বজ্রপাতে ৩২ জনের মৃত্যু

0

bojroতীব্র তাপপ্রবাহের পর স্বস্তির বৃষ্টি নেমেছে সারাদেশে। কিন্তু স্বস্তির বৃষ্টির দিনে সারাদেশে বজ্রপাতে মারা গেছেন ৩২ জন।
বৃষ্টিতে স্বস্তি ফিরলেও বজ্রপাতে রাজধানীসহ ১৪ জেলায় ৩২ জনের মৃত্যু হয়েছে। রাজধানীর যাত্রাবাড়ীতে ফুটবল খেলার সময় বজ্রপাতে মারা গেছেন দুই শিক্ষার্থী। গাজীপুরে কৃষিশ্রমিক ও গৃহবধূ, হবিগঞ্জে যুবক, নীলফামারীতে গৃহবধূ, পাবনায় নানা-নাতনিসহ ছয় জন, রাজশাহীতে তিন জন, নাটোরে গৃহবধূ ও যুবক, ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় তিনজন, সিরাজগঞ্জে শিক্ষকসহ ৫ জন, নরসিংদীতে জেলে, কিশোরগঞ্জে কলেজছাত্র ও শ্রমিক রয়েছেন।
রাজধানীর যাত্রাবাড়ীর কোনাপাড়ার কাঠেরপুল এলাকায় বিকেলে ফুটবল খেলার সময় বজ্রপাতে মারা গেছেন দুই শিক্ষার্থী। এরা হলেন— রুম্মান হাসান লিঙ্কন (২১) ও সাহেদ ওরফে সোহাগ (২১)। সোহাগ আহসান উল্লাহ বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার সায়েন্স বিভাগের শিক্ষার্থী ছিলেন আর লিঙ্কন পলিটেকনিক্যালে পড়তেন বলে পুলিশ জানিয়েছে।
জানা গেছে, বিকেল ৫টার দিকে তারা কয়েক বন্ধু কোনাপাড়ার কাঠেরপুল এলাকার কনকর্ড বালুর মাঠে ফুটবল খেলতে যান। সন্ধ্যার আগে বৃষ্টি শুরু হয়। সে সময় প্রচণ্ড শব্দে বজ্রপাত হলে লিংঙ্কন আর সোহাগ অচেতন হয়ে যায়। পরে তাদের ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়ার পর চিকিৎসক তাদের মৃত ঘোষণা করেন। লিঙ্কন ও সোহাগ দু’জনই পরিবারের সঙ্গে যাত্রাবাড়ীর কাজলায় থাকেন। লিঙ্কনের গ্রামের বাড়ি মুন্সীগঞ্জ। তার বাবার নাম বাদল মোল্লা। সোহাগের বাবার নাম নিজাম উদ্দিন।
আমাদের সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি জানান, রায়গঞ্জ ও উল্লাপাড়া উপজেলায় বজ্রপাতে শিক্ষক, নারী ও শিশুসহ পাঁচজন মারা গেছেন।
এরা হলেন— রায়গঞ্জ উপজেলার চকপুর গ্রামের নূর নবীর মেয়ে নূপুর খাতুন (৮), বৈকণ্ঠপুর গ্রামের দারুজ্জামানের ছেলে কৃষক আবদুল মোতালেব (৪২) ও হাসিল মাদরাসার সহকারী শিক্ষক আনোয়ার হোসেন (৪৫) এবং উল্লাপাড়া উপজেলার শিমলা গ্রামের আবদুল লতিফ (৩৫) ও বেতুয়া গ্রামের গৃহবধূ শাহিনুর বেগম (৩০)।
আমাদের গাজীপুর প্রতিনিধি জানান, কাপাসিয়া উপজেলায় মো. সাত্তার আলী (২৬) ও রুবিনা (৪০) বজ্রপাতে মারা যান। সাত্তার আলী কাপাসিয়া উপজেলার উত্তরখামের গ্রামে আব্দুর রশীদের জমিতে ধান কাটছিলেন।
বিকেলে বজ্রপাত হলে কুড়িগ্রাম জেলার নাগেশ্বরী উপজেলার সাতান্না গ্রামের সাত্তার ঘটনাস্থলেই মারা যান। প্রায় একই সময় খিরাটি গ্রামের কাজল মিয়ার স্ত্রী গৃহবধূ রুবিনা মাঠ থেকে গরু নিয়ে ফেরার পথে বজ্রাঘাতে মারা গেছেন।
