অস্ট্রেলিয়ায় চালু হচ্ছে সর্বপ্রথম সুদহীন ইসলামী ব্যাংক (IBA)। এরই মধ্যে বিশেষ বিবেচনায় প্রথমবারের মতো প্রুডেনশিয়াল রেগুলেশন কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে ‘সীমিত’ লাইসেন্স পেয়েছে ব্যাংকটি।
যুক্তরাজ্যভিত্তিক সংবাদমাধ্যম দ্য ডেইলি মেইল জানায়, ধর্মীয় বিধি-নিষেধের কারণে অস্ট্রেলিয়ায় বসবাসরত আট লাখ মুসলিম সুদের লেনদেন করতে পারেন না। তাই বৈধ লেনদেনের ক্ষেত্রে ব্যাংকটি মুসলিমদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। এখন থেকে এই ব্যাংকের মাধ্যমে বাড়ির মালিকানা লাভ করতে পারবেন মুসলিমরা। মুসলিম গ্রাহকদের জন্য ব্যাংকটি হোম ফাইন্যান্স, সেভিংস, অ্যাকাউন্টসহ বিভিন্ন সেবা দেবে।
সূত্রে জানা যায়, ব্যাংকটির মূলধনের পরিমাণ ১৪.৬ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। এর অর্ধেক বিনিয়োগ করেছেন অস্ট্রেলিয়ার মুসলিম এবং বাকিটুকু মধ্যপ্রাচ্যের ধনী দেশ সংযুক্ত আরব আমিরাতের কিছু ব্যক্তি। ব্যাংকটি পুরোপুরি চালু হওয়ার আগে সীমিতসংখ্যক আট হাজার ক্লায়েন্টের মাধ্যমে পরীক্ষামূলক চালু হবে।
ব্যাংকটির সিইও ডিন গিলেস্পি বলেছেন, ‘বাড়ির ক্ষেত্রে এই ব্যাংকের আর্থিক কার্যক্রম ‘যৌথ মালিকানা’-এর প্রক্রিয়া অনুসরণ করবে। এর অর্থ হলো- সম্পত্তি ব্যাংকের অধীনে থাকাকালে সুদের পরিবর্তে গ্রাহকদের কাছ থেকে ভাড়া নেয়া হবে। গ্রাহকরা ব্যাংকে ২০ শতাংশ জমা দিয়ে লেনদেন শুরু করতে পারবে। এর মাধ্যমে তারা বাড়ির ২০ শতাংশের মালিক হয়েছে এবং ব্যাংক বাকি ৮০ শতাংশের মালিক হবে। এখন আমরা গ্রাহককে সময়ের সাথে সাথে সেই সম্পত্তির আরো শেয়ার ক্রয়ের সুযোগ দিই। ’
ডিন গিলেস্পি আরো বলেন, ‘গ্রাহক ভাড়া দেয়ার মাধ্যমে সম্পত্তিতে তার মালিকানার অংশ বৃদ্ধি পেতে থাকবে। এরপর ধীরে ধীরে পুরো বাড়ির মালিক হবে। ইসলামী নির্দেশনা মতে, মদ ও জুয়া সংশ্লিষ্ট লেনদেন এসব ব্যাংক করতে পারবে না। তারা শুধু সেই ব্যবসা-বাণিজ্যের সাথে সম্পৃক্ত হবে, যা জলবায়ুবান্ধব নীতিগুলো প্রচার করছে।
তিনি বলেন, ‘অনেকে নিজ বাড়িতে নিরাপদে অর্থ জমা রাখার চেষ্টা করেন। কারণ তারা কনভেনশনাল ব্যাংকে অর্থ রাখতে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেন না। আশা করি আমরা তাদের জন্য কিছু করতে পারব। শুধু মুসলিম জনগোষ্ঠী নয়, বরং অমুসলিমরাও ইসলামী ব্যাংকিং পদ্ধতিকে পছন্দ করেন। কারণ সুদ আদায়ের চেয়ে তাদের কাছে ভাড়া আদায়ের পদ্ধতি অনেক পছন্দের। ’
জানা যায়, দুই বছরের জন্য সীমিত গ্রাহকদের মধ্যে পরীক্ষামূলক লেনদেন কার্যক্রম পরিচালনার জন্য ব্যাংকটিকে লাইসেন্স দিয়েছে অস্ট্রেলিয়ার প্রুডেনশিয়াল রেগুলেশন অথোরিটি। এরপর পূর্ণাঙ্গ লাইসেন্সের জন্য আবেদন করতে পারবে ব্যাংকটি। ২০২৪ সালের মধ্যে ব্যাংকটি পূর্ণাঙ্গ চালু হবে বলে আশা করছে কর্তপক্ষ।
সূত্র : ডেইলি মেইল, আন-নাস নিউজ ও অন্যান্য