মুহুর্মুহু পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞাপর পরও দেদারছে রাশিয়ার তেল কিনছে ভারত। আর রুশ তেল কেনার বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্র-যুক্তরাজ্য ভারতকে হুমকি-ধামকি দিলেও আসল কাজটা করেনি। মানে তেল কেনার দায়ে ভারতের ওপর কোনো জোরালো নিষেধাজ্ঞা দেয়নি মার্কিন মিত্ররা।
বাইরে হাঁকডাক ছাড়া পশ্চিমারা ভেতরে এমন নমনীয় কেনো? রাশিয়ার কাছ থেকে এতো তেল কিনেইবা ভারত করছে কী? সেই প্রশ্নের জবাব খুঁজে একটা বিশেষ প্রতিবেদন করেছে ব্লুমবার্গ। আর সেখানেই উঠে এসেছে পশ্চিমাদের নমনীয় থাকার আসল কারণ।
ব্লুমবার্গের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রাশিয়ার কাছ থেকে ডিসকাউন্ট বা কম দামে অপরিশোধিত তেল কিনে যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমাদের জন্যই পরিশোধন করছে ভারত।
পশ্চিমাদের এমন করার পেছনের কারণটা ব্লুমবার্গকে জানিয়েছেন বিশ্লেষক বেন কাহিল। যিনি সিনিয়র ফেলো হিসেবে কাজ করছেন ওয়াশিংটনের সেন্টার ফল স্ট্রাটেজিক এন্ড ইন্টারন্যাশল স্টাডিজে। বেন কাহিল বলেছেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের অর্থ কর্মকর্তাদের লক্ষ্য দুইটা। প্রথমত, বাজারের তেলের সরবরাহ ঠিক রাখা। দ্বিতীয়ত, তেলের রাজস্ব থেকে রাশিয়াকে বঞ্চিত করা।’
এই কৌশলগত আন্তর্জাতিক বিশ্লেষক আরও বলেছেন, ‘তারা ভারত ও চীনের রুশ তেল কেনার বিষয়ে সতর্ক। তবে এভাবেই তারা ফায়দা নিচ্ছে।’
ব্লুমবার্গের হিসেবে মতে, গত মাসে ৮৯ হাজার ব্যারেল গ্যাসোলিন ও ডিজেল নিউইয়র্কে পাঠিয়েছে ভারত। যা গেল চার বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ।
সিঙ্গাপুর ভিত্তিক আইএনজি গ্রুপ এনভির পণ্য বিভাগের প্রধান ওয়ারেন প্যাটারসন বলেছেন, ‘চলমান পরিস্থিতিতে স্বস্তি ফেরাতে ভারতে শোধিত তেলের অনেকটাই পশ্চিমে (ইউরোপ, আমেরিকা) যাবে।’
ইউরোপীয় ইউনিয়নের নিষেধাজ্ঞার শর্তের ফাঁক দিয়ে ভারত হয়ে রাশিয়ার তেল ইউরোপে যেতে কোনো বাধা নেই। কারণ, শোধনের পর কাগজে কলমে তা আর রাশিয়ার থাকছে না।
ভোরটেক্সা লিমিটেডের এশিয়ার প্রধান বিশ্লেষক সেরেনা হুয়াঙ্গ বলেছেন, জি সেভেনভুক্ত দেশগুলো রাশিয়ার রাজস্ব কমাতে চায়, সেই সাথেই তারা এটাও চায় যে রুশ তেলের শোধন অব্যাহত থাক যাতে সরবরাহে ঘাটতি দেখা না দেয়।
সূত্র: ব্লুমবার্গ
বিডি প্রতিদিন