আমাদের হবিগঞ্জ প্রতিনিধি জানান, বানিয়াচং উপজেলার প্রতাপপুর গ্রামে গতকাল বিকেলে বজ্রপাতে হাবিব মিয়া (২৫) নামের এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে। হাবিব ওই গ্রামের শেখ তাজুল মিয়ার ছেলে। তিনি সে সময় বাড়ির পাশে হাওরে ধান কাটছিলেন।
আমাদের নীলফামারী প্রতিনিধি জানান, কিশোরগঞ্জ উপজেলায় গতকাল দুপুরে বজ্রপাতে লালবিবি বেগম (৩৪) নামের এক গৃহবধূ মারা গেছেন। তিনি উপজেলার মাগুড়া ইউনিয়নের ফুলের ঘাট গ্রামের আলম হোসেনের স্ত্রী।
রাজশাহী ব্যুরো জানায়, মোহনপুরে বজ্রপাতে তিনজন মারা গেছেন। এ সময় আহত হন আরো ছয়জন। নিহতরা হলেন— আতা নারায়ণপুর গ্রামের আবদুর রাজ্জাক (২৮), হাততৈড় গ্রামের আবদুল আজিজ (৫০) ও ডাঙ্গাপাড়া গ্রামের শ্রী সৈত চন্দ্র (৩০)।
আমাদের নাটোর প্রতিনিধি জানান, লালপুর উপজেলায় বজ্রপাতে দু’জন মারা গেছেন। তারা হলেন— রঘুনাথপুর গ্রামের মোবারক হোসেন (৩৫) ও উত্তর লালপুর গ্রামের সাহারা বানু (৪৮)। মোহাম্মাদ আলীর ছেলে মোবারক ও পান্টু আলীর স্ত্রী সাহারা বানু।
বাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি জানান, জেলার বাঞ্ছারামপুর উপজেলায় বজ্রপাতে তিনজনের মৃত্যু হয়েছে। তারা হলেন—উপজেলার চরশিবপুর গ্রামের সফিকুল ইসলাম, ইছাপুর গ্রামের সামছুল ইসলাম ও কানাইনগর গ্রামের কবির হোসেন। দুপুরে সফিকুল ও সামছুল মাঠে ধান কাটছিলেন। এ সময় বজ্রপাতে ঘটনাস্থলেই তারা মারা যান। আর কানাইনগর গ্রামের কবির নদী থেকে গোসল করে বাড়ি ফিরছিলেন। এ সময় বজ্রপাতে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়।
নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি জানান, মেঘনা নদীতে মাছ ধরার সময় বজ্রপাতে বলরাম দাস (৫০) নামে এক জেলের মৃত্যু হয়েছে। তিনি নরসিংদীর সদর উপজেলার দোয়ানী গ্রামের বাসিন্দা। মাছ ধরার সময় বজ্রপাতে বলরাম মারা যান।
আমাদের পাবনা প্রতিনিধি জানান, সুজানগর উপজেলায় বজ্রপাতে নানা-নাতনিসহ ৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। চাটমোহরেও দুই ব্যক্তি মারা গেছেন। এরা হলেন— চাটমোহরের বারকোনা গ্রামের ফজলুর রহমান, রাউতকান্দি গ্রামের হাজী ছকির উদ্দিন, সুজানগরের বাঘুলপুর গ্রামের ময়েন সর্দার ও তার নাতনি শিখা খাতুন, দক্ষিণচর গ্রামের শহীদ সর্দার ও স্কুলছাত্র হীরা।
আমাদের কিশোরগঞ্জ প্রতিনিধি জানান, হোসেনপুর ও বাজিতপুরে বজ্রপাতে কলেজছাত্র শরীফুল ইসলাম শুভ ও শ্রমিক স্বপন মিয়া মারা গেছেন।
এছাড়াও বগুড়ার শেরপুরে আনোয়ার হোসেন, পিরোজপুরের মঠবাড়িয়ায় ইউনুস সিকদার, নওগাঁর আত্রাইয়ে জয়নাল উদ্দিন, নেত্রকোনার পূর্বধলায় রুবেল মিয়া মারা গেছেন।

Leave A Reply

Your email address will not be published.

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More