দেশের জনগণের নিকট আপামর সর্বত্র এরশাদ একজন পরিচিত নাম।খুব সম্ভবত ১৯৭১ সাল থেকে বঙ্গবন্ধু, জিয়া, হাসিনা, খালেদার পরে এরশাদই সকল শ্রেনীর নিকট সবচেয়ে পরিচিত মুখ। কারোর নিকট তিনি এখন হাস্যরসের পাত্র, কারো নিকট সুবিধাবাদী রাজনীতিক, কারোর কাছে পল্লীবন্ধু- এমন নানা বিশ্লেষনে আমজনতা তাঁকে নিয়ে মনের মধ্যে একেক ব্যঞ্জনার আবহ রাখলেও বাস্তবতা হল, তিনি ৯ বছর দেশ চালিয়েছেন। কিন্তু গণতন্ত্রের নামে করা আন্দোলনে তিনি এক সময় রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা থেকে সরে দাঁড়ালে নতুন শাসক শ্রেনী তাঁকে ৬ বছর জেলে বন্দী করে রাখেন। জেল থেকেই নতুন ধারার নির্বাচনে অংশ নিয়ে ৫টি আসনে দাঁড়িয়ে ৫ টিতেই জিতে প্রমাণ করেন, আমি উত্তরবঙ্গের একচ্ছত্র আধিপত্যবাদী নেতা ও সারা দেশে আমি কিংবা আমার দল ফুরিয়ে যায় নি। একসময় মুক্তিও পেয়ে যান আলহাজ্ব হুসেইন মোহাম্মাদ এরশাদ। সবাই ভেবেছিল, তিনি ক্ষমতায় থাকতে বলতেন- ৬৮০০০ গ্রাম বাঁচলে বাংলাদেশ বাঁচবে, সেই আদর্শিক জায়গা ধরে রেখে তিনি হয়ত মুক্তি পেয়ে ছুটে যাবেন নিরন্ন সেই পল্লী মানুষের কাছেই। কিন্তু হায়! তিনি ফিরলেন। তবে নিরন্ন মানুষের কাছে নয়; পরের ঘরের বউ জিনাত মোশাররফের ঘরে!
আলহাজ্ব হুসেইন মোহাম্মদ এরশাদ নিয়ে বার্ডস আই এর প্রথম প্রতিবেদন করার অভিপ্রায় থাকলেও তা হয়ে ওঠেনি। দেশের রাজনীতিকদের ওপর অনৈতিক কর্মের গোয়েন্দা ভিত্তিক প্রতিষ্ঠান হিসাবে লাম্পট্য চরিত্রের পথিকৃৎ হিসাবে এরশাদ নিয়ে তথ্যবহুল ও অনুসন্ধানী এই রিপোর্টে বের হয়ে এসেছে চাঞ্চল্যকর সব খবর।
বার্ডস আই, বার বার বলছে রুপালী পর্দার সেলেব্রেটি নিয়ে তামাশার সংবাদ পরিবেশনে কোনো আগ্রহ প্রতিষ্ঠান টির নেই।তবে রাজনীতির গুনগত পরিবর্তনে রাজনীতিক দের সেক্স স্ক্যান্ডাল সংবাদ পরিবেশনে থেকে অন্তত ভবিষ্যতে এই শ্রেনীর মানুষগুলোর নৈতিকতায় বিবেক ফিরে আসার জন্যই এই উদ্যোগ। আবারো ধন্যবাদ জননেতা ডট কমকে।
সাবেক রাষ্ট্রপতি যখন দেশের ডেপুটি চিফ অফ আর্মি স্টাফ- তখনই তিনি আলোচনায় চলে আসেন। সূত্রমতে, তিনি পরের ঘরনী মেরি বদরুদ্দীন নামে সুন্দরী রমনীর সঙ্গে পরকীয়ায় আসক্ত হন। ছেলে বেলা থাকতেই এরশাদের বিপরীত লিঙ্গের প্রতি অতি দুর্বলতা ছিল। সে জেরে তিনি একটু একটু করে ক্ষমতাবান হওয়ার সাথে সাথেই সারা বিশ্বের মধ্যে অন্যতম শ্রেষ্ঠ চরিত্রহীন শাসক হয়ে পড়েন। নারী পছন্দের ক্ষেত্রে খুব রুচীশীল না থাকলেও তিনি সমসাময়িক কালের শ্রেষ্ঠ আধুনিক শাসক বটে!
