চট্টগ্রামে বিএনপির সমাবেশ থেকে পুলিশকে বারবার ধন্যবাদ দেওয়ায় বিব্রতকর পরিস্থিতিতে পড়েছেন পুলিশ কর্মকর্তারা।
আজ শনিবার কোতয়ালী থানাধীন নূর আহমদ সড়কের দলীয় কার্যালয় নাসিমন ভবনের সামনে বিএনপির সমাবেশ থেকে নগর বিএনপির আহ্বায়ক ডা. শাহাদাত হোসেন চৌধুরী এবং নগর বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক আবুল হাসেম বক্কর মাইকে বারবার পুলিশ ও প্রশাসনকে ধন্যবাদ জানান।
তবে সিএমপির দক্ষিণ বিভাগের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা সমাবেশ থেকে মাইকে এমন ঘোষণা দেওয়াকে ‘বিব্রতকর’ বলে মন্তব্য করেছেন।
তারা বলছেন, গত বছর ঘোষণা দিয়ে পুলিশকে হুমকি দেওয়া এবং গত মাসে পুলিশের ওপর হামলা করে আহত করার পর আজ প্রকাশ্যে এভাবে ধন্যবাদ দেওয়া স্বাভাবিক নয়।
পরিচয় প্রকাশে অনিচ্ছুক পুলিশের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘সমাবেশ থেকে মোট ৮ বার আমাদের (পুলিশকে) ধন্যবাদ জানানো হয়েছে। আমি জানিনা কেন এটা করা হলো। আমরা আমাদের দায়িত্ব পালন করতেই এখানেই এসেছি। এমনটা নয় যে আমরা বাড়তি কিছু দিয়েছি। সমাবেশে পুলিশ সতর্ক অবস্থায় ছিল যাতে করে কেউ নাশকতা করতে না পারে।’
বর্তমান সরকারের পদত্যাগ, সংসদ বিলুপ্ত ঘোষণা, নির্দলীয় নিরপেক্ষ অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ব্যবস্থা পুন:প্রতিষ্ঠাসহ ১০ দফা দাবিতে চট্টগ্রামে বিএনপির বিভাগীয় এই সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান। প্রধান বক্তা হিসেবে ছিলেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল নোমান।
সমাবেশ শেষে ডা. শাহাদাত হোসেন বলেন, ‘আমরা প্রশাসনকে ধন্যবাদ দিতে চাই। তারা আমাদের সমাবেশ সফল করতে সাহায্য করেছেন। সমাবেশ সফল করতে নেতাকর্মীদের সমাবেশ স্থলে আসতে দেওয়ায় আমি আমাদের পুলিশ ভাইদের ও প্রশাসনকে ধন্যবাদ দিতে চাই।’
অন্যদিকে সমাবেশ শেষে পুলিশের দায়িত্বরত ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করেন নগর বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক আবুল হাসেম বক্কর। এসময় মঞ্চের পাশে রাস্তার ওপারে দাঁড়িয়ে থাকা কোতয়ালী থানার ওসি জাহেদুল কবির ও এবং অতিরিক্ত উপ পুলিশ কমিশনার (দক্ষিণ) নোবেল চাকমার সঙ্গে দেখা করেন। সেখানেও তিনি মৌখিকভাবে তাদের আবার ধন্যবাদ জানান।
এদিকে পুলিশের কর্মকর্তারা বলছেন, গত ১৬ জানুয়ারি বিএনপির সমাবেশ থেকে পুলিশের ওপর হামলা এবং সংঘর্ষের ঘটনায় শাহাদাত, আবুল হাসেম বক্করসহ অনেক নেতাকর্মীদের আসামি করে ৪টি মামলা হয়েছে। মামলা থেকে বাঁচতে গিয়ে গা ঢাকা দেন শাহাদাত, বক্করসহ অন্যান্য নেতাকর্মী। কয়েকজন গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে আছেন। মামলার আসামিদের ধরতে বাসায় বাসায় অভিযান চালায় পুলিশ।
পরে উচ্চ আদালত থেকে জামিনের পর আবারও সামনে আসেন শাহাদাত ও বক্কর।
পুলিশ কর্মকর্তাদের দাবি, সেই মামলার কথা মনে করেই পুলিশের সঙ্গে সুসম্পর্ক করতে এভাবে জনসম্মুখ্যে পুলিশের প্রশংসা করেছেন শাহাদাত ও আবুল হাসেম বক্কর ।
এর আগে গত বছরের ১৩ অক্টোবর চট্টগ্রামের বিভাগীয় সমাবেশের পর এক সংবাদ সম্মেলনে শাহাদাত বলেন, ‘যারা বিনা ওয়ারেন্টে, বিনা কারণে, আমাদের নেতা কর্মীদের গ্রেপ্তার করছেন, নির্যাতন করছেন আমরাও তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নিবো। তাদের বিরুদ্ধে আমরা মামলা করবো এবার ছাড় দেওয়া হবে না।’