নির্বাচনের আগেই যেন ব্যালট বাক্স না ভরে: জাপানি রাষ্ট্রদূত

0

নির্বাচনের আগের রাতে ব্যালট বাক্স ভরে রাখার মতো ঘটনা না ঘটা এবং একটি সুষ্ঠ ও সুন্দর নির্বাচনের প্রত্যাশা করেছেন বাংলাদেশে নিযুক্ত জাপানের রাষ্ট্রদূত ইতো নাওকি।

সেন্টার ফর গভর্নেন্স স্টাডিজ (সিজিএস) এবং ফ্রেডরিক-অ্যাবার্ট-স্টিফটুং (এফইএস) আয়োজিত ‘মিট দ্য অ্যাম্বাসেডর’ আয়োজনে তিনি এ প্রত্যাশা জানান।

সোমবার (১৪ নভেম্বর) রাজধানীর গুলশানে হোটেল খাজানাতে আয়োজনটি অনুষ্ঠিত হয়।

এ সময় আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন সম্পর্কে তিনি বলেন, নির্বাচন নিয়ে বৈশ্বিকভাবে জাপানের মতামতের একটা গুরুত্ব রয়েছে। এর আগে আমরা নির্বাচনের আগের রাতে ব্যালট বাক্স ভরে রাখার কথা শুনেছি, যা পৃথিবীর আর কোথাও শুনিনি। আমি আশা করবো এবার তেমন সুযোগ থাকবে না বা এমন ঘটনা ঘটবে না। এ বিষয়ে দেশের পুলিশ কর্মকর্তারা আরও সতর্ক হবেন বলে আশা করি। এছাড়া আমরা একটি সুষ্ঠ এবং সুন্দর নির্বাচন প্রত্যাশা করি। আর বাংলাদেশের উন্নয়ন ও অগ্রযাত্রা চলমান রাখতে আগামী নির্বাচনে গণতান্ত্রিকভাবে সকল রাজনৈতিক দলের অংশগ্রহণ গুরুত্বপূর্ণ।

বাংলাদেশের সঙ্গে জাপানের সম্পর্কের কথা উল্লেখ করে ইতো নাওকি বলেন, জাপান বর্তমানে বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় উন্নয়ন সহযোগী। বাংলাদেশ অর্থনৈতিক উন্নয়নের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। এতে আরও অনেক অবকাঠামো নির্মাণের প্রয়োজন পড়বে। এই উন্নয়নের যাত্রায় জাপান-জাইকা বাংলাদেশের পাশে থাকবে। গুণগত অবকাঠামো উন্নয়নে জাপান সহায়তা অব্যাহত রাখবে, বিশেষত ঢাকা, চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার বাণিজ্যিক করিডরে। আমরা এই মহা-উৎসবে আসতে পেরে আনন্দিত।

মিয়ানমার থেকে জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের সুরক্ষা ও মানবিক সহায়তা দান এবং রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে জাপানের সহায়তার কথাও এ সময় উল্লেখ করেন তিনি।

এ বিষয়ে জাপানি রাষ্ট্রদূত ইতো নাওকি বলেন, কক্সবাজার ও ভাসানচর ক্যাম্পে বসবাসরত রোহিঙ্গাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ এবং জীবন পরিচালনামূলক সেবাগুলোর সুযোগ অব্যাহত রাখতে জাপান সরকার কাজ করছে। জাপান তাদের মানবিক সহায়তা কার্যক্রম অব্যাহত রাখবে এবং আইনি ও সম্প্রদায়-ভিত্তিক সুরক্ষা দান, স্বাস্থ্য, স্বাস্থ্যবিধি ও স্যানিটেশন, পুষ্টি সহায়তা এবং ত্রাণের মতো মূল গুরুত্বপূর্ণ পরিষেবাগুলোর ওপর দৃষ্টি দেবে। এটি ভাসানচরে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর সুরক্ষা, স্বাস্থ্যসেবা ও জীবিকার সুযোগ উন্নত করবে এবং কক্সবাজারে তাদের নিরাপত্তা বাড়াবে। এ বিষয়ে জাপানের প্রাইভেট কোম্পানিও কাজ করছে। আমি মনে করি এই মানুষগুলোর জীবনমান উন্নয়নে বাংলাদেশি প্রতিষ্ঠানগুলোরও আরও এগিয়ে আসা উচিত।

খেলাধুলা নিয়ে রাষ্ট্রদূত বলেন, জাপান বাংলাদেশে বেসবল খেলার একটি সুন্দর প্রচলন করতে যাচ্ছে। বাংলাদেশ বেসবল দল একদিন এশিয়ার সেরা দলে পরিণত হবে। বাংলাদেশের খেলোয়াড়দের মধ্যে অনেক প্রতিভা আছে। সেই প্রতিভাকে কাজে লাগিয়ে ওয়েস্ট এশিয়া কাপে শ্রেষ্ঠত্ব অর্জনের মধ্যে দিয়ে এশিয়ান গেমসে সুযোগ করে নেবে বাংলাদেশ। জাপানের পেশাদার বেসবল ক্লাব ইওমরি জায়ান্টস কর্তৃক বাংলাদেশ দলকে ট্রেনিং প্রোগ্রামেও নেওয়া হয়েছে। খেলোয়াড়দের উন্নয়নে প্রশিক্ষণ শুরু করা হয়েছে।

এ সময় আগুনের পরশমনি ছোঁয়াও প্রাণে গানটি গেয়ে বাঙালি সংস্কৃতির প্রশংসা করেন তিনি। এ বিষয়ে রাষ্ট্রদূত বলেন, আমি প্রতিরাতে রবীন্দ্রসংগীত শুনি। কিছু কিছু অর্থ বুঝি না, তবুও এটি আমাকে টানে। রবীন্দ্রসংগীতের সঙ্গে জাপানের ফোক গানের একটা মিল আছে। আমি এটা পছন্দ করি। আর অ্যাম্বাসির কাজ খুব একঘেয়ে কাজ, সেখানে রবীন্দ্রসংগীতই আমাকে একটু শান্তি দেয়।

উৎসঃ বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর

Leave A Reply

Your email address will not be published.

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More