার্ক’ করে এগোনোর পরামর্শ দেন তিনি।
ঢাকায় এক সময় হাই কমিশনারের দায়িত্ব পালন করে যাওয়া পিনাক রঞ্জন চক্রবর্তী জানান, চীনের সঙ্গে ভারতের বাণিজ্য ঘাটতি ৫০ বিলিয়ন ডলার।
“কিন্তু এটি নিয়ে আমরা উদ্বিগ্ন নই। ভারতের বিশাল বাজার রয়েছে। সব দেশই এখানে ব্যবসা করতে আগ্রহী। বাংলাদেশকেও আন্তর্জাতিক বাজারের সঙ্গে প্রতিযোগিতা করতে হবে।”
ঐতিহাসিক বিভিন্ন ইস্যুতে দুই দেশের মধ্যে পুনরায় সংযোগ স্থাপনের ওপর গুরুত্ব দেন তিনি।
দুই দেশের বাণিজ্য বিশেষজ্ঞ, নিরাপত্তা বিশ্লেষক এবং সাবেক কূটনীতিকরা দিনব্যাপী এই সম্মেলনে অংশ নেন।
Prev Post
Next Post