[ads1]ঢাকা : বর্তমান কারিকুলামে পাঠ্যবই লেখার পদ্ধতি ভালো না বলে মন্তব্য করেছেন অধ্যাপক ড. জাফর ইকবাল। শিক্ষার্থীদের বোঝার ক্ষমতার তুলনায় তা বেশ কঠিন বলে মনে করেন তিনি। উদাহরণ টেনে তিনি বলেছেন, ‘নবম শ্রেণির বিজ্ঞানের বই আমি নিজে বুঝে উঠতে পারিনি, বাচ্চারা কীভাবে বুঝবে?’
বৃহস্পতিবার (২৬ মে) রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে আয়োজিত শিক্ষা মন্ত্রণালয় আয়োজিত ‘মাধ্যমিক শিক্ষার মানোন্নয়নে করণীয়’ শীর্ষক মতবিনিময় সভায় তিনি মন্তব্য করেন।
মতবিনিময় সভায় অধ্যাপক ড. জাফর ইকবাল তিনটি বিষয়কে শিক্ষার ভিত্তি হিসেবে আখ্যায়িত করেন। ভিত্তিগুলো হল, শিক্ষক, বই এবং পরীক্ষা। তিনি বলেন, ‘শিক্ষকের বিষয়টিতে নিয়ে আমি কিছু বলবো না। কারণ এ দিক দিয়ে আমরা খুবই দুর্বল। জিডিপির ৬ শতাংশ শিক্ষা খাতে ব্যয় হলে ভালো শিক্ষক পাওয়া সম্ভব হবে।’
তিনি বলেন, ‘পাঠবই সহজভাবে লেখা উচিৎ। যেন শিক্ষক না পড়ালেও শিক্ষার্থী নিজে নিজে পড়ে বুঝতে পারে।’ দ্রুত ‘নষ্ট হয়ে’ যায়, তাই যত্ন নিয়ে পাঠ্যবই তৈরি করার কথাও বলেন জাফর ইকবাল। তিনি বলেন, ‘ভালোভাবে বই ছাপলে এক বই সাত থেকে আট বছর ধরে পড়ানো যায়।’
এসময় প্রশ্নের মান নিয়ে প্রশ্ন তোলেন এ শিক্ষাবিদ। তিনি বলেন, ‘আমাদের প্রশ্নের মান ভালো না, ভুল থাকে। যে ছবিগুলো দেয়া হয় সেগুলো অস্পষ্ট থাকে। কর্তৃপক্ষ চাইলে বিশেষজ্ঞদের মাধ্যমে প্রশ্ন প্রণয়নের কাজটি করতে পারে। টাকাও বেশি খরচ হওয়ার কথা না।’ পরীক্ষা পদ্ধতিটাই প্রশ্নবিদ্ধ বলেও মন্তব্য করেন জাফর ইকবাল।[ads1]
এমসিকিউ প্রসঙ্গে ড. জাফর ইকবাল একবাক্যে বলেন, ‘এমসিকিউ তুলে নেয়া উচিত। এর কোনো প্রয়োজনীয়তা নেই।’
এসময় শিক্ষাবিদ ড. ফরাস উদ্দিন বলেন, ‘কারিকুলাম ভারি হয়ে গেছে। দেখা গেছে নবম শ্রেণির পড়া, একাদশে আবার অনার্সে পড়ানো হচ্ছে। এতে করে এক পড়া তিন চার জায়গায় পড়ানো হচ্ছে। যার কোনো প্রয়োজন নেই। বেসিক বিষয়গুলো যুক্ত করে বাড়তি বিষয় বাদ দেয়া উচিত। কারণ বাড়তি বিষয় শেখানোর জন্য এখন আইসিটিতে আমাদের অনেক উন্নতি হয়েছে। এজন্য বই ভারি করার কোনো অর্থ হয় না।’
শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদের সভাপতিত্বে মতবিনিময় সভায় বক্তব্য দেন- অধ্যাপক আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ, অধ্যাপক ড. জাফর ইকবাল, ড. ফরাস উদ্দিন, অধ্যাপক মোহাম্মদ কায়কোবাদ, সুলতানা কামাল, রাশেদা কে চৌধুরী প্রমুখ।
মতবিনিময় সভায় বক্তরা বলেন, ৫ম শ্রেনিতে ৬ টি বই। ৬ষ্ঠ শ্রেণিতে ১২টি বই। আবার দেখা যায় স্কুলের শিক্ষকরা বই লিখে ক্লাসে অন্তর্ভুক্ত করে দেয়। এতে দেখা যায় বই ১৮ থেকে ২০ হয়ে গেছে। এসব অপ্রয়োজনীয় বই বাদ দিতে হবে।
সৃজনশীলের নামে বইগুলোকে জটিল করা হয়েছে। এর থেকে মুক্তি পেতে চমৎকার বই প্রণয়ন করতে হবে। পিইসি, জেএসসির নামে কোচিং গাইড বাণিজ্যের সুযোগ হয়েছে। এগুলো বন্ধ করতে শ্রেণি পাঠের উপর গুরুত্বারোপ করেন বক্তরা।[ads2]