বিশ্বখ্যাত মোবাইল ফোন ব্র্যান্ড শাওমি বাংলাদেশের কারখানায় ফোন উৎপাদন বন্ধ করে দিয়েছে। বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে,মোবাইল ফোনের বিক্রি অস্বাভাবিক হারে কমে যাওয়া, ডলার সংকটে কাঁচামাল আমদানি করতে না পারায় এমন পদক্ষেপ নিয়েছে তারা। তবে সূত্র বলছে,শাওমি মোবাইলের স্টক যথেষ্ট পরিমাণে রয়েছে।
এসব বিষয়ে জানার জন্য শাওমি টেকনোলজিস বাংলাদেশ প্রাইভেট লিমিটেডের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে কর্তৃপক্ষের তরফে কোনও মন্তব্য পাওয়া যায়নি।
মোবাইল শিল্পখাত নিয়ে বাংলাদেশ মোবাইল ফোন ইমপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমপিআইএ) সাধারণ সম্পাদক জাকারিয়া শহীদের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন,আমরা খবর পেয়েছি শাওমির মোবাইল ফোন তৈরির কারখানায় উৎপাদন বন্ধ হয়ে গেছে। প্রতিষ্ঠানটি কারখানাও গুটিয়ে ফেলেছে। শুনেছি তারা শেয়ার ট্রান্সফার করছে। তারা আসলে এখনও ঠিক করেনি কী করবে। কীভাবে এগোবে। এছাড়া অনেক প্রতিষ্ঠান উৎপাদন কমিয়েছে।
২০২১ সালের ২১ অক্টোবর রাজধানীর একটি পাঁচ তারকা হোটেলে এক অনুষ্ঠানে দেশে মোবাইল উৎপাদন কারখানার ঘোষণা দেয় শাওমি। গাজীপুরের ওই কারখানায় ২০২২ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত মোবাইল উৎপাদন হলেও চলতি মাস থেকে উৎপাদন বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
নোকিয়ার কারখানায় মোবাইল উৎপাদন নিয়েও বিভিন্ন গুঞ্জন রয়েছে। প্রতিষ্ঠানটি ২০২১ সালের সেপ্টেম্বরের মাঝামাঝি নিজস্ব কারখানায় মোবাইল ফোন তৈরি শুরু করে। যুক্তরাজ্যভিত্তিক ভাইব্র্যান্ট সফটওয়্যার ও বাংলাদেশের ইউনিয়ন গ্রুপের জয়েন্ট ভেঞ্চার ভাইব্র্যান্ট সফটওয়্যার (বিডি) লিমিটেড। গাজীপুরের কালিয়াকৈরের বঙ্গবন্ধু হাইটেক সিটির পাঁচ নম্বর ব্লকে পাঁচ একর জমি বরাদ্দ নিয়ে কারখানা গড়ে তুলেছে ভাইব্র্যান্ট। বিটিআরসি সূত্রে জানা যায়,সম্প্রতি প্রতিষ্ঠানটি টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিটিআরসিতে শেয়ার ট্রান্সফারের জন্য আবেদন করে। কারখানায় মোবাইল উৎপাদন নিয়ে কী করবে সেটি এখনও ঠিক করেনি তারা।
মোবাইল ব্র্যান্ড স্যামসাং ও ভিভো তাদের কারখানায় উৎপাদন কমিয়েছে। ফেয়ার গ্রুপের (স্যামসাংয়ের দেশীয় উৎপাদক প্রতিষ্ঠান) প্রধান বিপণন কর্মকর্তা মোহাম্মদ মেসবাহ উদ্দিন বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন,আমরাও শুনেছি শাওমির কারখানা বন্ধ হয়ে গেছে। অন্যরা (মোবাইল ফোনের কারখানা) তাদের উৎপাদন কমিয়ে দিয়েছে।
স্যামসাংয়ের কারাখানায় উৎপাদন ডিসেম্বর মাসে কি বন্ধ ছিল?—এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন,আমাদের কারখানায় উৎপাদন বন্ধ ছিল না। তবে আমরা পরিমাণ কমিয়ে দিয়েছি। আগে মাসে ২৫-২৬ দিন উৎপাদন হতো। বর্তমানে তা ১০-২০ দিনে নেমে গেছে।
বিক্রি কমেছে ৫০ শতাংশ
দেশে মোবাইল ফোনের বিক্রি কমেছে ৫০ শতাংশের বেশি। আগে যেখানে প্রতি মাসে ১০ লাখ স্মার্টফোন বিক্রি হতো বর্তমানে তা পাঁচ থেকে সাড়ে পাঁচ লাখে নেমে এসেছে।
বাজার সংশ্লিষ্টরা বলছেন,বাজারে গ্রে মার্কেটের (অবৈধ বাজার) আকার বড় হচ্ছে দিন দিন। এই মার্কেটে শাওমি এবং স্যামসাং উভয় ফোনের বাজারের আকার ৪০ শতাংশের বেশি। অন্যান্য ব্র্যান্ডের ফোন অবশিষ্ট বাজার দখল করে আছে। বাজারে চ্যানেল প্রোডাক্টের (বৈধ মোবাইল ফোন) দাম বেড়ে যাওয়ায় গ্রে মার্কেটের আকার বড় হতে শুরু করে যা এখনও অব্যাহত আছে।