নারী উপভোগ করতে করতে এক সময় এরশাদ সেক্সুয়ালি হ্যাবিচুয়েটেড হয়ে পড়েন।বার্ডস আই এর অনুসন্ধানী দেখা যায়, তাঁর সময়ের শাসনামলে মাত্র এক টাকায় বিএনপি দলীয় চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার মঈনুল সড়কের বাড়ি প্রদানের সিদ্ধান্তেও জৈবিক চাহিদার ইঙ্গিত ছিল বলে জানা গেছে।
অনুসন্ধানে দেখা যায়, মেরি বদরুদ্দীন নিয়ে পরকীয় মেতে উঠতেই তাঁর সঙ্গে প্রথম বারের মত বিবাদে জড়িয়ে পড়েন দেশের আলোচিত মাফিয়া ডন আজিজ মোহাম্মদ ভাই। কারণ আজিজেরও কু দৃষ্টি ছিল মেরীর ওপর। মেরী দিয়ে শুরু হলে এই বিবাদ এরশাদ এবং আজিজ ভাই এর নারী নিয়ে টানাটানি অব্যাহত থেকেই যায়। আজিজ –এরশাদ টানাপড়েন চরম আকার ধারণ করে যখন ১৯৮৫ সালে রাজধানী ঢাকায় এক রাতের জন্য বোম্বের রুপসী নায়িকা ‘রেখা’ হোটেল সোনারগাঁওয়ে আসেন। রেখা’কে আজিজ মোহাম্মদ ভাই উড়িয়ে নিয়ে আসলেও তাঁর সাথে কে রাত কাটাবেন- তা নিয়ে হাতাহাতির মত ঘটনা ঘটে যায়। এরশাদ প্রেসিডেন্ট থাকা অবস্থায় ‘ভাঙ্গা গাড়ি’(সামরিক পরিভাষায়)নিয়ে রাতে হোটেলে ঢুকে পড়লেই ঘটনার সূত্রপাত ঘটে।
এদিকে এরশাদের জীবনে দেশে ও বিদেশে কত নারী এসেছে তা সম্ভবত তিনি নিজে ক্যালকুলেটর নিয়ে বসলেও বলে শেষ করতে পারবেন না। তবে তাঁর একটা বিশেষ গুন ছিল, তা হল- যার সঙ্গেই তিনি রাত কাটিয়েছেন কিংবা বিছানায় নিয়েছেন তাঁদের স্বামী কিংবা তাকেই অর্থনৈতিক ভাবে সমৃদ্ধ করে ধনী বানিয়ে দিয়েছেন।
সে ধারাবাহিকতায় দেখা যায়, এরশাদ আমলে দেশের অনেক অখ্যাত ব্যক্তি রাতারাতি ধনী হয়ে পড়েন। এর প্রধান রহস্য হল, তারা তাদের সুন্দরী বউকে সঁপে দিয়ে ব্যবসায়িক স্বার্থ উদ্ধার করে ফেলেন। যারা এমন করেছে ধনী হয়েছেন- অদূর ভবিষ্যতে তাঁদের বিষয়ে বার্ডস আই প্রতিবেদন করার আশা রাখছে। তবে সে সময় আজকের বিএনপি নেতা(মিরপুর) এস এ খালেক এর পত্নীকে নিজের করে রাখার বিষয় ছিল ওপেন সিক্রেট। রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় থাকতে নিজের অনুগত কিছু সামরিক কর্মকর্তা ছাড়াও নুরুল ইসলাম শিশু(বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা সদস্য), দুই মঞ্জু(আনোয়ার-নাজিউর),ব্যারিস্টার আনিস( বর্তমান পানি সম্পদ মন্ত্রী)সহ অনেকেই ছিলেন তাঁর নারী মনোরঞ্জনের সাক্ষী, কেও সরবরাহকারী কিংবা সমন্বয়ক।
দেশের অতি পরিচিত মুখের নারী কূলের মধ্যে এরশাদ রাত কাটিয়েছেন কিংবা দিনের পর দিন তাঁদের নিয়ে স্ফূর্তি করেছেন এমন তালিকায় থাকা রমনীরা হলেন, রেহানা পারভীন, মুনমুন আহমেদ(সংবাদ পাঠিকা), শাকিলা জাফর, নাশিদ কামাল(সঙ্গীত শিল্পী),নীলা চৌধুরী(সালমান শাহ’র মা- রাজনীতিক)সহ প্রমুখ।
অন্যদিকে সন্তান বিড়ম্বনা ও আধুনিক সেক্সি পার্টনার মনে করে এরশাদের জীবনে চলে আসেন বিদিশা এরশাদ। লন্ডনে বিয়ে হওয়া ঐ বিয়ের ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়, বিদিশার সন্তান এরিক কে কোলে নিয়েই সে বিয়ে পড়াচ্ছেন লন্ডনের এক কাজী। পরবর্তীতে অতি সাধারণ চেহারার বিদিশার বিছানা পারদর্শিতাও ফিকে হয়ে পড়ে। ফলশ্রতিতে সেই বিয়েও আর টেকেনি। অন্যদিকে সর্বশেষ চায়না সফরে যেয়েও চীনা মেয়েদের পাবার আকুতিতে তিনি একসময় কেঁদে ফেলেন। বার্ডস আই এর জেরার মুখে ঐ ট্যুরে যাওয়া সাবেক সংসদ সদস্য বলেন, স্যার বার বার বলছিল- এরেঞ্জ কর। এতটাই আবেগী হয়ে পড়েন সুন্দর চাইনীজ মেয়েদেখে- তিনি একসময় কেঁদে ফেলেন!
এদিকে ক্ষমতাচ্যুত হবার পর থেকে যারা জাতীয় পার্টির রাজনীতিতে কিছু পাওয়ার আশায় রাজনীতি করেছেন, তাদের অনেক কেই গেল ২৪ বছরে সন্দরী তন্বী তরুনী এরশাদের জন্য যোগাড় করে দেয়া এবং নিজের স্ত্রী বিলিয়ে দেয়ার মত চাঞ্চল্যকর তথ্য এখন বার্ডস আই এর কাছে এসেছে। খুব অবাক হওয়ার মত বিষয় হল, যারাই তাদের স্ত্রীকে ডোন্ট মাইন্ড বলে (এরশাদের) কাছে দিয়ে এসেছে- তারাই দলের বড় পদ –পদবী ও সুবিধার রাজনীতি করতে পেরেছেন। বার্ডস আই কে জেরার মুখে দেয়া এক তথ্যে এরশাদের কাছের লোকের স্ত্রী বলেন, তিনি মাঝে মাঝে মন খারাপ হলেই চলে আসতেন, আমার কোলে মাথা রেখে বলতেন, চুলে বিলি কেটে দিতে!
চলবে…
সম্পাদনাঃ জননেতা ডট কম।