বরিশালের উদয়ন মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে বিজ্ঞান বিভাগে পরীক্ষা দিয়েছিলো সর্বজিৎ ঘোষ।
গতকাল ফলাফর ঘোষনার পর দেখা গেলো সে ফেল করেছে। ১০ বিষয়ের মধ্যে চারটিতেই এ প্লাস।
কিন্তু ফেল করলো অপেক্ষাকৃত সহজ বিষয় হিন্দু ধর্ম শিক্ষায়। কঠিন কোন বিষয়ে ফেল নয় ফেল করেছে হিন্দু ধর্মে।
খবর পেয়ে সাত তলা দিয়ে লাফিয়ে পড়ে আত্মহত্যা করেছে সর্বজিৎ ঘোষ।
শুধু উদয়ন স্কুলের শিক্ষার্থীই নয় অনেক স্কুলের শিক্ষার্থীই ফেল করেছে হিন্দু ধর্ম শিক্ষায়।
বিষয়টি মানতে পারছেন না ওই সব প্রতিষ্ঠানের প্রধানরা। তারা বলছেন যে শিক্ষার্থী সব বিষয়ে এ প্লাস পায় সে কিভাবে হিন্দু ধর্ম শিক্ষায় ফেল করলো।
নগরীর উদয়ন মাধ্যমিক বিদ্যালয় ছাড়াও জিলা স্কুল, সরকারী বালিকা বিদ্যালয়, অক্সফোর্ড মিশন হাই স্কুল, বানারীপাড়া ইউনিয়ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়, খাঞ্জাপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়, সরফুন্নেচ্ছা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের একাধিক শিক্ষার্থী ফেল করেছে হিন্দু ধর্ম শিক্ষায়।
সরকারী বালিকা বিদ্যালয়ের ঐশ্বি সরকার (১৪৮২৬৯) ৭ বিষয়ে এ প্লাস পেয়ে শেষ পর্যন্ত ফেল করেছে হিন্দু ধর্মে।
শিক্ষাবোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক মু. শাহ আলমঙ্গীর জানান গতকাল অনেকে এ বিষয়টি নিয়ে আমার কাছে এসেছিলেন। তারা নিয়ম অনুযায়ী আবেদন করেছেন।
যারা হিন্দু ধর্মে ফেল করেছে তারা লিখিত পরীক্ষায় নয় বহুনির্বাচনী পরীক্ষায় ফেল করেছেন। কোথাও যদি ত্রুটি থেকে থাকে তাহলে দ্রুত সমাধানের চেষ্টা করা হবে।
এ ব্যাপারে শিক্ষাবোর্ডের চেয়ারম্যান প্রফেসর মু. জিয়াউল হকের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন হিন্দু ধর্ম বিষয়ে সমস্যাটা খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেবো।
এদিকে হিন্দু ধর্মে ফেল ও এক ছাত্রের আত্মহত্যা নিয়ে জেলা প্রশাসনের ফেসবুক গ্রুপে পোস্ট দেওয়ার পরে জেলা প্রশাসক পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকের সাথে কথা বলেন।
গত রাতে জেলা প্রশাসক ড. গাজী মোঃ সাইফুজ্জামান ফেসবুক গ্রুপ বরিশালের সমস্যা ও সম্ভাবনায় লিখছেন “বরিশাল শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক মহোদয়ের সঙ্গে আলোচনা সূত্রে অবহিত করা যাচ্ছে যে, এসএসসি পরীক্ষা (২০১৬8217) ফলাফল বিশ্লেষনে একটি বিষয়ের নম্বরে অবজেক্টিভ অংশে অস্বাভাবিক কম নম্বর আসাতে ফলাফলে অস্বাভাবিক প্রভাব পড়েছে। বিষয়টি দ্রুত নিরীক্ষা করা হচ্ছে।
সকলের সহনশীলতা ও ধৈর্য কাম্য।পরীক্ষার্থী, অভিভাবক, শিক্ষক ও সংশিষ্ট সকলের সচেতনতা কাম্য।
রাতে পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক মুহম্মিদ শাহ আলমঙ্গীর ফেসবুকে লিখছেন, প্রত্যাশিত ফলাফল না পেলে অথবা ফলাফলে কোনো ভুল দেখা গেলে পুনঃনিরীক্ষণের আবেদন করার সুযোগ রয়েছে ।
কিন্তু হিন্দু ধর্ম ও নৈতিক শিক্ষা (১১২) বিষয়ে যারা অকৃতকার্য হয়েছো তারা ১৫/০৫/২০১৬ তারিখের মধ্যে সাদা কাগজে পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক বরাবর আবেদন করলেই চলবে । একই স্কুলের একাধিক পরীক্ষার্থীর বেলায় এটি ঘটে থাকলে প্রধান শিক্ষক একটি আবেদনে সকলের নাম দিতে পারেন ।
আবেদনপত্রে পরীক্ষার্থীর নাম, রোল,রেজিস্ট্রেশন নম্বর এবং বিষয় কোড উল্লেখ থাকতে হবে । প্রিয় পরীক্ষার্থীরা, তোমাদের প্রাপ্য ফল তোমরা অবশ্যই পাবে । বিষয়টিকে গুরুত্ব দিয়ে প্রচার করার জন্য জেলা প্রশাসক মহোদয়কে সকৃতজ্ঞ ধন্যবাদ।